মালয়েশিয়ার প্রধানমন্ত্রী আনোয়ার ইব্রাহিম ঘোষণা করেছেন যে, তার সরকার ফিলিস্তিনের প্রতি পূর্ণ সমর্থন অব্যাহত রাখবে এবং ইসরায়েলকে কখনোই স্বীকৃতি দেবে না।
শুক্রবার (১৫ নভেম্বর) পেরুর রাজধানী লিমাতে অনুষ্ঠিত এশিয়া-প্যাসিফিক ইকোনমিক কোঅপারেশন (এপেক) সভার এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ মন্তব্য করেছেন।
আনোয়ার ইব্রাহিমের এই ঘোষণা আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের কাছে মালয়েশিয়ার ন্যায়বিচারের প্রতি অবিচল প্রতিশ্রুতি প্রকাশ করে। সংবাদ সম্মেলনে তিনি স্পষ্টভাবে জানান, ইসরায়েলের প্রতি মালয়েশিয়ার কূটনৈতিক অবস্থান পরিবর্তন বা উন্নতি করার কোনো পরিকল্পনা নেই।
তিনি বলেন, ফিলিস্তিনিদের বিরুদ্ধে ইসরায়েলের ক্রমবর্ধমান সহিংসতার বিষয়ে এবারের সম্মেলনে একমাত্র দেশ হিসেবে মালয়েশিয়া প্রশ্ন তুলেছে। এটি শুধু একটি রাজনৈতিক বিষয় নয়, এটি ন্যায়বিচারের বিষয় উল্লেখ করে আনোয়ার ইব্রাহিম বলেন, একটি জাতির অধিকারের বিষয়টি অস্বীকার করা হলে, আমরা কীভাবে অর্থনীতি বা মুক্ত বাণিজ্য নিয়ে কথা বলতে পারি?
মালয়েশিয়া দেশটি বরাবরই ইসরায়েলকে স্বীকৃতি না দিয়ে ফিলিস্তিনের প্রতি অবিচল সমর্থন প্রদান করে আসছে। আনোয়ার ইব্রাহিম নিশ্চিত করেছেন যে তার সরকার এই নীতিতে কোনো পরিবর্তন আনবে না।
দেশটির অবস্থান নিয়ে তিনি বলেন, ন্যায়বিচার প্রশ্নে
এটাই মালয়েশিয়ার অবস্থান। আমরা যতদিন এই অবস্থানে থাকব, ততদিন ফিলিস্তিনের জনগণের প্রতি আমাদের সমর্থন অব্যাহত থাকবে।
এদিকে এপেক সম্মেলনে মালয়েশিয়ার একক অবস্থানের ঘোষণা ফিলিস্তিনের জনগণের প্রতি শুধু সহানুভূতি নয়, একটি ন্যায়বিচারের প্রশ্নও। আনোয়ার ইব্রাহিম একাধিকবার উল্লেখ করেছেন যে, মালয়েশিয়া আন্তর্জাতিকভাবে ফিলিস্তিনের মানুষের অধিকার ও স্বাধীনতার পক্ষে কথা বলবে এবং সেই পথে তার দেশ তাদের সাহায্য অব্যাহত রাখবে।
মালয়েশিয়ার এই ঘোষণা বিশ্বের অন্যান্য দেশের সামনে আরও একটি বার্তা প্রদান করে, যেখানে দেশটি ফিলিস্তিনিদের প্রতি ন্যায়বিচার ও স্বাধীনতার পক্ষে তার দৃঢ় অবস্থান পুনর্ব্যক্ত করেছে।
উল্লেখ্য, গত এক বছরে ইসরায়েলি হামলায় ৪৫ হাজারেরও বেশি ফিলিস্তিনি নিহত এবং এক লাখেরও বেশি মানুষ আহত হয়েছেন।
ফিলিস্তিনে চলমান এই মানবিক বিপর্যয়ের মধ্যেও ইসরায়েল যুদ্ধবিরতির প্রস্তাব অগ্রাহ্য করে আসছে এবং সহিংসতা অব্যাহত রেখেছে। এতে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের চাপ সত্ত্বেও যুদ্ধবিরতির কোনো সম্ভাবনা দেখা যাচ্ছে না। এর পাশাপাশি, সংঘাত সম্প্রসারিত হয়ে লেবাননেও পৌঁছেছে, যেখানে ইসরায়েল বিমান হামলা চালাচ্ছে।