প্রশাসনের ষড়যন্ত্রে জনের প্রার্থিতা বাতিল হয়েছে : সম্প্রীতির ঐক্য

5 hours ago 7
প্রশাসনের ষড়যন্ত্রে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় শিক্ষার্থী সংসদ (জাকসু) নির্বাচনের ভিপি প্রার্থী অমর্ত্য রায় জনের প্রার্থিতা বাতিল করা হয়েছে বলে অভিযোগ করেছেন ‘সম্প্রীতির ঐক্য’ প্যানেলের সদস্যরা। শনিবার (০৬ সেপ্টেম্বর) রাত সাড়ে নয়টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের বটতলায় এক সংবাদ সম্মেলন এ অভিযোগ করে তারা।  সংবাদ সম্মেলন লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন প্যানেলটির সাধারণ সম্পাদক (জিএস) শরণ এহসান। এ সময় তিনি বলেন, আজ বিকেলে নির্বাচন কমিশন ‘সম্প্রীতির ঐক্য’ প্যানেলের সহসভাপতি পদপ্রার্থী অমর্ত্য রায়ের প্রার্থীতা বাতিল করে একটি বিজ্ঞপ্তি জারি করে, যা সম্পূর্ণ অবৈধ এবং নিয়মবহির্ভূত। চূড়ান্ত প্রার্থী তালিকা প্রকাশের আট দিন পরে প্রার্থীতা বাতিলের সিদ্ধান্ত জাকসু নির্বাচনকে ঘিরে এক প্রকার ষড়যন্ত্রের আভাস দেয়। শরণ এহসান বলেন, খসড়া ভোটার তালিকা প্রকাশ করা হয় ১৭ আগস্ট এবং হালনাগাদ করা হয় ২৯ আগস্ট। চূড়ান্ত প্রার্থী ও ভোটার তালিকায় অমর্ত্য রায় জনের নাম ছিল কিন্তু পরবর্তীতে আজ তার প্রার্থিতা বাতিল করা হয়। নির্বাচন কমিশনের এমন পক্ষপাতদুষ্ট সিদ্ধান্ত সুষ্ঠু নির্বাচন সম্পন্ন হওয়ার ক্ষেত্রে হুমকিস্বরূপ এবং যেকোনো প্রার্থীর বিরুদ্ধে যেকোনো সময় ব্যবহৃত হতে পারে। তিনি আরও বলেন, শেখ মুজিবের গ্রাফিতি মোছায় নিষিদ্ধ সংগঠন ছাত্রলীগের সন্ত্রাসী এনামের আন্দোলনের প্রেক্ষিতে তৎকালীন প্রশাসন অমর্ত্য রায় জনকে বহিষ্কার করে। উক্ত আন্দোলনে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক সোহেল আহমেদ, লুৎফুল এলাহী, মোতাহার হোসেন এবং শিক্ষার্থী আবদুর রশিদ জিতু সংহতি জ্ঞাপন করে। প্রসঙ্গত উক্ত শিক্ষকদের মধ্যে একজন বর্তমান উপ-উপাচার্য, একজন নির্বাচন কমিশনের সদস্য এবং আব্দুর রশিদ জিতু ভিপি পদে অমর্ত্য রয়ের প্রতিদ্বন্দ্বী। এখানে স্পষ্ট যে, অমর্ত্যর প্রার্থীতা বাতিলের সিদ্ধান্ত পক্ষপাতদুষ্ট, ষড়যন্ত্রমূলক এবং কনফ্লিক্ট অব ইন্টারেস্ট এর ব্যত্যয়। শরণ এহসান বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের ওয়েবসাইটে ১৭ আগস্ট এ প্রকাশিত ভোটার তালিকায় অমর্ত্য রায়ের নাম ছিল। পরবর্তীতে ২৯ আগস্ট প্রকাশিত চূড়ান্ত প্রার্থী তালিকায়ও তার নাম ছিল। কিন্তু আজ নোটিশ আসার পর আমরা দেখতে পাচ্ছি ওয়েবসাইটে যে ভোটার তালিকার ফাইলটা রয়েছে, সেটি হুট করে পরিবর্তন করে ফেলা হয়েছে এবং তাতে অমর্ত্য রায়ের নাম