ফায়ার ফাইটার নয়নের মৃত্যু: দায় পুলিশ না ফায়ার সার্ভিসের?

16 hours ago 7

সাধারণত কোথাও আগুন লাগলে সঙ্গে সঙ্গে সেখানকার আশপাশের সড়ক বন্ধ করে দেওয়া হয়। সড়ক বন্ধ করতে পুলিশ ও স্থানীয়রা সহয়তা করেন। সড়ক বন্ধ থাকলেও জরুরি সেবা দেওয়া ফায়ার সার্ভিসের গাড়ি, অ্যাম্বুলেন্স, আইশৃঙ্খলা বাহিনীর গাড়ি চলাচল করে।

দেশের প্রশাসনের প্রাণকেন্দ্র সচিবালয়ে আগুন লেগেছিল বুধবার দিনগত রাতে। আগুন নেভাতে তেজগাঁও থেকে ছূটে আসেন ফায়ার ফাইটার নয়ন। রাত ৩টা ১৫ মিনিটের দিকে যখন পানির পাইপ কাঁধে নিয়ে রাস্তা পার হচ্ছিলেন তখন একটি দ্রুতগতির ট্রাক এসে ধাক্কা দেয়। সঙ্গে সঙ্গে রাস্তায় পড়ে যান তিনি। মাথা থেকে হেলমেট ছিটকে পড়ে। রাস্তায় ছিটকে পড়ে রক্তও। পরে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে তিনি গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসকরা মৃত ঘোষণা করেন।

দরিদ্র কৃষক বাবা আক্তারুজ্জামানের একমাত্র সন্তান ছিলেন ফায়ার ফাইটার মো. সোহানুর জামান নয়ন (২৪)। বাবার স্বপ্ন ছিল ছেলের চাকরির মাধ্যমে অনাগত দিন সুখে-শান্তিতে কাটাবেন। নয়নের মৃত্যুর সঙ্গে বাবা-মায়ের স্বপ্নও ধূলিসাৎ হয়েছে। ছেলেকে হারিয়ে বাকরুদ্ধ বাবা আক্তারুজ্জামান। শুধু বলেন, ‘বাবার কাঁধে সন্তানের লাশ অনেক ভারী। আমার অনেক স্বপ্ন ছিল তাকে ঘিরে। সব শেষ হয়ে গেলো।’ একমাত্র ছেলের শোকে পাগলপ্রায় মা নার্গিস আক্তারও।

সংশ্লিষ্ট বিশেষজ্ঞরা বলছেন, তরুণ ফায়ার ফাইটার নয়নের মৃত্যুতে রাষ্ট্রের ব্যর্থতা রয়েছে। এমন একজন অকুতোভয় ফায়ার সৈনিককে এভাবে প্রাণ দিতে হবে তা অকল্পনীয়। আগুন যেখানেই লাগুক, আগে রাস্তা বন্ধ করা পুলিশের প্রথম কাজ।

নয়নের মৃত্যুতে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) মো. জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরীও ব্যর্থতার দায় স্বীকার করেছেন। এই নির্মম মৃত্যুতে যে বা যাদের দায় থাকবে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার ঘোষণা দিয়েছেন স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা।

নিহত নয়নের স্বজনরাও মনে করছেন, রাস্তাটি বন্ধ করা হয়েছে যখন, তার আগেই নয়নকে ট্রাক চাপা দিয়েছে। কিন্তু আগুন লাগার পর পরই রাস্তা বন্ধ করে দিলে নয়নের এভাবে মৃত্যু হতো না।

সে রাতে ঘটনাস্থলে গণমাধ্যমকর্মীরাও উপস্থিত থেকে সংবাদ সংগ্রহ করছিলেন। টেলিভিশনের রিপোর্টাররা লাইভে তথ্য জানাচ্ছিলেন। গণমাধ্যমকর্মীরাও সাক্ষী, পুলিশ রাস্তা বন্ধ করেনি।

আগের আগুনগুলোতে রাস্তা বন্ধ ছিল

২০২৩ সালের ৪ এপ্রিল রাজধানীর বঙ্গবাজার মার্কেটে ভয়াবহ আগুনের ঘটনা ঘটেছিল। আগুন লাগার পরপরই ওই এলাকার আশপাশের সড়ক বন্ধ করে দেওয়া হয়। আগুন লাগার পর হাইকোর্ট থেকে গুলিস্তান, হাইকোর্টের দিক থেকে বঙ্গবাজার মার্কেট, নর্থ সাউথ রোডের দিক থেকেও বঙ্গবাজারের দিকে যাওয়ার রাস্তা বন্ধ ছিল। গুলিস্তান, বঙ্গবাজার, ফুলবাড়িয়া, নাজিরা বাজার, আনন্দবাজার সড়কেও যান চলাচল বন্ধ ছিল।

