পুলিশ কর্মকর্তার সহায়তা, জাপা নেতার খরচ, রিমান্ডে মার্কিন নাগরিক

2 hours ago 5

বিদেশি গোয়েন্দা সংস্থার কর্মকর্তা দাবি করা এনায়েত করিম ওরফে মাসুদ করিম চৌধুরীকে ঢাকা বিমানবন্দর থেকে আনতে যান পুলিশের একজন পদস্থ কর্মকর্তা। এরপর এনায়েত করিমের নিরাপত্তায় নিজের দেহরক্ষীকে (একজন পুলিশ সদস্য) নিয়োজিত করেছিলেন পুলিশের ডিআইজি পদমর্যাদার আরেক কর্মকর্তা।

গ্রেফতারের সময় ওই দেহরক্ষী এনায়েত করিমের সঙ্গেই ছিলেন। দেহরক্ষীকে এরই মধ্যে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে। তবে ডিআইজির বিষয়ে ব্যবস্থা নেওয়া হবে কি না, এ বিষয়ে এখনো কোনো সিদ্ধান্ত হয়নি।

গত ৬ সেপ্টেম্বর যুক্তরাষ্ট্র থেকে বাংলাদেশে আসার পর এনায়েত করিম দুদিন একটি পাঁচ তারকা হোটেলে ছিলেন। ওই হোটেল বুকিং ও তার ভাড়া পরিশোধ করেছিলেন জাতীয় পার্টির রওশনপন্থি অংশের মহাসচিব পরিচয় দেওয়া কাজী মামুনুর রশিদ।

গ্রেফতারের পর আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর জিজ্ঞাসাবাদে এনায়েত করিম এসব তথ্য দিয়েছেন বলে সংশ্লিষ্ট সূত্র জানিয়েছে।

সোমবার (১৫ সেপ্টেম্বর) ৫৫ বছর বয়সী ওই ব্যক্তিকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য ১০ দিনের রিমান্ড আবেদন করা হয়। শুনানি শেষে ঢাকার মহানগর হাকিম আতিকুর রহমান রিমান্ড মঞ্জুর করেন।

এর আগে গত শনিবার এনায়েত করিমকে সন্দেহভাজন হিসেবে আটকের পর ৫৪ ধারায় তাকে গ্রেফতার দেখানো হয়। তার বিরুদ্ধে সন্ত্রাসবিরোধী আইনে রমনা থানায় মামলা হয়েছে। ওই মামলা তদন্ত করছে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি)।

ওই মামলায় আদালত এনায়েত করিমকে রিমান্ডে নিয়ে ৪৮ ঘণ্টা জিজ্ঞাসাবাদের অনুমতি দিয়েছেন। তার কাছ থেকে জব্দ করা পাসপোর্টের তথ্য অনুযায়ী তিনি যুক্তরাষ্ট্রের নাগরিক।

ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের অতিরিক্ত কমিশনার (ডিবি) মো. শফিকুল ইসলাম জানান, এনায়েত করিমকে রিমান্ডে এনে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে। তার সঙ্গে সংশ্লিষ্ট কয়েকজনের বিষয়ে জানা গেছে। তথ্য—প্রমাণ পাওয়া গেলে ওই সব সন্দেহভাজন ব্যক্তিকেও আইনের আওতায় আনা হবে।

আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর একাধিক সূত্র জানায়, এনায়েত করিম ২০ বছরের বেশি সময় ধরে একটি প্রভাবশালী দেশের গোয়েন্দা সংস্থার দক্ষিণ এশিয়ার প্রধান পরিচয় দিয়ে বিএনপিসহ একাধিক রাজনৈতিক দলের নেতাদের সঙ্গে প্রতারণা করছেন। কখনো রাষ্ট্রক্ষমতায় বসানোর স্বপ্ন দেখিয়ে, কখনো যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেনশিয়াল ডিনারে আমন্ত্রণ পাইয়ে দেওয়ার কথা বলে তিনি অনেকের কাছ থেকে মোটা অঙ্কের অর্থ নেন।

২০১৪ ও ২০১৮ সালের জাতীয় নির্বাচনের আগেও অনেক নেতার কাছ থেকে অর্থ নেন বলে অভিযোগ রয়েছে।

২০১৮ সালের পর বিএনপিপন্থি এক সাংবাদিক নেতা এবং নবগঠিত একটি দলের নেতার (তিনি পরে দলটি ছেড়ে যান) সঙ্গে সখ্যতা গড়েও এনায়েত করিম প্রতারণা চালিয়ে গেছেন। এই দুজনের সঙ্গে এখনো এনায়েত করিমের যোগাযোগ অব্যাহত আছে।

এর আগে বিএনপি নেতৃত্বাধীন চারদলীয় জোট সরকার আমলেও একবার এনায়েত করিমকে প্রতারণার অভিযোগে চট্টগ্রাম বিমানবন্দরে গ্রেফতার করা হয়েছিল।

টিটি/এমআরএম

Read Entire Article