পুলিশের হারিয়ে যাওয়া পিস্তল ছিল শ্যুটার শুক্কুরের কাছে

1 week ago 3

রাজধানীর কদমতলী এলাকায় অভিযান চালিয়ে দুটি বিদেশি পিস্তল ও গুলিসহ দুজনকে গ্রেফতার করেছে র‌্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র‌্যাব-১০)।

বৃহস্পতিবার (২৮ আগস্ট) রাজধানীর কারওয়ান বাজার র‌্যাব মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত সংবাদ সন্মেলনে এসব জানান র‌্যাব মহাপরিচালক (ডিজি) এ কে এম শহিদুর রহমান।

তিনি বলেন, বুধবার (২৭ আগস্ট) বিকেল ৩টার দিকে গোপন সংবাদের ভিত্তিতে কদমতলী থানাধীন রহমতবাগ এলাকার একটি ভাড়া বাসায় কয়েকজন ব্যক্তি অবৈধ আগ্নেয়াস্ত্রসহ অবস্থান করছে বলে জানা যায়। এ তথ্যের ভিত্তিতে র‌্যাব-১০ দ্রুত ওই এলাকায় গোয়েন্দা নজরদারি জোরদার করে।

তিনি জানান, সুনির্দিষ্ট অভিযান পরিচালনার লক্ষ্যে রাজধানীর কদমতলী থানাধীন রহমতবাগ এলাকার একটি আট তলা ভবন ঘিরে ফেলা হয়। গোয়েন্দা তথ্য অনুযায়ী, ওই ভবনের পঞ্চম তলায় বসবাসরত বাচ্চু মিয়ার (৩৮) ভাড়া ফ্ল্যাটে অস্ত্র ও মাদক কারবারি শুকুর হোসেন ওরফে শ্যুটার শুক্কুর (৪২) অবস্থান করছে।

তিনি বলেন, শ্যুটার শুক্কুর প্রায়ই বাচ্চু মিয়ার ভাড়া ফ্ল্যাটে যাতায়াত করত এবং সেখানে অবস্থান করতো। যা গোয়েন্দা নজরদারিতে নিশ্চিত হওয়া যায়। একপর্যায়ে বাচ্চু মিয়া ফ্ল্যাট থেকে বের হলে তাকে ভবনের সামনেই আটক করা হয়। এসময় তার কাছ থেকে ৯৬ পিস ইয়াবা ও ৫ গ্রাম হেরোইন উদ্ধার করা হয়।

পুলিশের হারিয়ে যাওয়া পিস্তল ছিল শ্যুটার শুক্কুরের কাছে

জিজ্ঞাসাবাদের তথ্য জানিয়ে তিনি বলেন, জিজ্ঞাসাবাদে প্রাপ্ত তথ্য অনুযায়ী তার ভাড়া ফ্ল্যাটে অভিযান চালানো হলেও সেখানে কাউকে পাওয়া যায়নি।

এদিকে, র‌্যাবের উপস্থিতি টের পেয়ে শুকুর হোসেন ওরফে শ্যুটার শুক্কুর আত্মগোপনের উদ্দেশে আট তলা ভবনের ছাদ থেকে পার্শ্ববর্তী ছয় তলা ভবনের ছাদে লাফ দেন। ছাদে অবস্থানরত র‌্যাব সদস্যরা তাৎক্ষণিকভাবে তাকে ঘিরে ফেলে এবং তল্লাশির সময় তার হাতে থাকা শপিং ব্যাগের ভেতর হতে লোড করা অবস্থায় দুটি বিদেশি পিস্তল, দুটি ম্যাগাজিন ও ১২ রাউন্ড গুলি উদ্ধার করে এবং তাকে র‌্যাব হেফাজতে নেওয়া হয়।

প্রাথমিক পর্যবেক্ষণের তথ্য জানিয়ে র‌্যাব ডিজি বলেন, উদ্ধার অস্ত্রগুলোর মধ্যে একটি পিস্তল পুলিশের হারিয়ে যাওয়া অস্ত্র। যা তারা অবৈধভাবে সংগ্রহ করে নিজেদের হেফাজতে রেখেছিল। অস্ত্রটি শনাক্ত এড়াতে তারা এর সিরিয়াল নম্বর ঘষে ফেলা ও বাট পরিবর্তনের মতো চাতুরিপূর্ণ কাজ করে, যেন এটি পুলিশের লুট হওয়া অস্ত্র বলে চিহ্নিত না হয়।

জিজ্ঞাসাবাদে জানা যায়, আসামিরা শুধু মাদক কারবার ও অস্ত্র ব্যবসার সঙ্গেই জড়িত নয়, তাদের বিরুদ্ধে রাজধানীর বিভিন্ন থানায় একাধিক মামলা রয়েছে। তারা একটি সংঘবদ্ধ অপরাধী চক্রের সক্রিয় সদস্য। যারা দীর্ঘদিন ধরে সন্ত্রাস, চাঁদাবাজি, জমি দখল ও অস্ত্র ব্যবসার মতো অপরাধমূলক কার্যক্রমে জড়িত এবং অস্ত্র প্রদর্শনের মাধ্যমে সাধারণ মানুষের মধ্যে ভীতি সৃষ্টি করতো।

গ্রেফতার আসামি শুকুর হোসেন ওরফে শ্যুটার শুক্কুরের বিরুদ্ধে হত্যা, চাঁদাবাজি ও মাদক সংক্রান্ত মোট চারটি মামলা রয়েছে এবং আগেও চারবার গ্রেফতার হয়েছিল। আরেক আসামি বাচ্চু মিয়ার বিরুদ্ধেও মাদক সংক্রান্ত দুটি মামলা রয়েছে।

এসময় ৫ আগস্ট পরবর্তী সময়ে থানা থেকে লুট হওয়া অস্ত্র উদ্ধারের পাশাপাশি অবৈধ অস্ত্রের উৎস ও ব্যবহারকারীদের চিহ্নিত করে আইনের আওতায় আনতে র‌্যাবের তৎপরতা অব্যাহত রয়েছে বলেও জানানো হয়।

গ্রেফতার আসামিদের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ কার্যক্রম প্রক্রিয়াধীন বলেও জানান এ কর্মকর্তা।

কেআর/এমকেআর/জিকেএস

Read Entire Article