রাজধানীর শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের কার্গো ভিলেজে লাগা আগুন পুরোপুরি নিভে গেছে বলে জানিয়েছে ফায়ার সার্ভিস।
রোববার (১৯ অক্টোবর) এক ব্রিফিংয়ে ফায়ার সার্ভিস এ তথ্য নিশ্চিত করে।
তবে, আগুনের সূত্রপাত কীভাবে তাৎক্ষণিকভাবে সেটি নিশ্চিত করতে পারেনি ফায়ার সার্ভিস।
ফায়ার সার্ভিস জানায়, ভবিষ্যতে দুর্ঘটনা এড়াতে যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে।
উল্লেখ্য, গতকাল শনিবার দুপুর আড়াইটার দিকে বিমানবন্দরের কার্গো ভিলেজে আগুন লাগার ঘটনা ঘটে। কয়েক ঘণ্টা বন্ধ থাকার পর শনিবার রাত থেকে ফ্লাইট চলাচল শুরু হলেও, এখনো সব ফ্লাইট যথাসময়ে ওঠানামা করছে না।
অন্যদিকে, আগুন লাগার পর বিমানবন্দরের কার্যক্রম সাময়িকভাবে স্থগিত হয়ে পড়লেও রোববার সকাল নাগাদ তা অনেকটাই স্বাভাবিক হয়েছে বলে জানায় বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষ।
কিছু ফ্লাইট এখনো নির্ধারিত সময়ের চেয়ে দেরিতে ছাড়ছে। শনিবার বিমানবন্দর বন্ধ থাকায় যেসব ফ্লাইট ছেড়ে যেতে পারেনি, সেসব বিমান অগ্রাধিকার ভিত্তিতে ছাড়ার ব্যবস্থা করা হচ্ছে বলে জানা যাচ্ছে।
শনিবার দুপুরে বিমানবন্দরের কার্গো ভিলেজে আগুন লাগার পরপরই পুরো বিমানবন্দর এলাকা কালো ধোঁয়ায় ছেয়ে যায়। স্বাভাবিকভাবেই কর্তৃপক্ষ তখন বিমান ওঠানামা সাময়িকভাবে স্থগিত ঘোষণা করে।
রোববার দুপুরে বিমানবন্দর পরিদর্শনে গিয়ে বাণিজ্য উপদেষ্টা বশির উদ্দিন জানান, ‘আগামী তিন দিন যত নন-শিডিউল এক্সট্রা ফ্লাইট আসবে তার সমস্ত মাশুল ও খরচ আমরা মওকুফ করে দিয়েছি।’
এর ফলে ফ্লাইট শিডিউল বিপর্যয় হওয়ার কারণে যে জটিলতা তৈরি হয়েছে, তা কমে আসবে বলে আশা প্রকাশ করেন এই উপদেষ্টা।
আগুনের ঘটনায় ব্যবসায়ীদের অনেকেই বিপুল ক্ষয়ক্ষতির আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন। শনিবার সন্ধ্যা থেকেই সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে বিভিন্ন অনলাইনভিত্তিক পেইজে – যারা বিদেশ থেকে পণ্য আমদানি করে বিক্রি করেন – পোস্ট দেখা যায় যে কার্গো ভিলেজের আগুনে তাদের ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে।
শনিবার রাতে বিমানবন্দর এলাকাতেও অনেক মাঝারি ও ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীকে দেখা যায়, যারা বলছিলেন যে আগুনে তাদের বড় অঙ্কের ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে।
আগুনের ঘটনায় আলাদা আলাদা তদন্ত কমিটি গঠন করেছে অভ্যন্তরীণ সম্পদ বিভাগ ও বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রণালয়।
এই ঘটনায় ফায়ার সার্ভিস ও আনসার বাহিনীর বেশ কয়েকজন সদস্য আহত হয়েছেন বলে জানা যাচ্ছে।
শনিবার রাতে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টার প্রেস টিম থেকে পাঠানো এক বিবৃতিতে বলা হয়, দেশের বিভিন্ন স্থানে সম্প্রতি সংঘটিত একাধিক অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় জনমনে যে উদ্বেগ সৃষ্টি হয়েছে, অন্তর্বর্তী সরকার তা গভীরভাবে অবগত।’
সাম্প্রতিক এসব অগ্নিকাণ্ড ‘নাশকতা হিসেবে প্রমাণিত’ হলে অথবা ‘আতঙ্ক বা বিভাজন সৃষ্টির’ লক্ষ্যে ঘটানো হচ্ছে বলে প্রমাণ পেলে সেগুলো ‘মোকাবিলা’ করার কথাও বলা হয়।
নিরাপত্তা সংস্থাগুলো প্রতিটি ঘটনা ‘গভীরভাবে তদন্ত করছে’ জানিয়ে এতে বলা হয়, ‘নাশকতা বা অগ্নিসংযোগের কোনো বিশ্বাসযোগ্য প্রমাণ পাওয়া গেলে সরকার তাৎক্ষণিক ও দৃঢ় পদক্ষেপ নেবে।’