অবৈধ ইটভাটার কার্যক্রম বন্ধে আদালতের আদেশ প্রতিপালিত না হওয়ার বিষয়ে ব্যাখ্যা দিতে হাইকোর্টে হাজির হয়েছিলেন পরিবেশ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক এবং পাঁচ বিভাগীয় কমিশনার। পরে আদালত তাদের ব্যক্তিগত হাজিরা থেকে অব্যাহতি দিয়েছেন। একই সঙ্গে ইটভাটার মালিকদের পক্ষ থেকে করা আবেদনের ওপর শুনানির জন্য মঙ্গলবার (১৮ মার্চ) দিন ঠিক করেছেন আদালত।
এ সংক্রান্ত বিষয়ে শুনানি নিয়ে সোমবার (১৭ মার্চ) হাইকোর্টের বিচারপতি ফারাহ মাহবুব ও বিচারপতি দেবাশীষ রায় চৌধুরীর সমন্বয়ে গঠিত বেঞ্চ এ আদেশ দেন।
আদালতে মানবাধিকার সংগঠন হিউম্যান রাইটস অ্যান্ড পিস ফর বাংলাদেশের (এইচআরপিবি) পক্ষে শুনানি করেন সিনিয়র অ্যাডভোকেট মনজিল মোরসেদ। তাকে সহায়তা করেন অ্যাডভোকেট মোহাম্মদ ছরওয়ার চৌধুরী, অ্যাডভোকেট সঞ্জয় মন্ডল ও অ্যাডভোকেট সেলিম রেজা। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন অতিরিক্ত অ্যাটর্নি জেনারেল অনিক আর. হক ও ডিএজি মো. তামিম, পরিবেশে অধিদপ্তরের পক্ষে ছিলেন অ্যাডভোকেট মুনতাসির আহমেদ।
শুনানি শেষে আদালত রাজশাহী, বরিশাল, রংপুর, ময়মনসিংহ, সিলেট বিভাগের বিভাগীয় কমিশনারসহ ডিরেক্টর জেনারেল পরিবেশ অধিদপ্তরকে আদালতে ব্যক্তিগত হাজিরা হতে অব্যাহতি দেন এবং যেসব নির্দেশনা বাস্তবায়ন হয়নি তা সঠিকভাবে বাস্তবায়নের নির্দেশ দেন।
কতিপয় ইটভাটা মালিকের পক্ষ হওয়ার আবেদন দাখিল করলে আদালত শুনানির জন্য আগামীকাল ঠিক করেন। ইটভাটা মালিক সমিতির পক্ষে এক আবেদন দাখিল করে হাইকোর্টের আদেশ সংশোধনের আবেদন জানান। ওই আবেদনটি আগামীকাল শুনানির জন্য রাখা হয়েছে।
এইচআরপিবির করা অবৈধ ইটভাটা বন্ধের মামলায় পাঁচ বিভাগের বিভাগীয় কমিশনারসহ মহাপরিচালক পরিবেশ অধিদপ্তর ব্যক্তিগতভাবে আদালতে হাজিরা হয়ে প্রতিবেদন দাখিল করেছেন। আদালতের নির্দেশে আজ ময়মনসিংহ, রাজশাহী, বরিশাল, রংপুর ও সিলেট বিভাগের বিভাগীয় কমিশনারসহ পরিবেশ অধিদপ্তরের ডিরেক্টর জেনারেল (ডিজি) আদালতে উপস্থিত হয়ে তাদের প্রতিবেদন দাখিল করেন।
প্রতিবেদনের বিষয়ে আদালতে সিনিয়র অ্যাডভোকেট মনজিল মোরসেদ তুলে ধরেন যে, নির্দেশনা অনুযায়ী সম্পূর্ণ কার্যক্রম বাস্তবায়ন হয়নি। কোনো কোনো ইটভাটার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিলেও সেগুলো পরে আবার চালু হয়েছে। এমনকি আইনে লাইসেন্সবিহীন ইটভাটার বিরুদ্ধে মাঝে মধ্যে জরিমানা করা হয়। কিন্তু আইন অনুসারে দুই বছরের জেল মালিকদের দেওয়া হয় না।
তিনি আদালতে সংবিধানের অনুচ্ছেদ ১১২ অনুসারে অবৈধ ইটভাটা উচ্ছেদে ভ্রাম্যমাণ আদালতের সহযোগিতার জন্য সংশ্লিষ্ট স্থানীয় প্রশাসনকে আদেশদানের জন্য আবেদন জানান।
তিনি আরও বলেন, হাইকোর্টের এ আদেশের বিরুদ্ধে কতিপয় ইটভাটা মালিক আপিল বিভাগে আবেদন করলে শুনানির পরে তারা কোনো স্থগিতাদেশ পাননি। এছাড়া ইটভাটা মালিক সমিতির পক্ষ থেকে একটি আবেদন করা হয়। যেখানে আগের আদেশগুলোকে সংশোধন করে নতুন আদেশ দেওয়ার আবেদন জানান হয়। আবেদনটির শুনানি হবে আগামীকাল।
এফএইচ/এমএএইচ/এমএস