ফুটবল থেকে অবসরের কথা ভেবেছিলেন নেইমার
ব্রাজিলিয়ান সুপারস্টার নেইমার জুনিয়র তার ক্যারিয়ারের সবচেয়ে কঠিন সময়গুলোর একটি কাটিয়েছেন সৌদি ক্লাব আল-হিলালের হয়ে খেলাকালীন। সাম্প্রতিক এক আবেগঘন সাক্ষাৎকারে তিনি স্বীকার করেছেন যে, সেই সময়টা এতটাই চ্যালেঞ্জিং ছিল যে তিনি ফুটবল থেকে পুরোপুরি সরে যাওয়ার কথাও ভেবেছিলেন।
নেইমার বর্তমানে নেটফ্লিক্স ডকুমেন্টারি ‘সৌদি প্রো লিগ: কিকঅফ-এ’ তার সংগ্রামের কথা তুলে ধরেছেন। তিনি বলেন, ‘কিছু দিন এমন হতো যে আমি ঘুম থেকে উঠে সবকিছু ছেড়ে দিতে চাইতাম। এই ইনজুরিটি আমার ক্যারিয়ারে সবচেয়ে বেশি প্রভাব ফেলেছে।’
২০২৩ সালে আল-হিলালে যোগ দেওয়ার পর থেকেই নেইমারকে নানা চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি হতে হয়েছে। ক্লাবের হয়ে কিছু ম্যাচ খেলার পর, ২০২৬ বিশ্বকাপের দক্ষিণ আমেরিকা বাছাইপর্বে উরুগুয়ের বিপক্ষে খেলতে গিয়ে তার এসিএল ইনজুরি হয়।
‘ইনজুরির শুরুটা সত্যিই খুব কঠিন। প্রথম দিকে কেবল ব্যথা অনুভব হয়। আমি শুধু চেয়েছিলাম ব্যথা থামুক, হাঁটুটা বাঁকাতে পারি, আবার স্বাভাবিকভাবে চলতে পারি,’ নেইমার বলেন। মানসিকভাবেও এটি ছিল অত্যন্ত চ্যালেঞ্জিং। তিনি আরও যোগ করেন, ‘প্রথম মাসটি আমার জন্য খুবই কঠিন ছিল। আমি মানসিকভাবে ভেঙে পড়েছিলাম।’
ডকুমেন্টারিতে নেইমার জানান, তার পরিবার ও বন্ধুদের সমর্থন তাকে এই কঠিন সময় পার হতে সাহায্য করেছে। ‘যদি আপনার কাছের প্রিয়জনরা পাশে না থাকে, তবে এমন ইনজুরি থেকে ফিরে আসা সত্যিই কঠিন। এটা শরীর ও মনের উপর প্রভাব ফেলে,’ তিনি বলেন।
৩২ বছর বয়সে এ ধরনের ইনজুরি থেকে ফিরে আসার চ্যালেঞ্জ নিয়ে নেইমার বলেন, ‘আমি আর ২০ বছরের নেই। আমার জন্য এটা আরও কঠিন। কিন্তু আমার সন্তান এবং পরিবার আমাকে প্রতিদিন অনুপ্রাণিত করে।’
প্রায় এক বছরের পুনর্বাসনের পর, গত ২১ অক্টোবর এএফসি চ্যাম্পিয়ন্স লিগে আল-আইনের বিপক্ষে ম্যাচে বদলি হিসেবে মাঠে নামেন নেইমার। তবে মাত্র দুই সপ্তাহ পর, আরেকটি ম্যাচে তার হ্যামস্ট্রিং ছিঁড়ে যায়। ফলে আরও চার থেকে ছয় সপ্তাহ মাঠের বাইরে থাকতে হবে তাকে।
আল-হিলালের মেডিকেল টিমের তথ্য অনুযায়ী, ডিসেম্বরের আগে নেইমারের মাঠে ফেরার সম্ভাবনা নেই। আশাবাদী হলে বলা যায়, আগামী ৩ ডিসেম্বর এএফসি চ্যাম্পিয়ন্স লিগে আল-ঘারাফার বিপক্ষে ম্যাচে হয়তো তিনি আবার মাঠে ফিরতে পারেন।
নেইমারের এই কঠিন সময় তার অসাধারণ ক্যারিয়ারের একটি মর্মান্তিক অধ্যায় হিসেবে ইতিহাসে থেকে যাবে। তবে তিনি আশা করেন, তার প্রিয়জনদের সমর্থনে তিনি আবারও ফুটবলে পূর্ণ শক্তি নিয়ে ফিরে আসতে পারবেন।