প্রথম মুসলিম হিসেবে ইংল্যান্ড ফুটবল দলে অভিষেকের পথে স্পেন্স

2 hours ago 4

প্রথম মুসলিম হিসেবে ইংল্যান্ড জাতীয় ফুটবল দলে অভিষেক হওয়ার পথে রয়েছেন টটেনহ্যাম হটস্পারের ফুল-ব্যাক ডিজেড স্পেন্স। অপ্রত্যাশিতভাবে ইংলিশ দলে ডাক পেয়েছেন একই সঙ্গে সম্মানিত এবং বিস্মিত হয়েছেন তিনি।

কোচ থমাস টুখেলের স্কোয়াডে নতুন মুখদের একজন হিসেবে ডাক পেয়েছেন ২৫ বছর বয়সী স্পেন্স। ২০২৬ বিশ্বকাপের বাছাইপর্বে আন্দোরা (৬ সেপ্টেম্বর) ও সার্বিয়ার (১০ সেপ্টেম্বর) বিপক্ষে ম্যাচের জন্য তাকে দলে রেখেছেন ইংলিশ কোচ।

জাতীয় দলে ডাক পেয়ে স্পেন্স অবাক হয়েছেন এ কারণে যে, তিনি আগে কখনো ইংল্যান্ড কোচের সঙ্গে কথা বলেননি। আর বিস্মিত হয়েছেন শুনে যে, তিনিই হতে যাচ্ছেন জাতীয় দলের হয়ে খেলা প্রথম মুসলিম ফুটবলার।

স্পেন্স বলেন, ‘আমি দেখেছি সেটা। এটা এক আশীর্বাদ, অসাধারণ ব্যাপার। আসলে এমন কিছু হবে তা ভেবে অবাক হয়েছি। প্রথমবার- এটা সত্যিই অসাধারণ। বলার মতো ভাষা খুঁজে পাচ্ছি না।’

প্রথম মুসলিম হিসেবে জাতীয় দলের হয়ে নামার কারণে কোনো চাপ অনুভব করছেন কিনা— এমন প্রশ্নে তিনি বলেন, ‘হয়তো, আবার হয়তো নয়ও। আমি আসলে চাপ অনুভব করি না। আমি শুধু হাসিমুখে ফুটবল খেলি, আনন্দে থাকি, বাকিটা নিজে থেকেই হয়ে যাবে।’

স্পেন্সের ধর্মীয় বিশ্বাস স্পেন্সের পরিচয়ের একটি বড় অংশ, যা তিনি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমেও প্রায়ই উল্লেখ করেন। তিনি বলেন, ‘প্রথমেই বলি, আল্লাহ মহান। আমি নিয়মিত নামাজ পড়ি, আল্লাহর কাছে কৃতজ্ঞতা জানাই। জীবনের সবচেয়ে কঠিন, অন্ধকার সময়গুলোতে আমি সবসময় বিশ্বাস করেছি, আল্লাহ আমার পাশে ছিলেন। আবার যখন জিতি, ভালো সময় কাটাই, তখনও আমি আল্লাহর নাম প্রচার করি। কারণ তিনি সবসময়ই আমার সঙ্গে ছিলেন। আমার বিশ্বাস আমার জীবনের একটি বড় অংশ।’

এই বিশ্বাসই স্পেন্সকে ক্যারিয়ারের সবচেয়ে বড় ধাক্কা সামলে উঠতে সাহায্য করেছে। ২০২২ সালে নটিংহ্যাম ফরেস্টকে ইংলিশ প্রিমিয়ার লিগে প্রমোশন করিয়ে দেওয়ার ঠিক পরেই টটেনহ্যাম তাকে কিনেছিল। কিন্তু কোচ আন্তোনিও কন্তে প্রকাশ্যে তাকে ‘ক্লাব সাইনিং’ বলে সমালোচনা করেন।

স্পেন্স বলেন, ‘ফরেস্টের হয়ে ভালো খেললাম, দলকে প্রিমিয়ার লিগে তুললাম। টটেনহ্যামে সাইন করতে যাচ্ছি— আমি ভীষণ উচ্ছ্বসিত। কিন্তু সেসময় এমন মন্তব্য শোনা মোটেও ভালো লাগেনি। এতে আত্মবিশ্বাসে আঘাত লাগে। তবে আমি একজন যোদ্ধা, তাই যা-ই করি না কেন, সেরা দেওয়ার চেষ্টা করি।’

এরপর স্পেন্স ধারে খেলেছেন রেন, লিডস এবং জেনোয়ার হয়ে। সবসময় মনে রেখেছেন- যদি নিজেকে বিশ্বাস করো এবং আল্লাহর উপর ভরসা রাখো, সবকিছু একসময় ঠিক হয়ে যাবে।

অবশেষে ২০২৪ সালের ডিসেম্বরে স্পার্সের হয়ে পূর্ণাঙ্গ অভিষেক হয় স্পেন্সের, যা ছিল ক্যারিয়ারের বাঁকবদল। সেই মৌসুম শেষে তিনি ইউরোপা লিগ জেতার গৌরবও অর্জন করেন।

সমালোচনা, ব্যর্থতা আর দীর্ঘ পথ ঘুরে এসে ইংল্যান্ড দলে জায়গা পাওয়ার লড়াইয়ে স্পেন্সের গল্প এখন অনেকের জন্য প্রেরণা। তার ভাষায়, ‘আমি যদি পারি, তাহলে তুমিও পারবে। শুধু মুসলিম শিশু নয়, যেকোনো ধর্মের, যেকোনো বাচ্চা; মন থেকে চেষ্টা করলে তুমি তা অর্জন করতে পারবে।’

এমএইচ/

Read Entire Article