পাকিস্তান আমলেও লাশ পুড়িয়ে দেওয়ার কথা শুনিনি: রিজভী

3 hours ago 5

বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম-মহাসচিব অ্যাডভোকেট রুহুল কবির রিজভী বলেছেন, সরকারকে বলতে চাই—আমার কেন জানি মনে হচ্ছে, দেশের ভেতরে গভীর একটি চক্রান্ত চলছে।

তিনি বলেন, আমরা আমাদের বয়সে পাকিস্তান আমলও কিছুটা দেখেছি। তখনতো মাজার আক্রমণের কথা শুনিনি, কবর থেকে তুলে লাশ পুড়িয়ে দেওয়ার কথা শুনিনি। তখন থেকে তো আরও সামনে এগিয়ে যাওয়ার কথা ছিল, তাহলে এখন হঠাৎ করে এসব কেন হচ্ছে? এটা তো শেখ হাসিনা করতেন।

শনিবার (৬ সেপ্টেম্বর) দুপুরে নয়া পল্টনে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের নিচ তলায় পবিত্র ঈদে মিলাদুন্নবী উপলক্ষে দোয়া ও মিলাদ মাহফিলে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।

রিজভী অভিযোগ করে বলেন, বিএনপি ক্ষমতায় থাকলে বলা হয় আমরা পাকিস্তানপন্থি, আমরা ইসলামি জঙ্গিদের প্রশ্রয় দেই—এসব অপপ্রচার চলছে। কিন্তু এসব বলার পরও তারা একবারও তা প্রমাণ করতে পারেনি।

বিএনপির এই মুখপাত্র বলেন, প্রচণ্ড গরমের মধ্যে আজকে যে মহামানবকে নিয়ে আলোচনা এবং মিলাদের আয়োজন করা হয়েছে, তার আদর্শ, চারিত্রিক বৈশিষ্ট্য এবং আল্লাহর পক্ষ থেকে প্রাপ্ত বাণী তিনি সারা দুনিয়ায় ছড়িয়ে দিয়েছেন। আমরা যদি তার সামান্যতম আদর্শও লালন করতাম, তাহলে সমাজে অন্যায়, অনাচার, রক্তপাত, হানাহানি বন্ধ হয়ে যেত। আমরা মুসলমান হলেও, আমাদের মহানবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে আমরা অনুসরণ করি না, অনুকরণ করি না—এটাই হলো বিশ্ব মুসলিমের সবচেয়ে বড় ব্যর্থতা।

তিনি বলেন, যিনি গোত্রে বিভক্ত আরব জাতিকে ঐক্যবদ্ধ করেছিলেন, সেই মহানবীকে আমরা ভুলে গেছি। অথচ তিনি এমন এক সমাধান দিয়েছিলেন, যাতে সবাই সন্তুষ্ট হয়েছিল। আজকে আমরা মদিনা সনদের কথা বলি, কিন্তু বাস্তবে কিছুই অনুসরণ করি না।

শেখ হাসিনার দিকে ইঙ্গিত করে রিজভী বলেন, তিনি বলেছিলেন দেশ মদিনা সনদ অনুযায়ী চালাবেন, কিন্তু আমরা কী দেখলাম? এক মন্ত্রীর লন্ডনে ১৪০টা বাড়ি, ছেলেমেয়ের নামে পূর্বাচলে ৬০ কাঠা জমি, চট্টগ্রাম বিমানবন্দরের পাশে ৭২ বিঘা সরকারি জমি নিয়ে ৩০টি বাংলো নির্মাণের পরিকল্পনা। অথচ গরিব মানুষ বিনা চিকিৎসায় মারা যাচ্ছে। করোনার সময় অক্সিজেনের অভাবে প্রাণ গেছে অসংখ্য মানুষের।

তিনি বলেন, আমাদের নেত্রী দেশেই থাকেন। মিথ্যা মামলায় পাঁচ-ছয় বছর কারাভোগ করেছেন। আমরা কোনো বিদেশপন্থি দল নই, আমরা বাংলাদেশপন্থি দল—বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল (বিএনপি)।

জামায়াতের দিকে ইঙ্গিত করে রিজভী বলেন, আপনারা আমাদের ভারতপন্থি বলেন, অথচ ৫ আগস্টের পরে আমরা দেখলাম আপনারাই ভারতের সঙ্গে বিশেষ সম্পর্কের দাবি করলেন। ৭১ সালে যখন জাতি স্বাধীনতার জন্য লড়ছে, তখন আপনারা পাকিস্তানি হানাদারদের সমর্থন করেছিলেন।

তিনি বলেন, আজকে আবার সেই ষড়যন্ত্র চলছে কিনা, সেটা অন্তর্বর্তী সরকারকে খুঁজে বের করতে হবে। মাজার ভাঙা, লাশ পুড়িয়ে দেওয়ার মতো জঘন্য ঘটনা আন্তর্জাতিক ষড়যন্ত্রেরই অংশ হতে পারে। আমরা এর তীব্র নিন্দা জানাই।

রিজভী বলেন, আজকের এই জন্মদিনে ও মিলাদের দিনে আমি শুধু বলবো—যিনি আল্লাহর বাণী নিয়ে এসেছিলেন, তার জীবন থেকে আমরা শিক্ষা গ্রহণ করি। তাহলে আমাদের সমাজে দুর্নীতি, লোভ ও হিংসা দূর হবে। আমরা সৎভাবে বাঁচতে পারবো, শান্তি ফিরে আসবে।

দোয়া ও মিলাদ মাহফিলে আরও উপস্থিত ছিলেন বিএনপির যুগ্ম-মহাসচিব খায়রুল কবির খোকন, আব্দুস সালাম আজাদ, স্বেচ্ছাসেবক বিষয়ক সম্পাদক মীর সরাফৎ আলী সপু, সহ-প্রচার সম্পাদক আসাদুল করীম শাহিন, নির্বাহী কমিটির সদস্য (দফরে সংযুক্ত) আব্দুস সাত্তার পাটোয়ারী প্রমুখ।

কেএইচ/এসএইচএস/এএসএম

Read Entire Article