পশ্চিমা পরাশক্তিকে চোখ রাঙানোর জন্য নিজের সামর্থ্যের সবটুকু দিয়ে চেষ্টা করে যাচ্ছে মধ্যপ্রাচ্যের পরাশক্তি ইরান। সম্প্রতি সিরিয়ায় মারাত্মক পর্যুদস্ত হওয়ার পরও নিজেদের সামরিক লক্ষ্য থেকে বিন্দুমাত্র বিচ্যুত হয়নি শিয়া সংখ্যাগরিষ্ঠ দেশটি। এর মধ্যেই সামনে এল ইরানের সামরিক সাফল্যের এক চাঞ্চল্যকর সফলতার গল্প। বলা হচ্ছে ইরানের এই সফলতা মধ্যপ্রাচ্যে ইসরায়েল ও যুক্তরাষ্ট্রকে অনেকটাই হুমকিতে ফেলবে। এমনকি সামনের দিনগুলোতে পশ্চিমা আগ্রাসন ও নজরদারির জন্য বড় হুমকি হয়ে দেখা দিবে ইরানের নতুন এই সামরিক সাফল্য।
গণমাধ্যমের খবরে বলা হয়, সম্প্রতি পারস্য উপসাগরে ইরানের নৌবন্দর, বন্দর আব্বাসের উপকূলে ইরানের নতুন এক ড্রোনবাহী রণতরী দেখা গেছে। রণতরীটি আগে একটি পণ্যবাহী কন্টেইনার জাহাজ ছিল। শুধু ড্রোনের জন্যই একটি রণতরি সাগরে ভাসিয়েছে দেশটি। তেহরান এই নিয়ে আগে থেকে কোন ঢাকঢোল না পেটালেও কৃত্রিম উপগ্রহ ম্যাক্সারের লেন্সে ধরা পড়েছে সেই দৃশ্য।
একই ধরনের তিনটি রণতরি তৈরি করেছে ইরান। এর মধ্যে প্রথমটি হলো ‘শহীদ বাঘেরি’। আর, দ্বিতীয়টি ‘শহীদ রৌদাকি’এবং তৃতীয়টি ‘শহীদ মাহদাভী’। স্যাটেলাইটের মাধ্যমে তোলা ছবিতে তিনটি জাহাজই পারস্য উপসাগরে দৃশ্যমান।
‘শহীদ বাঘেরি’-কে বলা হচ্ছে ‘ফরওয়ার্ড বেস শিপ’। এতেই বোঝা যায় প্রযুক্তির দিক থেকে ইরান কতোটা এগিয়েছে। এই রণতরীতে এমন একটি কোণ রয়েছে যেখান থেকে ড্রোনটি গোপনে উড়তে পারে। এর রানওয়ে খুবই সংক্ষিপ্ত, শুধু ড্রোনের জন্য তৈরি করা। এর উপরিভাগে একটি স্কি-জাম্প রয়েছে। এই প্রযুক্তিটি বিমানবাহী রণতরির মতো দেখতে হলেও ছোট রানওয়ে দেখে ধারণা করা যায়, এটি শুধু ড্রোন ও হেলিকপ্টার পরিচালনার জন্য ব্যবহৃত হতে পারে। নতুন তিন ড্রোনবাহী রণতরী মাধ্যমে ইরানি নৌবাহিনী মনুষ্যবিহীন আকাশযুদ্ধে আরও এগিয়ে গেল।
বিভিন্ন সূত্র জানায়, চলতি বছরের নভেম্বরের শেষের দিকে ইরান শিপইয়ার্ড অ্যান্ড অফশোর ইন্ডাস্ট্রিজের শিপইয়ার্ড থেকে এটি বের করা হয়, তারপর থেকে এটি সমুদ্রে ভ্রমণ করছে। সম্ভবত এর ট্রায়াল চলছে। পশ্চিমা নিষেধাজ্ঞার বহু বছর পরও ইরান নিজস্ব সশস্ত্র ড্রোন বহর তৈরি করেছে। এই ড্রোন অঞ্চলটির বিভিন্ন যুদ্ধক্ষেত্র এবং ইউরোপেও ছড়িয়ে পড়েছে। ইউক্রেনের বিরুদ্ধে রাশিয়ানরা ব্যাপকভাবে ইরানের শাহেদ ড্রোন ব্যবহার করছে।