পদ্মা সেতু প্রকল্প রক্ষা বাঁধে ভাঙন, নদীর পেটে ১০ বসতবাড়ি

2 months ago 8

শরীয়তপুরের জাজিরায় পদ্মা সেতু প্রকল্প রক্ষা বাঁধে আকস্মিক ভাঙন দেখা দিয়েছে। এতে বসতবাড়ি ও ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানসহ অন্তত ১০টি স্থাপনা নদীতে বিলীন হয়েছে। ভাঙন ঠেকানো না পারলে নদীগর্ভে বিলীন হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে রাস্তাঘাট, হাটবাজারসহ শতাধিক ঘরবাড়ি।

স্থানীয় ও পানি উন্নয়ন বোর্ড সূত্র জানায়, ২০১০-১১ অর্থবছরে পদ্মা সেতু থেকে মাঝির ঘাট হয়ে পূর্ব নাওডোবা আলমখার কান্দি জিরো পয়েন্ট পর্যন্ত দুই কিলোমিটার পদ্মা সেতু প্রকল্পের কনস্ট্রাকশন ইয়ার্ড বাঁধ নির্মাণ করে বাংলাদেশ সেতু কর্তৃপক্ষ। এতে ব্যয় হয় ১১০ কোটি টাকা। গত বছরের ৩ নভেম্বর থেকে বাঁধের নাওডোবা ইউনিয়নের মাঝির ঘাট এলাকার ধস শুরু হয়। ১৬ নভেম্বর বিকেল পর্যন্ত বাঁধটির প্রায় ১০০ মিটার ধসে পড়ে নদীতে। এতে কংক্রিটের সিসি ব্লকগুলো তলিয়ে যায় পানিতে।

এছাড়া আশপাশে দেখা দেয় ফাটল। পরে বাঁধটির সংস্কারে দায়িত্ব দেওয়া হয় পানি উন্নয়ন বোর্ডকে। গত বছর ওই বাঁধের যে ১০০ মিটার অংশ বিলীন হয়েছিল তা দুই কোটি ৮৭ লাখ টাকা ব্যয়ে ওই স্থানে বালুভর্তি জিওব্যাগ ও সিসি ব্লক ফেলার কাজ শুরু করা হয়।

পদ্মা সেতু প্রকল্প রক্ষা বাঁধে ভাঙন, নদীর পেটে ১০ বসতবাড়ি

এদিকে ঈদের দিন ভোররাতে সংস্কার করা বাঁধের ১০০ মিটার অংশসহ পাশের আরও একটি স্থানে ভাঙন শুরু হয়। একদিনের মধ্যে বাঁধের আড়াইশ মিটার অংশ নদীতে তলিয়ে যায়। এরপর ক্ষতিগ্রস্ত স্থানে নতুন করে জিওব্যাগ ডাম্পি করে পানি উন্নয়ন বোর্ড।

এদিকে সেই শঙ্কা কাটতে না কাটতে সোমবার (৭ জুলাই) বিকেলে নতুন করে ভাঙন দেখা দেয় রক্ষা বাঁধে। মাত্র দুই ঘণ্টার ভাঙনে নদীগর্ভে বিলীন হয়ে যায় পাঁচটি বসতবাড়ি ও পাঁচটি ব্যবসা প্রতিষ্ঠান। ভাঙনের আশংকায় সরিয়ে নেওয়া হয় আরও ১০টি দোকানপাট।

পদ্মা সেতু প্রকল্প রক্ষা বাঁধে ভাঙন, নদীর পেটে ১০ বসতবাড়ি

স্থানীয় বাসিন্দা শাহিন মাঝি বলেন, ‘বিকেল ৪টার দিকে হঠাৎ ভাঙনের খবর পাই। দেখতে না দেখতে চোখের সামনে বেশকিছু বাড়িঘর নদীতে চলে যায়। যে যেভাবে পারছে ঘরবাড়ির মালামাল সরিয়ে নিচ্ছে।’

বাজারের ব্যবসায়ী সাইদুল ইসলাম বলেন, ‘আকস্মিক ভাঙনের কারণে আমরা শ্রমিক পাচ্ছি না। যার যার মালামাল তার তার পরিবারের সদস্যরা সরিয়ে নিচ্ছে। আমরা অনেক বিপদের মধ্যে আছি। আমরা চাই যেভাবে হোক ভাঙন রোধ করা হোক।’

পদ্মা সেতু প্রকল্প রক্ষা বাঁধে ভাঙন, নদীর পেটে ১০ বসতবাড়ি

স্থানীয় বাসিন্দা বাদশা জাগো নিউজকে শেখ বলেন, ‘নদীর গতিপথ পরিবর্তন হয়ে পাড়ের কাছে চলে আসায় ভাঙন দেখা দিয়েছে। গত বছর থেকে এ এলাকায় ভাঙন শুরু হয়েছে। আমরা এলাকাবাসী খুবই আতঙ্কে আছি। আমরা চাই দ্রুত এই এলাকায় শক্ত একটি বেড়িবাঁধ নির্মাণ করা হোক।’

পানি উন্নয়ন বোর্ডের ফরিদপুর অঞ্চলের অতিরিক্ত প্রধান প্রকৌশলী মো. শাজাহান সিরাজ বলেন, ‘আমরা ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছি। ভাঙনের অবস্থা খুব ভয়াবহ। বেশকিছু ঘরবাড়ি নদীতে চলে গিয়েছে। আমরা দ্রুত সময়ের মধ্যে ভাঙন রোধে পদক্ষেপ গ্রহণ করবো।’

বিধান মজুমদার অনি/আরএইচ/এএসএম

Read Entire Article