শারদীয় দুর্গাপূজা আর সাপ্তাহিক বন্ধের লম্বা ছুটিতে এরইমধ্যে বুকিং হয়েছে পর্যটন কেন্দ্র কুয়াকাটার বেশিরভাগ হোটেল-মোটেল। আগামী ১ অক্টোবর থেকে ৩ অক্টোবর পর্যন্ত আবাসিক হোটেল-মোটেলগুলোর ৯৫ শতাংশ রুম বুকড হলেও ৩০ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত ৫০-৬০ শতাংশ রুম বুকিং হয়েছে। নতুন মৌসুমের শুরুতেই লম্বা ছুটিকে কেন্দ্র করে সুসজ্জিত হচ্ছে পর্যটন কেন্দ্র কুয়াকাটা।
শুক্রবার (৯ অক্টোবর) কুয়াকাটার আবাসিক হোটেল-মোটেল ও রিসোর্ট পরিচালকদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, কুয়াকাটায় থাকা প্রায় দুইশর বেশি প্রথম শ্রেণির আবাসিক হোটেল-মোটেলে অক্টোবরের ১-৩ তারিখের রুমগুলো শতভাগ বুকিং হয়েছে। দ্বিতীয় ও তৃতীয় শ্রেণির হোটেলগুলোতে এখনো পর্যন্ত ৭০-৮০ শতাংশ হোটেল বুকিং হলেও পুরোপুরি বুকিং হওয়ার আশায় তারা।
কুয়াকাটা হোটেল-মোটেল ওনার্স অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি এম. এ মোতালেব শরীফ জানান, চলতি সপ্তাহে দুর্গাপূজা আর সাপ্তাহিক ছুটি মিলে লম্বা ছুটিকে কাজে লাগাতে এরইমধ্যে কুয়াকাটায় থাকা প্রথম শ্রেণির আবাসিক হোটেলের প্রায় শতভাগ আর ছোট-বড় আবাসিক হোটেলের প্রায় ৭০ শতাংশ হোটেল কক্ষ অগ্রিম বুকিং হয়েছে। আগত পর্যটকদের বরণে এরইমধ্যে প্রস্তুত হোটেল, রেস্টুরেন্ট, ফিসফ্রাই, আচার ঝিনুক, বারমিজ ব্যবসায়ীসহ মোট ১৬টি পেশার প্রায় ৫ হাজার শ্রমিক। দেশের পরিস্থিতি স্বাভাবিক না হওয়া পর্যন্ত পুরোপুরি পর্যটন মৌসুমের যে একটি স্বাভাবিক অবস্থা সেটি ফিরে আসবে না।
সিকদার রিসোর্ট অ্যান্ড বিলাসের এজিএম আল-আমিন উজ্জ্বল বলেন, আগামী এক অক্টোবর থেকে তিন অক্টোবর পর্যন্ত আমার রিসোর্ট শতভাগ বুকড হয়েছে। এছাড়া ২৮-৩০ সেপ্টেম্বর এবং ৪-৬ অক্টোবরের জন্য ৫০-৬০ শতাংশ বুকড। এখনো অনেক ফোন আসছে, কিন্তু আমরা রুম দিতে পারছি না। এই বন্ধকে কেন্দ্র করে কুয়াকাটায় একটা পরিবর্তন আসবে বলে আমরা আশা করতে পারি।
আরও পড়ুন-
তহবিল সংকটে কক্সবাজার সৈকতে বন্ধ হচ্ছে লাইফগার্ড সেবা
লুট হওয়া সাদা পাথর নিজ খরচে ফিরিয়ে দিতে আলটিমেটাম
বেহাল সড়কে অতিষ্ঠ জীবন, বিপর্যস্ত চিকিৎসা ও চিংড়ি-পর্যটন ব্যবসা
দেশের একমাত্র সমুদ্র সৈকত যেখানে দাঁড়িয়ে সূর্যোদয় আর সূর্যাস্ত উপভোগ করতে সারা বছর দেশ-বিদেশের পর্যটকরা বেড়াতে আসেন। বছরের অক্টোবর থেকে এপ্রিল পর্যন্ত পর্যটন মৌসুম হিসেবে ধরা হলেও পদ্মা সেতু চালুর পর সারা বছরই পর্যটকে মুখর থাকে কুয়াকাটা। তবে এবার পূজার বন্ধকে কেন্দ্র করে রেকর্ড সংখ্যক পর্যটকদের দেখা মিলবে বলে আশাবাদী পর্যটক ব্যবসায়ীরা। কুয়াকাটা সমুদ্র সৈকতকে কেন্দ্র করে গড়ে ওঠা রাখাইন মার্কেট, শুঁটকি মার্কেট, ঝিনুক, আচার, চটপটি, রাখাইন পল্লী, মিশ্রিপাড়া, ইলিশ পার্ক, গঙ্গামতি, লেম্বুর বনসহ পর্যটন স্পটের ব্যবসায়ীরা তাদের প্রস্তুতি সেরেছেন।
হোটেল ডি’মোর কুয়াকাটা পরিচালক জয়নুল আবেদিন জুয়েল বলেন, পর্যটন মৌসুমের শুরুতেই পূজার বন্ধটি হওয়ায় আমরা ব্যবসায়ীরা অনেক উচ্ছ্বসিত। আশা করি এই বন্ধের পরবর্তী সময়গুলোতেও পর্যটকদের চাপ বাড়তে থাকবে। সঙ্গে সঙ্গে পর্যটকের এই এলাকায় বিনিয়োগও বাড়বে।
ট্যুরিস্ট পুলিশ কুয়াকাটা রিজিয়নের সহকারী পুলিশ সুপার হাবিবুর রহমান বলেন, লম্বা এই ছুটিকে কাজে লাগিয়ে কুয়াকাটায় বাড়তি চাপ সামলাতে ট্যুরিস্ট পুলিশ, উপজেলা প্রশাসন, থানা পুলিশের সম্মিলিতভাবে বাড়তি প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে।
আসাদুজ্জামান মিরাজ/এফএ/এমএস