পিসিবির হল অফ ফেমে অন্তর্ভুক্ত হলেন পাকিস্তানের চার কিংবদন্তি
পাকিস্তান ক্রিকেট বোর্ড (পিসিবি) পাকিস্তানের চার কিংবদন্তি ক্রিকেটার ইনজামাম-উল-হক, মিসবাহ-উল-হক, মুশতাক মোহাম্মদ এবং সাঈদ আনোয়ারকে তাদের হল অব ফেমে অন্তর্ভুক্ত করেছে। এই চার কিংবদন্তি ২০২১ সালে চালু হওয়া পিসিবি হল অব ফেমে যুক্ত হওয়া আরও দশজনের সঙ্গে স্থান পেয়েছেন।
পিসিবি চেয়ারম্যান মহসিন নকভি এক বিবৃতিতে বলেন, ‘এই চারজন কিংবদন্তি ক্রিকেটারকে পিসিবি হল অব ফেমে অন্তর্ভুক্তির জন্য আন্তরিক অভিনন্দন জানাই। এটি পাকিস্তান ক্রিকেট এবং বিশ্ব ক্রিকেটে তাদের অসামান্য অবদানের প্রতি শ্রদ্ধা।’
মুশতাক মোহাম্মদকে পাকিস্তানের অন্যতম সেরা অধিনায়ক হিসেবে গণ্য করা হয়। তার দূরদর্শী নেতৃত্ব এবং অনুপ্রেরণাদায়ক কৌশল দলকে অনন্য উচ্চতায় পৌঁছে দেয়। ইনজামাম-উল-হক তার ব্যাটিং প্রতিভা এবং ম্যাচ জয়ের সামর্থ্যের মাধ্যমে ক্রিকেটে অবিস্মরণীয় প্রভাব রেখেছেন। মিসবাহ-উল-হক কঠিন সময়ে পাকিস্তান দলের অধিনায়কত্ব গ্রহণ করে ২০১৬ সালে দলকে টেস্ট র্যাঙ্কিংয়ে শীর্ষে নিয়ে যান। অন্যদিকে, সাঈদ আনোয়ার তার নান্দনিক টেকনিক এবং স্বাভাবিক প্রতিভার জন্য ওপেনার হিসেবে ইতিহাসে স্মরণীয় হয়ে আছেন।
১৯৯২ সালের ওয়ানডে বিশ্বকাপজয়ী দলে থাকা ইনজামাম পাকিস্তানের হয়ে ১২০টি টেস্ট, ৩৭৮টি ওডিআই এবং একটি মাত্র টি২০ ম্যাচ খেলেছেন। তার ৮৮৩০ টেস্ট রান এবং ১১,৭৩৯ ওডিআই রান তাকে পাকিস্তানের সেরা ব্যাটারদের মধ্যে স্থান দিয়েছে। নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে ২০০২ সালে করা তার ৩২৯ রানের ইনিংস পাকিস্তানের দ্বিতীয় সর্বোচ্চ টেস্ট স্কোর।
ইনজামাম বলেন, ‘এই যাত্রায় আমার সহকর্মী ক্রিকেটার, সমর্থক স্টাফ এবং পরিবারের প্রতি আমি গভীর কৃতজ্ঞ। পাকিস্তানের হয়ে এমন উচ্চমানের খেলোয়াড়দের সঙ্গে খেলার সৌভাগ্য আমার ব্যাটসম্যান হিসেবে বিকাশে বড় ভূমিকা রেখেছে।’
সাঈদ আনোয়ার পাকিস্তানের হয়ে ৫৫টি টেস্টে ৪০৫২ রান এবং ২৪৭টি ওডিআই-তে ৮৮২৪ রান সংগ্রহ করেছেন। ১৯৯৭ সালে ভারতের বিপক্ষে তার ১৯৪ রানের ইনিংস দীর্ঘদিন ওডিআই ইতিহাসের সর্বোচ্চ স্কোর হিসেবে টিকে ছিল। আনোয়ার বলেন, ‘পাকিস্তান ক্রিকেটের কিছু স্মরণীয় মুহূর্তের অংশীদার হতে পারা ছিল বিশাল সৌভাগ্যের। দলের ভিত্তি স্থাপন এবং বিশ্বের সেরা বোলারদের বিপক্ষে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করার প্রতিটি মুহূর্ত আমি উপভোগ করেছি।’
মিসবাহ-উল-হক পাকিস্তানের অন্যতম সফল টেস্ট অধিনায়ক। ২০১০ সালে স্পট-ফিক্সিং কেলেঙ্কারির পর তিনি দায়িত্ব গ্রহণ করেন এবং ২০১৬ সালে দলকে টেস্ট র্যাঙ্কিংয়ে শীর্ষে নিয়ে যান। মিসবাহ বলেন, ‘পাকিস্তানের প্রতিনিধিত্ব করা ছিল এক বিরাট সম্মান। অধিনায়কত্ব এবং এই স্বীকৃতি আমার ক্রিকেট জীবনের সেরা প্রাপ্তি।’
১৫ বছর বয়সে টেস্ট ক্রিকেটে অভিষেক করা মুশতাক মোহাম্মদ ১৯৫৯ সালে টেস্ট ক্রিকেটের ইতিহাসে সবচেয়ে কমবয়সী খেলোয়াড় হন। তিনি পাকিস্তানের হয়ে ৫৭টি টেস্ট এবং ১০টি ওডিআই খেলেছেন। মুশতাক বলেন, ‘পাকিস্তানের হয়ে শেষ ম্যাচ খেলার ৪৫ বছর পর এই সম্মান পাওয়া অত্যন্ত অনুপ্রেরণাদায়ক। আমার ভাই হানিফ মোহাম্মদের মতো কিংবদন্তির সঙ্গে এই হল অব ফেমে জায়গা পাওয়া আমার জন্য আরও গর্বের।’
এই কিংবদন্তিদের নির্বাচনের জন্য একটি ১১ সদস্যবিশিষ্ট স্বাধীন প্যানেল কাজ করেছে। প্যানেলে ছিলেন ওয়াসিম আকরাম, জহির আব্বাসসহ বর্তমান হল অব ফেম সদস্য, প্রাক্তন খেলোয়াড় আজহার আলি, বিসমাহ মারুফ, নাইন আবিদি এবং ছয়জন ক্রিকেট সাংবাদিক ও বিশ্লেষক।