প্রধান উপদেষ্টাকে স্মারকলিপি দিতে যমুনায় যাচ্ছেন কুয়েট শিক্ষার্থীরা
ছয় দফা দাবিতে আন্দোলন চালিয়ে যাওয়া খুলনা প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (কুয়েট) সাধারণ শিক্ষার্থীরা এবার প্রধান উপদেষ্টার কাছে স্মারকলিপি দেওয়ার জন্য ঢাকায় যাচ্ছেন।
আগামীকাল রোববার (২৩ ফেব্রুয়ারি) ভোর সাড়ে ৬টায় কুয়েটের ছাত্রকল্যাণ ভবনের সামনে সংবাদ সম্মেলন শেষে সেখান থেকে ঢাকায় প্রধান উপদেষ্টার সরকারি বাসভবন যমুনার উদ্দেশে যাত্রা শুরু করবেন তারা।
শনিবার (২২ ফেব্রুয়ারি) ভিসির পক্ষে দাঁড়িয়ে কুয়েটের শিক্ষক সমিতির পক্ষ থেকে পাল্টা বিবৃতি দেওয়ায় শিক্ষার্থীরা এমন সিদ্ধান্ত নিয়েছেন বলে জানা গেছে। এদিকে ২৪ ঘণ্টার বেশি সময় ধরে তালা ঝুলছে ভিসির বাসভবনে। ভিসি একদিনের ছুটি নিয়ে ঢাকায় গেলেও তিন দিনের মাথায়ও ফিরে না আসায় সৃষ্টি হয়েছে ধূম্রজাল।
কুয়েটের সাধারণ শিক্ষার্থীদের পক্ষ থেকে রাহাতুল ইসলাম বলেন, আমরা কুয়েটের সাধারণ শিক্ষার্থীরা ক্যাম্পাসে রাজনীতি চাইনি, এটাই আমাদের অপরাধ। ক্যাম্পাসে ভিসিকে লাঞ্ছিত করার ঘটনা ঘটেনি, অথচ পরিকল্পিতভাবে শিক্ষার্থীদের বিরুদ্ধে অপপ্রচার চালানো হচ্ছে। আমরা রাজনীতিমুক্ত ক্যাম্পাস গড়তে প্রধান উপদেষ্টার কাছে স্মারকলিপি দিতে যাব। রোববার সকালে কুয়েটের সর্বশেষ অবস্থা সম্পর্কে প্রেস ব্রিফিং করে আমরা ঢাকায় প্রধান উপদেষ্টার বাসভবন যমুনার উদ্দেশে যাত্রা শুরু করব।
এদিকে কুয়েটের সংঘর্ষে ঘটনায় বিশ্ববিদ্যালয়টির শিক্ষক সমিতি এক বিবৃতিতে কিছু শিক্ষার্থী কর্তৃক ভাইস-চ্যান্সেলরসহ কয়েকজন শিক্ষককে শারীরিকভাবে লাঞ্ছিত ও শিক্ষকদের সঙ্গে অশোভন আচরণের ঘটনায় গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছে এবং এ ধরনের ঘটনার তীব্র নিন্দা জানিয়েছে। সমিতির সভাপতি অধ্যাপক ড. মো. সাইদুর রহমান ও সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক ড. মো. ফারুক হোসেন স্বাক্ষরিত সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে উল্লেখ করা হয়, ১৮ ফেব্রুয়ারি কুয়েট ক্যাম্পাসে বহিরাগত সন্ত্রাসী কর্তৃক ধারালো অস্ত্র নিয়ে ক্যাম্পাসে ঢুকে শিক্ষক ও শিক্ষার্থীদের আহত করার ঘটনায় শিক্ষক সমিতি তীব্র নিন্দা ও ক্ষোভ প্রকাশ করছে।
এদিকে এক দিনের ছুটি নিয়ে ঢাকায় চিকিৎসার জন্য যাওয়া কুয়েটের ভিসি অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ মাছুদ বৃহস্পতিবার ঢাকায় গেলেও এখনো ফেরেননি। এরই মধ্যে গত শুক্রবার থেকে ভিসির বাসভবনে তালা দিয়ে দেন শিক্ষার্থীরা। শনিবার (২২ ফেব্রুয়ারি) রাত সাড়ে ৮টায় এ প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত সেখানে তালা ঝুলছিল।
শিক্ষার্থীদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, শিক্ষার্থীরা সব ধরনের রাজনীতি ও সাধারণ শিক্ষার্থীদের ওপর হামলার ঘটনায় কোনো ধরনের ব্যবস্থা না নেওয়ায় কুয়েটের বর্তমান প্রশাসনকে লাল কার্ড দেখিয়েছেন। ফলে এই ভিসিকে কুয়েটের সাধারণ শিক্ষার্থীরা আর গ্রহণ করবেন না।
বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপচার্য ড. মো. শরিফুল ইসলাম বলেন, ‘ভিসি স্যার চিকিৎসার জন্য বৃহস্পতিবার ঢাকায় গিয়েছেন। আমাকে চার্জ দিয়েছিলেন। বলেছিলেন, এসে জুমা পড়বেন ক্যাম্পাসে। কিন্তু আসেননি। শুনেছি, চিকিৎসার জন্য আরও কয়েকদিন ঢাকায় থাকবেন। এ অবস্থার মধ্যে কুয়েটের একাডেমিক ও প্রশাসনিকসহ ভিসি স্যারের বাসভবনেও শিক্ষার্থীরা তালা লাগিয়ে দেয়। আমরা আমাদের জায়গা থেকে শিক্ষার্থীদের সঙ্গে আলোচনার মাধ্যমে সমাধান করার চেষ্টা করছি।’