তখন আগুন নিয়ন্ত্রণে আনতে ফায়ার সার্ভিসের ৫০টি ইউনিট কাজ করে।

 দায় পুলিশ না ফায়ার সার্ভিসের?নয়নের বাবা আক্তারুজ্জামান

এর কিছুদিন পর ১৫ এপ্রিল রাজধানীর নিউমার্কেট সংলগ্ন নিউ সুপার মার্কেটে লাগা আগুন নিয়ন্ত্রণ করতে নিউমার্কেটমুখী আশপাশের সব সড়ক বন্ধ করে দেওয়া হয়। আগুন লাগার পরই পুলিশ ঘটনাস্থলে এসে সার্বিক পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে গাড়ি চলাচল বন্ধ করে দেয়। সড়কে শুধু ফায়ার সার্ভিস ও সংশ্লিষ্টদের প্রবেশ করতে দেওয়া হয়নি তখন।

সড়ক বন্ধ না করায় আফসোস নয়নের স্বজনদের

অগ্নিকাণ্ডের শুরুতেই সচিবালয়ের সামনের সড়কে যান চলাচল বন্ধ করে দিলে ফায়ার ফাইটার নয়ন ট্রাকের চাপায় মারা যেত না বলে মনে করেন স্বজনরা। নয়নের চাচাতো ভাই রাকিবুল ইসলাম বৃহস্পতিবার সাংবাদিকদের বলেন, সে যখন আহত হলো, তারপর সড়ক বন্ধ করা হলো। পাঁচ মিনিট আগে সড়ক বন্ধ করা হলে সে মারা যেত না। এ ঘটনা সম্পূর্ণভাবে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টার ব্যর্থতা।

বৃহস্পতিবার বঙ্গবাজারে ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্সের সদর দপ্তরে নয়নের জানাজা হয়। জানাজার পর নয়নের মামা রকিব মাসুদ ও চাচাতো ভাই রাকিবুল ইসলাম সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেন।

চির-ছুটি পেলেন নয়ন

২৬ ডিসেম্বরেই সকালে ছুটিতে গ্রামের বাড়ি যাওয়ার কথা ছিল ফায়ার ফাইটার নয়নের। সব প্রস্তুতি শেষ। ব্যাগও গুছিয়ে রেখেছিলেন। কিন্তু বুধবার দিনগত মধ্যরাতে সচিবালয়ে আগুনের খবরে ডাক পড়ে তার। সব ফেলে ছুটে যান আগুন নেভাতে।

সহকর্মীরা জানান, বৃহস্পতিবার সকালেই ছুটিতে রংপুরের মিঠাপুকুর উপজেলার বড়বালা ইউনিয়নে গ্রামের বাড়িতে যাওয়ার কথা ছিল তার। রাতেই ব্যাগ গুছিয়ে রেখেছিলেন। কিন্তু মাঝরাতে ডাক পড়ায় ঘুম থেকে উঠেই যোগ দিয়েছিলেন পেশাগত দায়িত্ব পালনে। সেখানে প্রাণ হারিয়ে বাড়ি ফিরলো তার নিথর দেহ।

রাস্তা বন্ধ থাকলে দ্রুতগতির ট্রাক কীভাবে এলো?

শুধু এই দুটি ঘটনায় নয়। এর আগে রাজধানীতে ছোট-বড় প্রায় সব আগুনের ঘটনায় রাস্তা বন্ধ করেছিল পুলিশ। কিন্তু সম্প্রতি সচিবালয়ে লাগা ভয়াবহ আগুনে কেন রাস্তা বন্ধ করা হয়নি সেই প্রশ্ন ঘুরপাক খাচ্ছে সবার মাঝে। এ নিয়ে প্রশ্নও তুলেছেন অনেকেই। বেশির ভাগই এ ঘটনায় পুলিশের দায় এবং ব্যর্থতা দেখছেন। যদিও পুলিশের পক্ষ থেকে বলা হচ্ছে, আগুন লাগার পর পরই সচিবালয়ের রাস্তাটি বন্ধ করে দেওয়া হয়। রাস্তা বন্ধ থাকলে কীভাবে গাড়ি চলাচল করলো এবং দ্রুতগতির ট্রাক নয়নকে ধাক্কা দিলো?

