পুঁজিবাজারের প্রতারক চক্র গোয়েন্দা সংস্থার নজরে: ডিএসই

3 hours ago 3

ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) ভারপ্রাপ্ত ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) আসাদুর রহমান বলেছেন, ডিএসইর নাম, লোগো ও অফিসের ঠিকানা ব্যবহার করে হোয়াটসঅ্যাপসহ অনলাইন মাধ্যমে যেসব প্রতারক চক্র বিনিয়োগকারীদের সঙ্গে প্রতারণা চালাচ্ছে তারা এরই মধ্যে গোয়েন্দা সংস্থার নজরে এসেছে। গ্রুপটি নারায়ণগঞ্জভিত্তিক। শিগগির তারা হয়তো আইনের আওতায় আসবে।

মঙ্গলবার (২৬ আগস্ট) রাজধানীর পল্টনে ক্যাপিটাল মার্কেট জার্নালিস্টস ফোরামের (সিএমজেএফ) অডিটোরিয়ামে ডিএসই আয়োজিত ‘প্রতারক চক্রের আর্থিক প্রতারণা রোধে পুঁজিবাজারের বিনিয়োগকারীদের সচেতনতা’ শীর্ষক সংবাদ সম্মেলেন তিনি এসব কথা বলেন।

সংবাদ সম্মেলনে আরও উপস্থিত ছিলেন ডিএসইর চিফ রেগুলেটরি অফিসার (সিআরও) শফিকুল ইসলাম ভূঁইয়া ও উপ-মহাব্যবস্থাপক মো. শফিকুর রহমান।

আসাদুর রহমান বলেন, হোয়াটসঅ্যাপ, টেলিগ্রাম ও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে এ ধরনের কর্মকাণ্ডে জড়িত চক্রকে এরই মধ্যে গোয়েন্দা সংস্থার নজরদারিতে আনা হয়েছে। তবুও বিনিয়োগকারীদের সচেতন থাকতে হবে।

বিনিয়োগকারীদের সতর্ক করে ডিএসই কর্তৃপক্ষ বলেন, বিনিয়োগের একমাত্র বৈধ মাধ্যম হলো বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি), ডিএসই ও চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জের (সিএসই) অনুমোদিত স্টক ব্রোকার। এর বাইরে অন্য কোনো মাধ্যমে বিনিয়োগ করলে তা প্রতারণার শামিল হতে পারে।

আসাদুর রহমান বলেন, কিছু প্রতারক চক্র ডিএসই ও বিএসইসির নাম ব্যবহার করে মানুষকে বিনিয়োগের লোভ দেখাচ্ছে। এ বিষয়ে আমরা আইনপ্রয়োগকারী ও গোয়েন্দা সংস্থাগুলোকে জানিয়েছি। তাদের সহায়তায় প্রতারকদের শনাক্ত ও আইনের আওতায় আনতে কাজ চলছে।

তিনি আরও বলেন, আমরা বিনিয়োগকারীদের জানাতে চাই—স্টক এক্সচেঞ্জ বা নিয়ন্ত্রক সংস্থা সরাসরি কারও সঙ্গে বিনিয়োগে সম্পৃক্ত নয়। বিনিয়োগের একমাত্র বৈধ পথ হলো অনুমোদিত স্টক ব্রোকার। তাই অচেনা ব্যক্তি বা গ্রুপের প্রলোভনে পড়লে আপনার অর্থ ঝুঁকিতে পড়বে। যদি কেউ প্রতারণায় জড়িত থাকেন, তাদের সতর্ক করছি—এখনো সময় আছে ভালো হয়ে যান। নইলে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী সংস্থা কঠোর ব্যবস্থা নেবে।

আসাদুর রহমান জানান, প্রতারকরা মূলত সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে এআই ব্যবহার করে লোভনীয় বার্তা পাঠায়। শুরুতে সামান্য মুনাফা দেখিয়ে ভুক্তভোগীদের আস্থা অর্জন করে। পরে আরও কিছু মুনাফা দেখানোর পর বড় অঙ্কের টাকা বিনিয়োগে প্রলুব্ধ করে। বিনিয়োগকারী টাকা দিলে জানানো হয়—অ্যাপে সমস্যা হয়েছে, আরও অর্থ দিতে হবে। কিন্তু অতিরিক্ত অর্থ নেওয়ার পর প্রতারক চক্র ভুক্তভোগীকে ব্লক করে দেয়।

ডিএসইর পক্ষ থেকে বলা হয়, প্রতারণার এ ধরনের ফাঁদ থেকে বাঁচতে বিনিয়োগকারীদের অবশ্যই সতর্ক হতে হবে। কেবল অনুমোদিত স্টক ব্রোকারের মাধ্যমেই লেনদেন করতে হবে। ডিএসই ও বিএসইসির অফিসিয়াল ওয়েবসাইটে অনুমোদিত ব্রোকারদের তালিকা পাওয়া যায়। অচেনা ব্যক্তি বা সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে প্রলোভনমূলক প্রস্তাবে সাড়া না দেওয়ার আহ্বান জানানো হয়েছে।

ডিএসই কর্মকর্তাদের মতে, এ ধরনের প্রতারণা শুধু ব্যক্তিগত ক্ষতির কারণ নয়, বরং পুঁজিবাজারের প্রতি সাধারণ মানুষের আস্থা নষ্ট করে। তাই গোয়েন্দা সংস্থা ও আইনপ্রয়োগকারী বাহিনীর পাশাপাশি বিনিয়োগকারীদের সচেতনতা সবচেয়ে বড় প্রতিরক্ষা।

Read Entire Article