পটুয়াখালীর সাগরকন্যা কুয়াকাটা—যেখানে সূর্যোদয় ও সূর্যাস্ত একসঙ্গে দেখা যায়, সেখানে প্রকৃতির আরেক অনন্য উপাদান লাল কাঁকড়া এখন হুমকির মুখে পড়ছে পর্যটকদের অসচেতন আচরণে। সৈকতের টকটকে লাল রঙের ছোট্ট কাঁকড়াগুলো কুয়াকাটার বালুচরে দৌড়ঝাঁপ করে বেড়ায়, যা ভ্রমণপ্রেমীদের আকর্ষণের অন্যতম কেন্দ্রবিন্দু। কিন্তু অনেক পর্যটক ছবি তোলার জন্য বা আনন্দের ছলে হাতে তুলে নেন এই কাঁকড়াগুলো, যার ফলে এদের কোমল পা ভেঙে যায়, এমনকি অনেক সময় মারা যায়।
সম্প্রতি জনপ্রিয় এক তারকা দম্পতি কুয়াকাটা সফরে এসে হাতে কাঁকড়া নিয়ে ছবি তোলেন এবং তা সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে প্রকাশ করেন। এরপর থেকে এমন আচরণে আগ্রহ বেড়েছে সাধারণ পর্যটকদের মধ্যেও, যা স্থানীয়দের উদ্বেগ বাড়িয়েছে।
স্থানীয় বাসিন্দা মো. আব্দুল হালিম বলেন, লাল কাঁকড়াগুলো এ সৈকতের সৌন্দর্যের প্রতীক। কিন্তু এখন অনেক পর্যটক শুধু ছবি তোলার জন্য এগুলো ধরছেন। এতে এদের সংখ্যা দিন দিন কমে যাচ্ছে।
পর্যটক মেহজাবিন আক্তার, যিনি ঢাকা থেকে পরিবার নিয়ে এসেছেন, জানান, আমরা জানতাম না এ কাঁকড়াগুলো এত সংবেদনশীল। এখন বুঝতে পারছি, স্পর্শ না করাই ভালো।
এ বিষয়ে ট্যুরিস্ট পুলিশ কুয়াকাটা জোনের সহকারী পুলিশ সুপার হাবিবুর রহমান বলেন, আমরা নিয়মিত সৈকতে টহল দিই। পর্যটকদের সচেতন করতে মাইকিং ও প্রচারণা চালানো হচ্ছে। লাল কাঁকড়া বা অন্য বন্যপ্রাণী ধরলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
পরিবেশ রক্ষা আন্দোলন উপরার আহ্বায়ক কেএম বাচ্চু বলেন, লাল কাঁকড়া সৈকতের জীববৈচিত্র্যের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। প্রশাসনের পাশাপাশি সবাইকে সচেতন হতে হবে। কাঁকড়া ধরাকে অপরাধ হিসেবে গণ্য করা উচিত।
এ বিষয়ে বনবিভাগের মহিপুর রেঞ্জ কর্মকর্তা কে এম মনিরুজ্জামান বলেন, কুয়াকাটা সৈকতের জীববৈচিত্র্য রক্ষায় আমরা পর্যটন কর্তৃপক্ষের সঙ্গে যৌথভাবে সচেতনতামূলক প্রচার চালানোর পরিকল্পনা নিচ্ছি।
স্থানীয়রা বলছেন, কুয়াকাটার প্রকৃতি যেমন দর্শনীয়, তেমনি নাজুক। এর সৌন্দর্য উপভোগ করতে গেলে প্রকৃতিকে অক্ষুণ্ন রাখার দায়িত্ব সবার।

4 hours ago
7









English (US) ·