কুমিল্লার চৌদ্দগ্রামে অনৈতিক সম্পর্কের অভিযোগে প্রবাসীর স্ত্রীকে হাত বেঁধে মারধরের অভিযোগ উঠেছে বজলুর রহমান নামের এক ইউপি সদস্যের বিরুদ্ধে।
মঙ্গলবার (২১ অক্টোবর) রাতে মারধরের একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়লে সমালোচনা শুরু হয়। এর আগে গত ১৬ অক্টোবর রাতে মারধরের ঘটনাটি ঘটে। বজলুর রহমান চৌদ্দগ্রাম উপজেলার শ্রীপুর ইউপির সদস্য।
ছড়িয়ে পড়া ভিডিওতে দেখা গেছে, দুই হাত বেঁধে প্রবাসীর স্ত্রীকে লাঠি দিয়ে পেটাচ্ছেন ইউপি সদস্য বজলুর রহমান। একপর্যায়ের গৃহবধূর চুল ধরে টানাহেঁচড়াও করা হয়। এ ছাড়া তাকে বিভিন্নভাবে গালমন্দ করা হয়। এ সময় অনৈতিক সম্পর্কের অভিযোগে আটক হওয়া ওই ব্যক্তি পাশেই বসে ছিলেন।
জানা গেছে, অনৈতিক সম্পর্কের অভিযোগে ১৬ অক্টোবর রাত ১টার দিকে ওই প্রবাসীর ঘরে তার স্ত্রী ও বিল্লাল হোসেনকে আটক করেন স্থানীয়রা। এরপর বিল্লালকে স্থানীয় লোকজন মারধর করে আটকে রাখেন। একপর্যায়ে সেখানে উপস্থিত হয়ে ইউপি সদস্য বজলুর রহমান ওই প্রবাসীর স্ত্রীর হাত বেঁধে পেটান। পরদিন এ ঘটনায় গ্রামবাসীকে নিয়ে সালিশ বৈঠক বসান তিনি।
আরও জানা গেছে, সালিশে ওই নারীকে প্রথমে প্রবাসীর সঙ্গে ‘বিবাহবিচ্ছেদ’ ঘটানো হয়। পরে পাঁচ লাখ টাকা দেনমোহরে আটক হওয়া বিল্লালের সঙ্গে তাকে বিয়ে দেওয়া হয়।
ইউপি সদস্য বজলুর রহমান বলেন, ওই নারী সম্পর্কে আমার ভাতিজার স্ত্রী। দুজনের সম্পর্ক দীর্ঘদিনের। গত ১৬ অক্টোবর রাতে গ্রামের লোকজন তাদের আটক করেন। রাত দেড়টার দিকে আমি ঘটনাস্থলে গিয়ে স্থানীয়দের মাঝে উত্তেজনা দেখতে পাই। লোকজন আটক হওয়া বিল্লালকে মারধর করেছে। আমি ঘটনাস্থলে যাওয়ার পর অনেকে বলেন, নারী-পুরুষ দুজনই অপরাধ করেছে, তাহলে একজনকে কেন মারা হয়েছে। পরে পরিস্থিতি শান্ত করতে আমি ভাতিজার স্ত্রীকে চিকন লাঠি দিয়ে কয়েকটি আঘাত করেছি। আমার প্রতিপক্ষের কেউ একজন ভিডিও করে ছড়িয়ে দিয়েছে।
তিনি আরও বলেন, ঘটনার পরদিন শুক্রবার সকালে গ্রামের প্রায় ৩০০ মানুষ সালিশে বসে। পরে উপস্থিত সবার ও নারীর স্বামীর সিদ্ধান্তে তাদের বিচ্ছেদ হয়। এরপর পাঁচ লাখ টাকা কাবিনে যার সঙ্গে আটক হয়েছে তার সঙ্গে বিয়ে দেওয়া হয়েছে।
চৌদ্দগ্রাম থানার ওসি হিলাল উদ্দিন আহমেদ বলেন, প্রবাসীর স্ত্রীকে নির্যাতনের ভিডিওটি নজরে এসেছে। ভুক্তভোগী নারী বা তার পক্ষে কেউ অভিযোগ করতে রাজি হচ্ছেন না। ঘটনায় জড়িত ইউপি সদস্য বজলুর রহমানকে আটকের চেষ্টা চলছে। এ বিষয়ে ব্যবস্থা গ্রহণে পুলিশ কাজ করছে।