অনেক পরিশ্রম করে ভর্তি পরীক্ষার প্রস্তুতি নিয়েও অনেক সময় পরীক্ষার হলের ছোট্ট কোনো সিদ্ধান্ত আফসোসের কারণ হয়ে দাঁড়াতে পারে। যেমন- যে প্রশ্নটি নিয়ে আপনি কম আত্মবিশ্বাসী; সেটি যদি আগে লিখতে শুরু করেন তাহলে শেষের দিকে সময় কম পড়ে যায়। জানা উত্তরও এসব কারণে লিখে আসতে পারেন না অনেকে।
তাহলে জেনে নিন কী কী কৌশল অবলম্বন করলে আপনি আপনার প্রস্তুতি অনুযায়ী পরীক্ষায় সাফল্য পাবেন-
শান্ত ও মনোযোগী থাকার কৌশল অবলম্বন করুন
পরীক্ষার হলে গিয়ে অনেক শিক্ষার্থীই টেনশন করেন। এই টেনশন কাটানোর জন্য কিছু কৌশল অনুসরণ করতে পারেন-
গভীর শ্বাস-প্রশ্বাস: টেনশন বেশি হলে কয়েকবার গভীর শ্বাস নিন। ৪ সেকেন্ড শ্বাস নিয়ে ৪ সেকেন্ড ধরে রাখুন। এবার ৪ সেকেন্ডে ছেড়ে দিন। এভাবে শ্বাস-প্রশ্বাসের ব্যয়াম চর্চা করলে উদ্বিগ্নতা কমবে।
উদ্বিগ্ন হওয়ার মতো কথাবার্তা এড়িয়ে চলা: পরীক্ষার আগে সহপাঠীদের কে কী করছেন বা পড়ছেন, এমন আলোচনা করা থেকে বিরত থাকুন। এটি টেনশন বাড়িয়ে দিতে পারে।
ইতিবাচক মনোভাব চর্চা: নিজেকে মনে করিয়ে দিন যে, দিনটির জন্য আপনি অনেক পরিশ্রম করেছেন। নিজেকে বলুন, ‘আমি পারবো!’ ‘আমি এই চ্যালেঞ্জের জন্য প্রস্তুত’।
পরীক্ষার হলের কৌশল
পরীক্ষার হলে সঠিক কৌশল প্রয়োগ না করলে নির্ধারিত সময়ে উত্তর লেখা শেষ করা খুব মুশকিল। জেনে নিন কিছু টিপস-
প্রশ্নপত্রের নির্দেশনা ভালো করে পড়ুন: শুরু করার আগে প্রশ্নপত্রের সব নির্দেশনা এবং প্রশ্নগুলো ভালো করে পড়া দরকার। ভুল বোঝাবুঝি থেকে নম্বর হারানো খুবই সহজ।
সময় ভাগ করে নিন: যদি পরীক্ষা ২ ঘণ্টার হয় এবং প্রশ্নপত্রে ৪টি সেকশন থাকে, তাহলে প্রতিটি সেকশনের জন্য ৩০ মিনিট করে সময় বরাদ্দ করে নিন। এভাবে শুরুর আগেই সময় ভাগ করে নিলে কোনো একটি প্রশ্নে বেশি সময় নষ্ট হবে না।
সহজতর সেকশন দিয়ে শুরু করুন: যে সেকশনে আপনার আত্মবিশ্বাস সবচেয়ে বেশি, সেটি দিয়ে লিখা শুরু করুন। এটি কনফিডেন্স তৈরি করবে এবং লেখার গতি বাড়াবে।
আটকে গেলে প্যানিক করো না: যদি কোনো প্রশ্ন কঠিন লাগে, তাহলে প্যানিক না করে সেটি স্কিপ করো এবং পরের প্রশ্নে চলে যাও। সময় থাকলে পরে ফিরে এসে সমাধান করার চেষ্টা করো।
পরীক্ষার সময় স্ট্রেস ম্যানেজমেন্ট
পরীক্ষার হলে স্ট্রেস ম্যানেজ করা খুবই জরুরি। নিচের টিপসগুলো অনুসরণ করো:
প্রয়োজন অনুযায়ী পানি পান করুন: ছোট ছোট চুমুকে পানি খান। এটি আপনার মনোযোগ রাখতে সাহায্য করবে।
সংক্ষিপ্ত স্ট্রেচিং: টেনশন অনুভব করলে কয়েক সেকেন্ডের জন্য আঙুল, ঘাড় বা কাঁধ স্ট্রেচ করুন। এটি টেনশন কমাতে সাহায্য করবে।
সময়ের দিকে নজর রাখুন: সময়মতো সব প্রশ্ন সমাধান করতে নিয়মিত ঘড়ির দিকে নজর রাখুন। তবে সময় নিয়ে অযথা দুশ্চিন্তা করবেন না।
সময় থাকলে উত্তরপত্র রিভিশন করা
> হিসাব দ্বিতীয়বার চেক করুন।
> ফেলে আসা প্রশ্নগুলো শেষে আবার চেষ্টা করুন।
ভুল খুঁজে বের করা: সাধারণ ভুলগুলো যেমন প্রশ্ন ভুল পড়া, ভুল স্থান পূরণ করা বা প্রশ্ন বাদ দিয়ে চলে যাওয়া জাতীয় ভুলগুলো খুঁজে বের করুন।
পরীক্ষার পরে অতীত নিয়ে চিন্তা করবেন না
পরীক্ষা শেষ হলে সহপাঠীদের সঙ্গে উত্তর নিয়ে আলোচনা করা থেকে বিরত থাকুন। যা হয়েছে; তা হয়ে গেছে। অতিরিক্ত চিন্তা করে স্ট্রেস বাড়ানোর কোনো মানে নেই।
নিজের প্রচেষ্টাকে সম্মান করুন: ফলাফল যা-ই হোক, আপনি যে কঠোর পরিশ্রম করেছেন, তার জন্য নিজেকে প্রশংসা করুন।
- আরও পড়ুন
- মেডিকেল ভর্তিপরীক্ষার ফলাফলে হতাশ, যা করবেন
- বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির বিষয় নির্ধারণ করবেন কীভাবে
- ভর্তি পরীক্ষার আগে যে ৫টি কাজ করবেন না
এএমপি/এসইউ/জিকেএস