পুলিশ কনস্টেবলের রাজকীয় বিদায়

1 month ago 10

২৫ বছরের টানা কর্মজীবনের ইতি টেনে কান্নাভেজা চোখে বিদায় নিলেন পুলিশ কনস্টেবল মো. আফছার উদ্দিন। সহকর্মীদের ভালোবাসা, সম্মান ও স্মৃতিতে মোড়া সেই বিদায় হয়ে রইল ব্যতিক্রমী ও হৃদয়ছোঁয়া। চাকরিজীবনের শুরু যেমন গাজীপুরে, শেষটাও হলো গাজীপুরের কালীগঞ্জ থানায়।

মঙ্গলবার (৫ আগস্ট) দুপুরে কালীগঞ্জ থানা প্রাঙ্গণে এক আবেগঘন পরিবেশে তাকে সংবর্ধনা দেওয়া হয়। করিডোরের দুই পাশে সারিবদ্ধভাবে দাঁড়িয়ে কনস্টেবল আফছার উদ্দিনকে থানা ভবন থেকে সুসজ্জিত গাড়ি পর্যন্ত নিয়ে যান পুলিশের সদস্যরা। গাড়িটি আগে থেকেই প্রস্তুত ছিল। এর আগে গত ৩১ জুলাই ছিল মো. আফছার উদ্দিনের চাকরির শেষ কর্মদিবস।

বিদায়ী পুলিশ সদস্য মো. আফছার উদ্দিন টাঙ্গাইল সদর উপজেলার পিচুরিয়া গ্রামের মৃত শহিদ আলীর ছেলে। তিন ভাই ও দুই বোনের মধ্যে তিনিই বড়। ২০০০ সালের ১২ ফেব্রুয়ারি গাজীপুর আর্মড পুলিশ ব্যাটালিয়নে যোগদানের মাধ্যমে শুরু হয় তার কর্মজীবন। এরপর নেত্রকোনা, পুলিশ হেডকোয়ার্টার, ঢাকা মেট্রোপলিটনসহ দেশের বিভিন্ন জায়গায় দায়িত্ব পালন করেন তিনি।

২৫ বছরের টানা কর্মজীবনের ইতি টেনে কান্নাভেজা চোখে বিদায় নিলেন পুলিশ কনস্টেবল মো. আফছার উদ্দিন

শেষ কর্মস্থল কালীগঞ্জ থানায় এই ব্যতিক্রমী আয়োজন করা হয় গাজীপুর জেলা পুলিশ সুপার ড. চৌধুরী মো. যাবের সাদেকের নির্দেশনায়। থানা ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. আলাউদ্দিন এ আয়োজনের নেতৃত্ব দেন। অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন থানার ইন্সপেক্টর (তদন্ত) মো. আশরাফুল ইসলাম, উপপরিদর্শক মাসুদ রানা শামীম, থানার সব এসআই, এএসআইসহ পুলিশের অন্যান্য সদস্যরা।

অনুষ্ঠানে আফছার উদ্দিনকে ক্রেস্ট ও ফুলেল শুভেচ্ছা দিয়ে বিদায় জানানো হয়।

কনস্টেবল আফছার বলেন, চাকরি জীবনের শেষে এমন বিদায় পাবো কখনো ভাবিনি। সহকর্মীদের এই সম্মান আমার জীবনের বড় অর্জন। চেষ্টা করেছি সততা ও নিষ্ঠার সঙ্গে দায়িত্ব পালনের। হয়তো সেটাই তাদের ভালো লেগেছে। গাজীপুর দিয়েই আমার চাকরি শুরু, গাজীপুরেই শেষ, এটা আমার জন্য গর্বের।

২৫ বছরের টানা কর্মজীবনের ইতি টেনে কান্নাভেজা চোখে বিদায় নিলেন পুলিশ কনস্টেবল মো. আফছার উদ্দিন

ব্যক্তিগত জীবনে তিনি এক পুত্র ও এক কন্যা সন্তানের জনক। ছেলে বর্তমানে মিরপুর বাংলা কলেজ থেকে এইচএসসি পরীক্ষা দিচ্ছেন, আর মেয়ে রাজারবাগ পুলিশ লাইন্স স্কুল থেকে সদ্য এসএসসি পাস করেছে।

ওসি মো. আলাউদ্দিন বলেন, আফছার উদ্দিনের সততা, দায়িত্ববোধ ও সহকর্মী সুলভ আচরণ ছিল নজিরস্বরূপ। তার অবসরে যাওয়াকে আমরা শুধুই বিদায় নয়, বরং সম্মানের সঙ্গে স্মরণীয় করে রাখতে চেয়েছি।

আব্দুর রহমান আরমান/জেডএইচ/জেআইএম

Read Entire Article