কারাগার মানেই যেন ভয়াচ্ছন্ন একটি পরিবেশ। বাইরের মুক্ত বাতাস রেখে কেউ যেতে চায় না সেই দমবন্ধ কুঠুরিতে। কিন্তু সেই কারাগারেই যদি থাকে বাইরের সব সুযোগ-সুবিধা, তাহলে কেমন হবে? শুনতে অবাক লাগলেও কয়েক বছর আগে খোলা হয়েছে এমনই একটি কারাগার যেখানে রয়েছে বিনোদনের সব আয়োজন। তাই এই কারাগার যেন বিলাসবহুল কোনো পাঁচ তারকা হোটেল।
চার হাজার কয়েদির ধারণক্ষমতা রয়েছে বিলাসবহুল এ কারাগারে। রাশিয়ার এ কারাগারের নাম ক্রেস্টি-টু। এটা কুখ্যাত ক্রেস্টি কারাগারের নতুন ভার্সন। কারাগারটি সেন্ট পিটার্সবার্গের কাছে কোলপিনোতে অবস্থিত। কয়েদি রাখার স্থান হলেও আধুনিক সব সুযোগ-সুবিধা আছে এ কারাগারে।
ইতিহাসের পাতায় নাম লেখা রয়েছে ক্রেস্টি কারাগারের। কুখ্যাত এই কারাগারে রাজনৈতিক নেতাদের বন্দি করে রাখা হতো। বলশেভিক বিপ্লবের নেতা লিওন ট্রটস্কির মতো নেতারা এখানে বন্দি ছিলেন। রাজবন্দি ও সোভিয়েত আমলের বন্দিদেরও এই কারাগারেই রাখা হতো। পুরোনো সেই কারাগারের ভবন রেখেই তৈরি করা হয়েছে নতুন কারাগার।
নতুন এই কারাগারের সবকিছু নতুন। ক্যামেরার সামনে ঠিক সে কথাই বলছিলেন ক্রেস্টি-টু কারাগারের অপারেশনার ডিপার্টমেন্ট হেড নিকিতা ইলিন। কয়েকশ’ কোটি টাকা খরচ করে বানানো এই কারাগারে কয়েদিদের জন্য রয়েছে নানা সুযোগ-সুবিধা। যেমন রেস্টুরেন্ট থেকে শুরু করে কনসার্ট, জাদুঘর ও হাসপাতাল কী নেই এ কারাগারে।
ক্রেস্টি-টু কারাগারের দীর্ঘ করিডরের কোনো কোনোটিতে আবার অটোওয়াকও রয়েছে। এতসব সুযোগ-সুবিধা পেয়ে কারাবন্দিদেরও খুশির অন্ত নেই। একজন কারাবন্দি ইয়ানের ভাষায়, যেমন হওয়া উচিত তার সবকিছুই ঠিকঠাক মতো আছে। প্রায় দেড় দশক আগে রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের নির্দেশে এভাবেই ক্রেস্টিকে আধুনিক কারাগারে পরিণত হয়।
২০১৭ সালে ক্রেস্টি কারাগার বন্ধ করে দেওয়া হয়। সেখানে বন্দি থাকা ব্যক্তিদের আধুনিক ক্রেস্টি-টু কারাগারে স্থানান্তর করা হয়। দুটি ক্রস আকৃতির ভবন থাকায় কারাগারটি ক্রেস্টি নামে পরিচিতি পেয়েছিল। এই কারাগারে ৯৬০ সেল ছিল সেখানে প্রায় ১ হাজার ১৫০ জন কারাবন্দিকে রাখা যেত। কিন্তু নতুন ভবনে সেই সংখ্যাটা চার গুণ বেড়েছে।