রাস্তা বন্ধ করেনি পুলিশ, দাবি সাংবাদিকদেরও

আগুন লাগার পর সংবাদ সংগ্রহের জন্য ঘটনাস্থলে ছুটে যান বেসরকারি টেলিভিশন চ্যানেল২৪ এর সিনিয়র রিপোর্টার সাদ বিন শফিক। সেখানে যেয়ে তিনি দেখেছেন কোনো রাস্তা বন্ধ নেই, সব ধরনের গাড়ি চলাচল করছে। নয়নের দুর্ঘটনার আগে ও পরে তিনি লাইভে বর্ণনা করছিলেন। এ প্রতিবেদকের কথা হয় সাদ বিন শফিকের সঙ্গে।

তিনি জাগো নিউজকে বলেন, আড়াইটার আগেই স্পটে যাই। এরপর লাইভে যাই। লাইভ চলাকালীন দেখলাম সচিবালয়ের সামনের গেটে ফায়ার সার্ভিসের বড় গাড়ি। ওসমানী মিলনায়নের ভেতরে পানির উৎস ছিল। কিছুক্ষণ পর আমার সামনে থেকে দৌড় দিয়ে পার হলো ফায়ার ফাইটার নয়ন। তার কাঁধে ছিল পাইপের রোল। এসময় দ্রুতগামী একটি ট্রাক জিরো পয়েন্টের দিক থেকে এসে নয়নকে চাপা দিয়ে চলে যায়। আমি তখন লাইভে আওয়াজ এবং চিৎকারের শব্দে সঙ্গে সঙ্গে দৌড়ে রাস্তার অপর পাশে যাই। আমি লাইভের মধ্যেই বলছিলাম, একজন ফায়ার ফাইটারকে চাপা দিয়ে চলে গেলো ট্রাক। এরপর অ্যাম্বুলেন্সে করে ঢাকা মেডিকেল হাসপাতালে নেওয়া হয়।

তিনি বলেন, দুর্ঘটনার আগে ঘটনাস্থলে শিক্ষার্থীরা ভক্সপপ দিচ্ছিলেন। পুলিশ রাস্তা বন্ধ না করায় এ সময় তারা তীব্র প্রতিক্রিয়া দেখিয়েছিলেন। নয়নকে ট্রাক ধাক্কা দেওয়ার এক মিনিটের মধ্যে পুলিশ রাস্তা বন্ধ করে। এরমধ্যে কিছু গাড়ি ঢুকে গেছিল তখন গাড়িগুলো বের করে দিয়ে রাস্তায় ব্যারিকেড দেওয়া হয়। এরপর বিজিবি ও র্যাব আসে। পরবর্তীতে এ ধরনের অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা এড়াতে আগে থেকেই আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর পদক্ষেপ নেওয়া প্রয়োজন।

পুলিশের কাজ ফায়ারের কর্মীদের স্কট দেওয়া, পুলিশের গাফিলতির জন্যই মৃত্যু

ফায়ার সার্ভিসের সাবেক মহাপরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) আবু নাঈম মো. শাহিদউল্লাহ জাগো নিউজকে বলেন, যখন ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা আগুন নেভাতে যায় তখন পুলিশের কাজ ফায়ারের কর্মীদের স্কট দেওয়া। আগুন লাগার সঙ্গে সঙ্গে রাস্তা ব্লক করে দেওয়া, যাতে হতাহত কিংবা ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ কমানো যায়। সচিবালয়ে পানি মজুত ছিল না বলেই ফায়ার ফাইটার নয়ন পানির বিকল্প ব্যবস্থা করতে গিয়ে মারা গেলো। সচিবালয় কেপিআই এলাকা। তাহলে তাদের পানি ছিল না কেন? এসব প্রশ্নের উত্তর বের করা দরকার।

 দায় পুলিশ না ফায়ার সার্ভিসের?

তিনি বলেন, তদন্ত কমিটি তাদের তদন্তে বিষয়টি আনবে, কেন রাস্তা ব্লক করা হয়নি। সেখানে পুলিশের ডিউটিতে কে কে ছিলেন, এসব বিষয় উঠে আসবে। একজন তরুণ ফায়ার ফাইটারের এভাবে মৃত্যু কাম্য নয়। পুলিশের গাফিলতির জন্যই মৃত্যু হয়েছে।

রাস্তা বন্ধ করলে ফায়ারের গাড়ি কোন দিকে ঢুকবে, প্রশ্ন ওসির!

