তাদের দু’জনের নামের পাশে জ্বলজ্বল করছে দুটি ভিন্ন সাফল্য। আমিনুল ইসলাম বুলবুল দেশের টেস্ট ক্রিকেট ইতিহাসের প্রথম সেঞ্চুরিয়ান (২০০০ সালের নভেম্বরে ঢাকা স্টেডিয়ামে ভারতের বিপক্ষে ১৪৫) আর মেহরাব হোসেন অপি ওয়ানডে ক্রিকেটে বাংলাদেশের প্রথম শতরানকারী (১৯৯৯ সালের ২৫ মার্চ ঢাকা স্টেডিয়ামে জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে ১১৬ বলে ১০১)।
আজ ২২ জুন তাদের দেখা হয়েছে রাজশাহী বিভাগীয় ক্রিকেট স্টেডিয়ামে। বাংলাদেশের টেস্ট ক্রিকেটের ২৫ বছর পূর্তি উপলক্ষে এরই মধ্যে দেশের বিভাগীয় শহরে বিসিবির উদ্যোগে চলছে বর্নাঢ্য আয়োজন।
রোববার সেই আয়োজনের পর্বটা হলো রাজশাহী স্টেডিয়ামে। আর সেখানেই আমিনুল ইসলাম বুলবুল আর মেহরাব হোসেন অপির এক অন্যরকম কথোপকোথন পর্ব অনুষ্ঠিত হলো।
লাল ও সাদা বলের ক্রিকেটে দেশের দুই প্রথম সেঞ্চুরিয়ান তারা, কে কোন শতরানকে কিভাবে মূল্যায়ন করেন? কোনটা বড়? কে কার সেঞ্চুরিটাকে এগিয়ে রাখতে চান?
বিসিবির নতুন উপদেষ্টা সৈয়দ আবিদ হোসেন সামি বিসিবি প্রেসিডেন্ট ও প্রথম টেস্ট সেঞ্চুরিয়ান আমিনুল ইসলাম এবং প্রথম ওডিআই হান্ড্রেড হাকানো মেহরাব হোসেন অপিকে জিজ্ঞেস করলেন, তাদের দুজনার মাঝে কখনো কি এ নিয়ে বিতর্ক হয়?
বুলবুলের জবাব, ‘না বিতর্ক হয় না কখনো। প্রথম সব কিছুই প্রেশার্স। এখন যদি কেউ টি-টোয়েন্টি ক্রিকেট ফলো করে তারা হয়ত বলবে ৫০০ বল খেলেছে আর ৮ ঘণ্টা ব্যাটিং করে সেঞ্চুরি করেছে, এটা কোন ইনিংস হলো? আবার অপির যে ইনিংস ছিল, সেটা প্রেশার্স এই কারণে যে এখন যে টি-টোয়েন্টি ক্রিকেট হয়, তার সাথে ওয়ানডের বেশ খানিকটা মিল আছে।’
‘টেস্ট ক্রিকেট ইজ টোটালি ডিফারেন্ট ক্রিকেট। কখনো তুলনা করি না। আমরা দুজনই সৌভাগ্যবান যে, দেশের হয়ে লাল ও সাদা বলে প্রথম সেঞ্চুরি করতে পেরেছিলাম বাংলাদেশের জন্য।’
অপির কাছে প্রশ্ন ছিল তিনি কোন সেঞ্চুরিকে এগিয়ে রাখতে চান। উত্তরে দেশের প্রথম ওয়ানডে সেঞ্চুরিয়ানের জবাব, ‘ক্রিকেট খেলা যখন শুরু করেছিলাম তখন লাল বলেই শুরু করেছিলাম। দুটিই প্রেশার্স। তারপরও আমি বলবো, রেড বলেরটাই প্রেশার্স। ক্রিকেট খেলাও যখন শুরু হয়েছিল, তখন রেড বলেই শুরু হয়েছিল। সাদা বলেরটা শুরু হয়েছিল অনেক পরে। খেলা শিখেছি রেড বলে। বুলবুল ভাইয়েরটা এগিয়ে রাখছি। রেড বল ডিফারেন্ট বল গেম। আমরা খেলা শিখেছি রেড বলে। হোয়াইট ড্রেসে। তাই রেড বলকেই আমি এগিয়ে রাখবো।’
কিন্তু আমিনুল ইসলাম বুলবুল তাৎক্ষণিকভাবে বলে ওঠেন, ‘মেহরাব হোসেন অপির কৃতিত্বও অনেক বড়। কারণ অপিই আমাদের দেখিয়ে দিয়েছে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে কিভাবে সেঞ্চুরি করতে হয়। সে পাইওনিয়র। তারপর আমি টেস্ট সেঞ্চুরি করেছি। তবে আমরা সব সময় মেহরাব হোসেন অপিকে মনে রাখবো, এই কারণে যে সেই প্রথম সেঞ্চুরিয়ান। সেই পাইওনিয়র।’
বলে রাখা ভাল, বুলবুলের প্রথম টেস্ট হান্ড্রেডের ২০ মাস আগে সাদা বলে সেঞ্চুরি করেছিলেন অপি। আমিনুল ইসলাম বুলবুল যে টেস্টে ভারতের সাথে ১৪৫ রানের দারুণ ইনিংস খেলে ইতিহাসের পাতায় নিজের নাম লিখে রাখেন, সেই ইনিংসে মেহরাব অপির স্কোর ছিল ৪। আর মেহরাব অপি যখন সেঞ্চুরি করেন সেদিন বুলবুল আউটি হয়েছিলেন ১০ রানে। মেহরাব হোসেন অপির ব্যাখ্যা, এটা কাকতালীয়!
এআরবি/আইএইচএস