পোল্যান্ডের আকাশসীমায় রুশ ড্রোন অনুপ্রবেশের ঘটনায় ইউরোপীয় নেতারা তীব্র প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন। অনেকে একে ন্যাটোর নিরাপত্তার জন্য সরাসরি হুমকি হিসেবে আখ্যা দিয়েছেন।
ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী কিয়ার স্টারমার এক বিবৃতিতে বলেন, ইউক্রেনে বর্বরোচিত হামলা এবং পোল্যান্ড ও ন্যাটোর আকাশসীমায় রাশিয়ার নজিরবিহীন অনুপ্রবেশ ভয়ংকর ও অগ্রহণযোগ্য। তিনি আরও বলেন, এটি ছিল রাশিয়ার অত্যন্ত বেপরোয়া পদক্ষেপ, যা প্রেসিডেন্ট পুতিনের শান্তির প্রতি স্পষ্ট অবহেলার আরেকটি প্রমাণ। ইউক্রেনের সাধারণ মানুষ প্রতিদিন যে অবিরাম বোমাবর্ষণের শিকার হচ্ছেন, সেটিই আবার স্মরণ করিয়ে দিল।
স্টারমার জানান, তিনি পোল্যান্ডের প্রধানমন্ত্রী ডোনাল্ড টাস্কের সঙ্গে যোগাযোগ করেছেন ও যতক্ষণ না একটি ন্যায্য ও স্থায়ী শান্তি প্রতিষ্ঠিত হয়, ততক্ষণ পর্যন্ত যুক্তরাজ্য চাপ বাড়াতে থাকবে।
ফরাসি প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল ম্যাক্রোঁ এই অনুপ্রবেশকে ‘সম্পূর্ণ অগ্রহণযোগ্য’ বলে বর্ণনা করেছেন। তিনি জানিয়েছেন, শিগগিরই ন্যাটোর মহাসচিব মার্ক রুটের সঙ্গে এ বিষয়ে বৈঠক করবেন।
ইউরোপীয় কাউন্সিলের প্রেসিডেন্ট আন্তোনিও কস্তা বলেছেন, রাশিয়ার ‘বেপরোয়া’ কর্মকাণ্ডের পর ইউরোপ তার প্রতিরক্ষা বিনিয়োগ আরও বাড়াচ্ছে। তার ভাষায়, ইউরোপে শান্তি ও নিরাপত্তা কখনোই নিশ্চিত ধরে নেওয়া যায় না।
হাঙ্গেরির প্রধানমন্ত্রী ভিক্টর অরবানও একে ‘অগ্রহণযোগ্য’ আখ্যা দিয়েছেন। উল্লেখযোগ্য বিষয় হলো, ২০২২ সালে ইউক্রেনে পূর্ণমাত্রার আগ্রাসনের পরও অরবানই একমাত্র ইইউ নেতা যিনি মস্কোর সঙ্গে ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক বজায় রেখেছেন।
চেক প্রধানমন্ত্রী পেত্র ফিয়ালা বলেছেন, গত রাতের রুশ ড্রোন হামলা কাকতালীয়- এমনটা বিশ্বাস করা কঠিন। রাশিয়া পদ্ধতিগতভাবে যাচাই করছে, কতদূর পর্যন্ত সে যেতে পারে।
ফিনল্যান্ডের প্রেসিডেন্ট আলেকজান্ডার স্টুব স্পষ্টভাবে অভিযোগ করেছেন, রাশিয়া উত্তেজনা বাড়াতে চাইছে ও পোল্যান্ডের আকাশসীমা লঙ্ঘনের পূর্ণ দায় রাশিয়ার।
লাটভিয়ার প্রেসিডেন্ট এডগারস রিনকেভিকসও ইউক্রেনের প্রতি পূর্ণ সমর্থন ও সংহতি প্রকাশ করে বলেছেন, মিত্রদের অবশ্যই একসঙ্গে কাজ করতে হবে।
সব মিলিয়ে, রাশিয়ার এই ড্রোন অনুপ্রবেশ শুধু পোল্যান্ড নয়, পুরো ইউরোপের নিরাপত্তা ব্যবস্থাকে নতুন করে চাপে ফেলেছে। ন্যাটো ও ইইউ নেতাদের প্রতিক্রিয়ায় স্পষ্ট হয়ে উঠেছে যে তারা মস্কোর বিরুদ্ধে আরও কঠোর পদক্ষেপে প্রস্তুতি নিচ্ছেন।
সূত্র: বিবিসি
এসএএইচ