দ্রুত পাঠ্যবই সংশোধন করে কোমলমতি শিক্ষার্থীদের সামনে ইতিহাসের নিরপেক্ষ ও সঠিক তথ্য তুলে ধরার আহ্বান জানিয়েছেন বিএনপির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী।
তিনি বলেন, পতিত স্বৈরশাসকের অনুচররা হাসিনা পালানোর পর ভীষণ মন:কষ্ট নিয়ে দিনরাত্রি চক্রান্তে মেতে থাকছে। তারাই পাঠ্যবইয়ে সর্বাগ্রে আওয়ামী লীগের শ্রেষ্ঠত্ব, স্তুতি-বন্দনা আর বিএনপি সেনা ছাউনিতে জন্ম বলে হেয় প্রতিপন্ন ও বিতর্কিত করে কোমলমতি শিক্ষার্থীদের মগজ ধোলাইয়ের প্রকল্প বাস্তবায়ন করতে চাচ্ছে।
শনিবার (১১ জানুয়ারি) নয়াপল্টনে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন।
রিজভী বলেন, নতুন শিক্ষাবর্ষে ছাপানো নবম-দশম শ্রেণির পরিমার্জিত ‘পৌরনীতি ও নাগরিকতা’ বইয়ের ৭৩ নম্বর পৃষ্ঠায় বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ সম্পর্কে হাসিনার অলিগার্করা লিখেছে, আওয়ামী লীগ এ দেশের বৃহত্তম রাজনৈতিক দল।বিএনপিকে নিয়ে অতিকথন, অপপ্রচার আর কুৎসা রটানোর বিরতিহীন যে ধারাভাষ্য চালানো হয়েছে শেখ হাসিনার ১৬ বছরে, তারই প্রতিফলন এখনও আমরা দেখছি পাঠ্যপুস্তকে। বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা জিয়াউর রহমানকে সাবেক রাষ্ট্রপতির পরিবর্তে সাবেক সেনাপ্রধান হিসেবে উল্লেখ করে বলা হয়েছে, সাবেক সেনাপ্রধান মেজর জেনারেল জিয়াউর রহমানের সামরিক শাসনামলে ১৯৭৮ সালের ১ সেপ্টেম্বর বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল (বিএনপি) গঠিত হয়। জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ডের (এনসিটিবি) ভেতরে-বাইরে ঘাপটি মেরে বসে থাকা আওয়ামী ভূতেরা শেখ হাসিনারই মিথ্যা বয়ান লিপিবদ্ধ করেছে পাঠ্যপুস্তকে।
তিনি বলেন, বর্তমানে অবস্থাদৃষ্টে মনে হচ্ছে, মাফিয়া প্রধান পালালেও মাফিয়া চক্রের অনেকেই এখনো রাষ্ট্রযন্ত্রের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ স্থানে বহাল তবিয়তে ঘাপটি মেরে আছে। সুযোগ পেলেই তারা স্বরূপে আবির্ভূত হচ্ছে। আমরা গভীর উদ্বেগের সঙ্গে লক্ষ্য করছি, দেশের জনগণের ভালোবাসায় ধন্য বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল বিএনপির বিরুদ্ধে একটি গভীর ষড়যন্ত্র চলছে। কোমলমতি শিক্ষার্থীদের পাঠ্যপুস্তকেও বিএনপি সম্পর্কে ভুল তথ্য সন্নিবেশিত করা হচ্ছে।
রিজভী বলেন,আমরা রাজনীতি সচেতন দেশবাসীর সামনে স্পষ্ট ভাষায় জানিয়ে দিতে চাই, বিএনপি সেনাছাউনিতে জন্ম হওয়া কোনো দল নয়। ঢাকার রমনায় এক সংবাদ সম্মেলনে ১৯৭৮ সালের পহেলা সেপ্টেম্বর শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান যখন বিএনপি গঠনের ঘোষণা দেন, তখন তিনি ছিলেন দেশের নির্বাচিত প্রেসিডেন্ট। সুতরাং বিএনপি সেনাছাউনিতে গঠিত হয়েছে এই তথ্য ইতিহাস বিকৃতি ছাড়া কিছুই নয়।
বিএনপির এই মুখপাত্র বলেন, এসব সত্য ইতিহাস কেন এখন পাঠ্যপুস্তকে সন্নিবেশিত হবে না? এইসব তথ্য জানার পর বিএনপি সম্পর্কে যারা বিভ্রান্তি ছড়াচ্ছে তারা গভীর চক্রান্তে নিয়োজিত রয়েছে। বর্তমান অন্তর্বর্তীকালীন সরকার দায়িত্ব নেওয়ার পর পাঠ্যবই থেকে দলীয় গুণগান বাদ দিয়ে সংশোধন ও পরিমার্জন করার উদ্যোগ নিলেও হাসিনার দোসররা তাদের অশুভ উদ্দেশ্য বাস্তবায়নে মত্ত রয়েছে।
এ সময় অবিলম্বে জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ডের (এনসিটিবি) ভেতরে-বাইরেসহ সকল পর্যায় থেকে ফ্যাসিবাদের দোসরদের চিহ্নিত করে তাদের বিরুদ্ধে কঠোর আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করার আহ্বান জানান তিনি।
কেএইচ/এএমএ/এএসএম