শাহবাগ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ খালিদ মনসুর জাগো নিউজকে বলেন, আগুন নেভানোর জন্য সব পুলিশ অফিসার তখন সচিবালয়ের ভেতরে। আমরা রাস্তা বন্ধ করলে ফায়ার সার্ভিসের গাড়িগুলো কোন দিক দিয়ে ঢুকবে? এ ঘটনায় মামলা হয়েছে, আসামি গ্রেফতার রয়েছে এবং গাড়িও জব্দ আছে। আমরা সব কাজই করছি, কোনো কাজ বাদ রাখিনি।

ডিএমপির উপ-পুলিশ কমিশনার (মিডিয়া অ্যান্ড পাবলিক রিলেশনস্ বিভাগ) মুহাম্মদ তালেবুর রহমান জাগো নিউজকে বলেন, রাস্তা বন্ধের বিষয়টি তার জানা নেই।

আগুন লাগার পরই ঘটনাস্থলে ছুটে যান ডিএমপির সচিবালয়-নিরাপত্তা বিভাগের অতিরিক্ত উপ-পুলিশ কমিশনার (এডিসি) কাজী আবু সাঈদ। তার কাছে জানতে চাওয়া হয় সচিবালয় নিরাপত্তার দায়িত্ব আপনার। রাস্তা কেন বন্ধ করেনি পুলিশ? এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বেশ কিছুক্ষণ চুপ থেকে জানান, ঘটনাস্থলে ঊর্ধ্বতন পুলিশ কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন। কিছু জানার থাকলে তাদের সঙ্গে কথা বলার পরামর্শ দেন তিনি।

দোষী পুলিশ সদস্যদের শাস্তিমূলক ব্যবস্থা, বলছে ডিএমপি

ডিএমপির অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার (ক্রাইম অ্যান্ড অপারেশন্স) এস এন মো. নজরুল ইসলাম জাগো নিউজকে বলেন, এ ঘটনায় তদন্ত কমিটি হয়েছে। তদন্ত কমিটির রিপোর্টে যদি কোনো পুলিশ সদস্যদের দোষ-ত্রুটি কিংবা গাফিলতি থাকে তাহলে অবশ্যই ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

গাফিলতি তদন্তে উঠে আসবে

ফায়ার ফাইটারের মৃত্যুতে কে বা কারা দায়ী, জানতে চাইলে ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স অধিদপ্তরের মহাপরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মুহাম্মদ জাহেদ কামাল মুঠোফোনে জাগো নিউজকে বলেন, সব কিছু নিয়ে তদন্ত চলছে। তদন্তে বের হয়ে আসবে ফায়ার ফাইটারের মৃত্যুতে কে বা কারা দায়ী বা গাফিলতি ছিল। কেন তার এমন মৃত্যু হলো। এরই মধ্যে এ ঘটনায় মামলা হয়েছে।

তিনি বলেন, আমি নিজেও খুব শকড নয়নের মতো ফায়ার ফাইটারের অস্বাভাবিক মৃত্যু কাম্য নয়। ভবিষ্যতে যাতে এ ধরনের ঘটনা না ঘটে আমরা চেষ্টা করছি।

ফায়ার ফাইটার নিহতে ব্যর্থতা স্বীকার স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টার

ফায়ার সার্ভিসের সদরদপ্তরে ফায়ার ফাইটার নয়নের জানাজা শেষে এক প্রশ্নের জবাবে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) মো. জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী বলেন, এ ঘটনার বিচার অবশ্যই হবে। আমার একজন কর্মী মারা গেলো এর ব্যর্থতা আমার। এ ঘটনায় আমি শোকাহত। অল্প বয়সে যে এই ছেলেটা চলে গেলো, সবচেয়ে বেশি ক্ষতি হয়েছে তার মা-বাবার। অন্য সবাই কিন্তু ভুলে যাবে। কিন্তু তার মা-বাবা কিন্তু এ মৃত্যু ভুলতে পারবে না।

যখন আগুন লাগলো তখন ওই জায়গাটা নিরাপত্তা না দিয়ে ট্রাক কেন রাস্তা দিয়ে গেলো, এটি ব্যর্থতা কি না? এ প্রশ্নের জবাবে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন, আমি বলবো এটা ব্যর্থতাই। ট্রাক ওই সময় চলাচল করা উচিত ছিল না। ট্রাকচালককে আমরা ধরে ফেলেছি।

টিটি/এমএইচআর/এএসএম

Read Entire Article