পেরুতে প্রায় সাড়ে তিন হাজার বছরের পুরোনো একটি প্রাচীন শহরের সন্ধান পেয়েছেন প্রত্নতত্ত্ববিদরা। দেশটির হুয়াওরা প্রদেশে অবস্থিত শহরটির নাম ‘পেনিয়কো’। রাজধানী লিমার উত্তরে অবস্থিত এ শহর এক সময় ছিল বাণিজ্যের গুরুত্বপূর্ণ কেন্দ্র।
আট বছরব্যাপী খনন ও সংরক্ষণের পর গত সপ্তাহে পেরুর সংস্কৃতি মন্ত্রণালয় প্রথমবারের মতো শহরটি জনসাধারণের জন্য উন্মুক্ত করে।
প্রধান গবেষক ও কারাল প্রত্নতাত্ত্বিক অঞ্চলের পরিচালক রুথ শাদি জানান, পেনিয়কো শহরটি খ্রিষ্টপূর্ব ১৮০০ সালের দিকে প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল। এটি কারাল সভ্যতার সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য অনুসরণ করে গড়ে ওঠে। সমুদ্রপৃষ্ঠ থেকে প্রায় ৬০০ মিটার উচ্চতায় নির্মিত শহরটি উপকূলীয় সূপে উপত্যকার জনগোষ্ঠীকে আন্দিজ পাহাড় ও আমাজনের অভ্যন্তরের সঙ্গে সংযুক্ত করতো।
আরও পড়ুন>>
- ১৭০ বছর আগে ডুবে যাওয়া জাহাজের সন্ধান
- টাইটানিকে বসে লেখা চিঠি বিক্রি হলো প্রায় ৫ কোটি টাকায়
- বাগানে পাওয়া ভাঙা ফুলদানি বিক্রি হলো ৮০ লাখ টাকায়
খননে ১৮টি স্থাপনা শনাক্ত করেছেন গবেষকরা, যার মধ্যে রয়েছে আবাসিক এলাকা ও বিশালাকৃতির গণ-ভবন। এর মধ্যে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ একটি ভবনের নাম ‘বি১-বি৩’। এখানে মাটির তৈরি ভাস্কর্য, ধর্মীয় আচরণবিধির সরঞ্জাম এবং শঙ্খ বাজানোর সরঞ্জাম 'পুতুতু' আবিষ্কৃত হয়েছে। এক সময় এই পুতুতুর ধ্বনি প্রাচীন আন্দিজ অঞ্চলজুড়ে প্রতিধ্বনিত হতো, যাতে মানুষ জড়ো হতো এবং দেবতাদের আহ্বান জানানো হতো।
গবেষকদের মতে, আমেরিকায় প্রাচীনতম সভ্যতা কারালের পতনের পরই গুরুত্ব পায় পেনিয়কো শহরটি। এর খ্যাতি মূলত ‘হেমাটাইট’ নামের এক ধরনের লাল রঙের খনিজ বস্তুর ব্যবসাকে ঘিরে গড়ে ওঠে, যা আন্দিজ সংস্কৃতিতে প্রতীকী তাৎপর্য বহন করে।
এখন পেনিয়কো শহরটি পর্যটকদের জন্য উন্মুক্ত। এখানে রয়েছে আধুনিক ব্যাখ্যামূলক কেন্দ্র, সংবর্ধনা এলাকা এবং সংরক্ষিত ধ্বংসাবশেষ ঘুরে দেখার পথ।
এই উদ্বোধনের অংশ হিসেবে আগামী শনিবার প্রথমবারের মতো আয়োজন করা হবে ‘পেনিয়কো রাইমি’ উৎসব। সেখানে প্রথাগত রীতি অনুসারে শিল্পকলা ও দেবী পাচামামাকে সম্মান জানিয়ে উৎসব উদযাপন করা হবে।
সূত্র: সিএনএন, দ্য ইন্ডিপেনডেন্ট
কেএএ/