ক্যাচ মিস তো ম্যাচ মিস। দুবাই ইন্টারন্যাশনাল স্টেডিয়ামে পাকিস্তানকে শুরুতে যেভাবে চেপে ধরেছিলো বাংলাদেশ, শেষে সেই চাপটা ধরে রাখতে পারেনি। পারলো না মূলত মিস ফিল্ডিংয়ের কারণে। বেশ কয়েকটি ক্যাচ মিস, রান আউট মিস আর বাউন্ডারি বাঁচাতে না পারার কারণে শেষ পর্যন্ত জয়ের জন্য বাংলাদেশ পেলো ১৩৬ রানের লক্ষ্য।
অথচ, মিস ফিল্ডিংগুলো না হলে পাকিস্তানের রান ১০০’ও হয়তো হতে পারতো না। কিন্তু এখন ১৩৬ রানও একটি বড় চ্যালেঞ্জ হিসেবে দাঁড়িয়ে গেলো বাংলাদেশ দলের সামনে।
দুবাইতে টস জিতে প্রথমে পাকিস্তানকে ব্যাট করার আমন্ত্রণ জানায় বাংলাদেশ অধিনায়ক জাকের আলী অনিক। টস হেরে ব্যাট করতে নেমে ৮ উইকেট হারিয়ে ১৩৫ রান সংগ্রহ করে পাকিস্তান। শেষ দিকে মোহাম্মদ হারিস ৩১ ও মোহাম্মদ নওয়াজ ২৫ রান করে পাকিস্তানকে সম্মানজনক স্কোর এনে দেন। তাসকিন আহমেদ নেন ৩ উইকেট।
পাকিস্তানের বিপক্ষে আজকের ম্যাচটি অঘোষিত সেমিফাইনাল। জিতলে ফাইনাল নিশ্চিত। হারলে বিদায়। এমন একটি ম্যাচে তিন পরিবর্তন নিয়ে খেলতে নেমেছে বাংলাদেশ। বোলার সাইফউদ্দিন আর নাসুম আহমেদের পরিবর্তে একাদশে আনা হয়েছিল তাসকিন আহমেদ ও শেখ মেহেদী হাসানকে।
একাদশে পরিবর্তনের সুফল হাতেনাতেই পেতে শুরু করেছে টাইগাররা। প্রথম দুই ওভারেই পরিবর্তিত দুই বোলার তাসকিন এবং শেখ মেহেদী হাসান চেপে ধরলো পাকিস্তান দলকে। ফিরিয়ে দিলেন দুই টপ অর্ডার সাহিবজাদা ফারহান ও সাইম আইয়ুবকে।
প্রথম ওভারের চতুর্থ বলে ব্যাকওয়ার্ড পয়েন্টে খেলতে গিয়েই রিশাদ হোসেনের হাতে ক্যাচে পরিণত হন সাহিবজাদা ফারহান। ৪ বলে ৪ রান করেন তিনি। পরের ওভারে আবারও রিশাদ হোসেন। ক্যাচ ধরলেন তিনি সাইম আইয়ুবের। শেখ মেহেদীর বলে মিডঅফে দাঁড়ানো রিশাদের হাতে ক্যাচ তুলে দিলেন সাইম। শূন্য রানে আউট হলেন তিনি। এবারের এশিয়া কাপে এ নিয়ে চার ম্যাচে ডাক মারলেন সাইম আইয়ুব।
৫ রানে ২ উইকেট হারিয়ে বিপদে পড়া পাকিস্তানকে টেনে তোলার চেষ্টা করছিলেন ফাখর জামান ও সালমান আগা। কিন্তু খুব বেশিদূর এগুতে পারেনি। রিশাদ হোসেনের মায়াবী ঘূণির ফাঁদে পড়ে উইকেট হারান ফাখর জামান ও হুসাইন তালাত। ২০ বলে ১৩ রান করে রিশাদের বলে ছক্কা মারতে গিয়ে ফাখর জামান ক্যাচ দেন তানজিম সাকিবের হাতে।
এরপরের ওভারের প্রথম বলেই (৯ম ওভার) সাইফ হাসানের হাতে ক্যাচ দেন হুসাইন তালাত। ৩ রান করে বিদায় নেন তিনি। পাকিস্তান অধিনায়ক সালমান আগা কিছুটা বিপজ্জনক হয়ে উঠছিলেন। ২৩ বলে ১৯ রান করেন তিনি। কিন্তু মোস্তাফিজের একটি স্লোয়ারে বিভ্রান্ত হয়ে ক্যাচ দেন উইকেটের পেছনে জাকের আলী অনিকের হাতে। ৪৯তম রানে পড়ে ৫ম উইকেট।
এরপরই শাহিন আফ্রিদি এবং মোহাম্মদ হারিস মিলে হাল ধরার চেষ্টা করেন। ২২ রানের জুটি গড়েন তারা। ১৩ বলে ১৯ রান করে আউট হন শাহিন আফ্রিদি। ২টি ছক্কার মার মারেন তিনি। ২৩ বলে ৩১ রান করেন মোহাম্মদ হারিস। ১৫ বলে ২৫ রান করে আউট হন মোহাম্মদ নওয়াজ। ৯ বলে ১৪ রান করে অপরাজিত থাকেন ফাহিম আশরাফ।
তাসকিন আহমেদ ২৮ রান দিয়ে নেন ৩ উইকেট। ২টি করে উইকেট নেন মেহেদী হাসান ও রিশাদ হোসেন। একটি নেন মোস্তাফিজুর রহমান।
বাংলাদেশ একাদশ
সাইফ হাসান, পারভেজ হোসেন ইমন, তাহিদ হৃদয়, শামীম হোসেন পাটোয়ারী, জাকের আলী অনিক (অধিনায়ক এবং উইকেটরক্ষক), নুরুল হাসান সোহান, রিশাদ হোসেন, মেহেদী হাসান, তানজিম হাসান সাকিব, তাসকিন আহমেদ, মুস্তাফিজুর রহমান।
পাকিস্তান একাদশ
সাহিবজাদা ফারহান, ফাখর জামান, সাইম আইয়ুব, সালমান আগা (অধিনায়ক), হুসাইন তালাত, মোহাম্মদ হারিস (উইকেটরক্ষক), মোহাম্মদ নওয়াজ, ফাহিম আশরাফ, শাহিন শাহ আফ্রিদি, হারিস রউফ, আবরার আহমেদ।
আইএইচএস/