নেই। এক্ষেত্রে নতুন তালিকায় কোনো সংশোধন করার বিষয়টিও উল্লেখ করা হয়নি। এতে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন এর স্পষ্ট জালিয়াতি লক্ষ্য করা যায়। তিনি আরও বলেন, চূড়ান্ত প্রার্থী তালিকা প্রকাশের পর নির্বাচনের চার দিন আগে এমন সিদ্ধান্ত নির্বাচন কমিশন ও প্রশাসনের ইচ্ছাকৃত গাফিলতি ও প্রতারণা। চূড়ান্ত প্রার্থী তালিকায় অমর্ত্য রয়ের নাম থাকায় নির্বাচনী প্রস্তুতির সকলকিছু সেভাবে সম্পন্ন হয়েছে। এমতাবস্থায়, পর্যাপ্ত সময় থাকা সত্ত্বেও এতোদিন পার হয়ে যাওয়ার পর নির্বাচনের চার দিন আগে এই বিষয়ে সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা প্রশাসন ও নির্বাচন কমিশন ‘সম্প্রীতির ঐক্য’ পর্ষদ ও ভোটারদের সাথে প্রতারণার স্বরূপ। আমরা বলতে চাই, প্রশাসন নির্বাচনে লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড নিশ্চিত করতে ব্যর্থ হয়েছে, পক্ষপাতদুষ্ট আচরণ করেছে। একইরকম আচরণের যে পুনরাবৃত্তি যে অন্য কোনো প্রার্থীর ক্ষেত্রে ঘটবে না তার কোনো নিশ্চয়তা নেই।  প্রশাসনের এমন সিদ্ধান্তকে জাকসু বানচালের পাঁয়তারা আখ্যা দিয়ে শরণ এহসান বলেন, বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের পক্ষপাতদুষ্ট আচরণ সম্পূর্ণ ভাবে জাকসু নির্বাচনকে বানচাল করার পাঁয়তারা। চলতি বছরের ২ ফেব্রুয়ারি উপাচার্য বলেছিলেন যে, জাকসুর তপশিল ঘোষণা করলে ক্যাম্পাসে লাশ পড়বে। উপাচার্যের এমন বক্তব্য জাকসু নির্বাচন অনুষ্ঠিত করতে প্রশাসনের যে অনীহা, তারই বহিঃপ্রকাশ ছিল। কাজেই, জাকসু নির্বাচনে স্পষ্টত প্রতারণা, পক্ষপাতদুষ্টতা এবং অন্যায় হচ্ছে। নির্বাচন কমিশন ব্যবস্থা না নিলে আইনি লড়াইয়ের হুঁশিয়ারি দিয়ে তিনি বলেন, জাকসু নির্বাচনের এই জালিয়াতির বিরুদ্ধে বিশ্ববিদ্যালয়ের আচার্যের দৃষ্টি আকর্ষণ করছি, নির্বাচন কমিশন ও প্রশাসনের এরূপ আচরণের দ্রুত প্রতিকার করার জন্য মহামান্য আচার্যের কাছে আবেদন জানাই। জাকসু বানচালের ষড়যন্ত্র আমরা কোনোভাবেই মেনে নেব না, প্রয়োজনে আমরা আইনি লড়াই লড়তে বাধ্য হব। এর আগে, নিয়মিত ছাত্রত্ব না থাকায় জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (জাকসু) নির্বাচনে ‘সম্প্রীতির ঐক্য’ প্যানেলের সহসভাপতি (ভিপি) পদপ্রার্থী বাংলাদেশ ছাত্র ইউনিয়ন জাবি সংসদের সাবেক সভাপতি ও ৪৭ ব্যাচের প্রত্নতত্ত্ব বিভাগের শিক্ষার্থী অমর্ত্য রায় জনের প্রার্থিতা বাতিল করে জাকসু নির্বাচন কমিশন। শনিবার (৬ সেপ্টেম্বর) প্রধান নির্বাচন কমিশনার অধ্যাপক মনিরুজ্জামান স্বাক্ষরিত এক বিজ্ঞপ্তিতে এই তথ্য জানানো হয়েছে।  
Read Entire Article