বিশ্বজুড়ে পারমাণবিক অস্ত্রের নিয়ন্ত্রণ ও কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার (এআই) দ্রুত বিকাশ নিয়ে গুরুত্বপূর্ণ এক মন্তব্য করেছেন বিদায়ী মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন এবং চীনা প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং।
তারা একমত হয়েছেন যে, পারমাণবিক অস্ত্র ব্যবহারের সিদ্ধান্ত কখনো কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার (এআই) হাতে না গিয়ে, বরং মানুষের হাতে থাকা উচিত।
রোববার (১৭ নভেম্বর) বার্তা সংস্থা রয়টার্সের একটি প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়।
এ বিষয়ে তাদের এই সম্মতিটি বিশেষ গুরুত্ব পায় কারণ বর্তমানে পারমাণবিক অস্ত্রের নিয়ন্ত্রণ এবং এআই প্রযুক্তির দ্রুত বিকাশ নিয়ে বিশ্বব্যাপী উদ্বেগ এবং আলোচনা বৃদ্ধি পাচ্ছে।
শনিবার (১৬ নভেম্বর) এপেক (এশিয়া-প্যাসিফিক ইকোনমিক কো-অপারেশন ফোরাম) সম্মেলনের সাইডলাইনে বাইডেন ও জিনপিংয়ের মধ্যে এই গুরুত্বপূর্ণ বৈঠকটি অনুষ্ঠিত হয়। বৈঠকটি ছিল তাদের মধ্যে সর্বশেষ কূটনৈতিক আলোচনা, যা বিশ্ব শান্তির জন্য এক গুরুত্বপূর্ণ বার্তা দেয়।
হোয়াইট হাউসের পক্ষ থেকে এক বিবৃতিতে জানানো হয়, দুই নেতা পারমাণবিক অস্ত্র ব্যবহারের সিদ্ধান্তে মানুষের নিয়ন্ত্রণ বজায় রাখার প্রয়োজনীয়তা নিশ্চিত করেছেন। তারা আরও বলেছেন, সামরিক খাতে এআই প্রযুক্তি ব্যবহারের সম্ভাব্য ঝুঁকি সম্পর্কে সতর্ক থাকতে হবে এবং এআই প্রযুক্তি বিকাশের ক্ষেত্রে সঠিক বিচক্ষণতা ও দায়িত্বশীলতা অবলম্বন করতে হবে।
উল্লেখ্য, বর্তমানে চীনের কাছে প্রায় ৫০০টি সক্রিয় পারমাণবিক অস্ত্র রয়েছে, তবে পেন্টাগন ধারণা করছে ২০৩০ সালের মধ্যে এই সংখ্যা এক হাজার ছাড়িয়ে যেতে পারে। যুক্তরাষ্ট্রের ১৭৭০টি এবং রাশিয়ার ১৭১০টি সক্রিয় পারমাণবিক অস্ত্র রয়েছে। তবে চীনের পারমাণবিক অস্ত্রের সংখ্যা ২০৩০ সালের মধ্যে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের থেকেও বেশি হয়ে যেতে পারে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন বিশেষজ্ঞরা।
বৈঠকে বাইডেন, চীনা প্রেসিডেন্ট শি জিনপিংকে অনুরোধ করেছেন, রাশিয়া ও উত্তর কোরিয়ার সামরিক সম্পর্ক যেন আরও গভীর না হয়। বিশেষ করে, ইউক্রেন যুদ্ধে উত্তর কোরিয়ার সেনা পাঠানোর বিষয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন তিনি এবং চীনকে বলেছেন এই যুদ্ধ বন্ধ করার সক্ষমতা রয়েছে তাদের।
বৈঠকটি বিশ্ব শান্তির জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ হিসেবে চিহ্নিত হয়েছে, যেখানে পারমাণবিক অস্ত্রের ব্যবহারের সিদ্ধান্ত মানুষের হাতে রাখার প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে, যাতে এআই প্রযুক্তির সীমাবদ্ধতা এবং মানবিক মূল্যবোধের প্রতি শ্রদ্ধা বজায় রাখা যায়।