পরীক্ষা চলাকালে ১৫ ছাত্রী অসুস্থ, শিক্ষক লাঞ্ছিতের অভিযোগ

2 weeks ago 15

কুমিল্লার চান্দিনায় বার্ষিক পরীক্ষার হলে অসুস্থ হয়ে পড়ে ১৫ শিক্ষার্থী। এ ঘটনায় ক্ষিপ্ত হয়ে অভিভাবকরা বিদ্যালয়ের অফিসকক্ষে ঢুকে হামলা চালানোর অভিযোগ উঠেছে। এসময় ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষসহ চার শিক্ষককে লাঞ্ছিত করা হয়।

রোববার (৮ ডিসেম্বর) উপজেলা সদরের ডা. ফিরোজা পাইলট বালিকা উচ্চ বিদ্যালয় ও কলেজে এ ঘটনা ঘটে।

আহতরা হলেন- বিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ সাদেকুল ইসলাম কিরণ, সহকারী শিক্ষক আবু ইউনুছ, সাইদুর রহমান সুজন ও ধর্মীয় শিক্ষক মো. ইলিয়াছ।

এর আগে ৪ ডিসেম্বর জেলার দেবিদ্বার বড়শালঘর ইউএমই উচ্চ বিদ্যালয়ের বার্ষিক পরীক্ষা চলাকালে অন্তত ২৬ জন ছাত্রী অসুস্থ হয়ে পড়ে। পরে তাদের হাসপাতালে চিকিৎসা শেষে বাড়িতে পাঠানো হয়।

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, রোববার মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের সব শ্রেণির গণিত পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়। ষষ্ঠ থেকে নবম শ্রেণির পরীক্ষা চলাকালীন সময়ে ৯ নম্বর কক্ষের অষ্টম শ্রেণির এক ছাত্রী অসুস্থ হয়ে পড়ে। পরে শিক্ষক ও সহপাঠীরা তাকে পৃথক একটি কক্ষে নিয়ে মাথায় ও চোখে মুখে পানি দিয়ে বিশ্রামের ব্যবস্থা করেন। এর কিছুক্ষণ পর ওই কক্ষে একে একে ১৪ ছাত্রী অসুস্থ হয়ে পড়ে। পরে তাদের চান্দিনা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে চিকিৎসা দেওয়া হয়। এদের মধ্যে চিকিৎসা নিয়ে ১১ জন বাড়িতে চলে যান। বর্তমানে হাসপাতালে তিন জন ভর্তি রয়েছেন।

এ ঘটনায় দুপুর ২টা থেকে দ্বিতীয় শিফটের পরীক্ষা শুরু হলে ১৫-২০ জন অভিভাবক বিদ্যালয়ে প্রবেশ করে শিক্ষকদের ওপর হামলা চালায়। তারা পুরো বিদ্যালয়ের প্রতিটি পরীক্ষার হলে শিক্ষার্থীর মৃত্যুর গুজব রটিয়ে সবাইকে হল থেকে বের করে দেয়। খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ আনেন। এ সময় একজনকে আটক করে থানায় নিয়ে যাওয়া হয়।

চান্দিনা ডা. ফিরোজা পাইলট বালিকা উচ্চ বিদ্যালয় ও কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ মো. সাদেকুর রহমান কিরণ জানান, পরীক্ষা চলাকালীন সময়ে শিক্ষার্থীরা অসুস্থ হলে তাৎক্ষণিক তাদের হাসপাতালে নেওয়ার পর পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে চিকিৎসা নিশ্চিত করা হয়। তারা ‘প্যানিক অ্যাটাক’ আক্রান্ত হয়ে অসুস্থ হয়।

উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. আরিফুর রহমান বলেন, হাসপাতালে আগত ছাত্রীরা ‘প্যানিক ডিজঅর্ডারে’ আক্রান্ত হয়। এটি বড় কোনো সমস্যা নয়। একজনের দেখাদেখি অন্যরাও আক্রান্ত হয়। তাদের মধ্যে ১১জন প্রাথমিক চিকিৎসা নিয়ে বাড়ি ফিরেছেন। বাকি তিনজন ভর্তি রয়েছে।

চান্দিনা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকতা (ওসি) মো. নাজমুল হুদা বলেন, গুজব রটিয়ে কিছু অভিভাবক এমন ঘটনা ঘটিয়েছে। খবর পেয়ে দ্রুত ঘটনাস্থলে পৌঁছে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ আনা হয়। এ সময় একজনকে থানায় নিয়ে আসা হয়। এ বিষয়ে লিখিত অভিযোগ পেলে অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

জাহিদ পাটোয়ারী/আরএইচ/জেআইএম

Read Entire Article