রাজনৈতিক দলের নামে বিদেশের মাটিতে প্রবাসীদের কেউ কেউ পরস্পরবিরোধী কর্মকাণ্ডে লিপ্ত বলে মন্তব্য করেছেন পররাষ্ট্র উপদেষ্টা তৌহিদ হোসেন। এসব প্রবাসীকে বাংলাদেশের রাজনীতির বদলে তারা যে দেশে অবস্থান করছেন, সেই দেশের স্থানীয় রাজনীতিতে যুক্ত হতে আহ্বান জানিয়েছেন তিনি।
শনিবার (১১ জানুয়ারি) রাজধানীর একটি হোটেলে ব্র্যান্ডিং বাংলাদেশ নিয়ে আয়োজিত এক সম্মেলনের উদ্বোধনী অধিবেশনে উপদেষ্টা এ মন্তব্য করেন। সেন্টার ফর এনআরবি এই সম্মেলনের আয়োজন করে।
দেশের এই শীর্ষ কূটনীতিক বলেন, ‘এই পরিবর্তন বিদেশে বাংলাদেশের ভাবমর্যাদা বাড়ানোর পাশাপাশি ব্যাপক প্রভাব তৈরিতে সহায়ক হবে।’
এ সময় ভারতীয় প্রবাসীদের উদহারণ টেনে উপদেষ্টা বলেন, ‘তারা যেসব দেশে থাকেন, সেখানকার গুরুত্বপূর্ণ পদপদবি নিয়ে সেই দেশের রাজনীতিতে যুক্ত হচ্ছেন। সেই সুবিধা তারা পাচ্ছেন।’
বাংলাদেশি প্রবাসীরা রাজনীতিবিমুখ, এমনটা মনে করে তিনি বলেন, ‘ভারতের প্রধানমন্ত্রী কোথাও গেলে সেখানে দুয়োধ্বনি দেওয়ার জন্য কেউ দাঁড়িয়ে থাকে না। আমাদের এখানে হয়। এটা চিরদিন হয়ে আসছে। এটা থেকে আমাদের বের হতে হবে। দ্বিতীয়ত, ভারতীয়রা পৃথিবীর অন্যান্য দেশে যেসব সুযোগ-সুবিধা পাচ্ছে, আমরা পাই না কেন? কারণ, আমরা স্থানীয় রাজনীতিতে জড়িত হই খুব কম।’
তৌহিদ হোসেন বলেন, ‘যুক্তরাষ্ট্রে নতুন সরকার গঠিত হতে যাচ্ছে, সেদিকে তাকান। কত ভারতীয় গুরুত্বপূর্ণ অবস্থানে চলে আসছেন। আমাদের ক্ষেত্রে কতটুকু হয়? বরং পাকিস্তানে কিছুটা হচ্ছে। বাংলাদেশিরা টাওয়ার হেমলেটসে কিছু হয়েছেন, যুক্তরাজ্যে কয়েকজন এমপি আছেন, এটা হলো বাংলাদেশের ব্র্যান্ডিংয়ের…। ব্র্যান্ডিংয়ের জন্য আমাদের অবশ্যই ভালো কাজ করতে হবে।’
বাংলাদেশের রাজনৈতিক দলগুলোর মতো প্রবাসীরাও পরস্পর শত্রুভাবাপন্ন উল্লেখ করে উপদেষ্টা বলেন, ‘এ রকম কি পৃথিবীর কোনো দেশের ক্ষেত্রে আপনারা দেখেছেন যে কেউ একজন দেশ থেকে যায়, আর তাকে ডিম ছোড়ার জন্য বা তার বিরুদ্ধে স্লোগান দেওয়ার জন্য বিরাটসংখ্যক মানুষ দাঁড়িয়ে আছে? ইস্যুভিত্তিক নয়, স্রেফ ব্যক্তি ও দলভিত্তিক যে প্রতিক্রিয়া হয়—এটা বিরাট ক্ষতি করছে আমাদের ইমেজের (ভাবমূর্তি) ক্ষেত্রে, আমাদের ব্র্যান্ডিংয়ের ক্ষেত্রে।’
এই চর্চা থেকে বেরিয়ে আসতে সবার প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন তৌহিদ হোসেন বলেন, ‘বাংলাদেশে কয়েকটি বড় রাজনৈতিক দল আছে। তারা হলো পৃথিবীর সবচেয়ে বড় রাজনৈতিক দল। কারণ, পৃথিবীর কোনো রাজনৈতিক দলের এত শাখা ও কর্মী নেই, বিশেষ করে আওয়ামী লীগ, বিএনপি ও জামায়াত, ক্ষেত্রবিশেষে জাতীয় পার্টির সারা বিশ্বে যত শাখা আছে।’