তিন কার্যদিবস কিছুটা ঊর্ধ্বমুখী থাকার পর দেশের শেয়ারবাজারে ফের টানা দরপতন দেখা দিয়েছে। সপ্তাহের শেষ কার্যদিবস বৃহস্পতিবারও (২৩ জানুয়ারি) দেশের প্রধান শেয়ারবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) অধিকাংশ প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিটের দাম কমার পাশাপাশি কমেছে সবকটি মূল্যসূচক। একই সঙ্গে কমেছে লেনদেনের পরিমাণ।
ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের পাশাপাশি অপর শেয়ারবাজার চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জেও (সিএসই) দাম কমার তালিকায় নাম লিখিয়েছে বেশিসংখ্যক প্রতিষ্ঠান। ফলে এ বাজারটিতেও মূল্যসূচক কমেছে। এর মাধ্যমে টানা দুই কার্যদিবস শেয়ারবাজারে দরপতন হলো। সূচকের পতন হলেও সিএসইতে লেনদেনের পরিমাণ কিছুটা বেড়েছে।
এর আগে গত সপ্তাহে লেনদেন হওয়া পাঁচ কার্যদিবসেই শেয়ারবাজারে দরপতন হয়। এতে এক সপ্তাহে ডিএসইর বাজার মূলধন কমে দুই হাজার ৬৫৮ কোটি টাকা। আর প্রধান মূল্যসূচক কমে ৬০ দশমিক ৫১ পয়েন্ট। তবে চলতি সপ্তাহের প্রথম তিন কার্যদিবস টানা ঊর্ধ্বমুখী থাকে শেয়ারবাজার। কিন্তু চতুর্থ কার্যদিবস বুধবার আবার দরপতন হয়।
এ পরিস্থিতিতে সপ্তাহের শেষ কার্যদিবস বৃহস্পতিবার ডিএসইতে লেনদেন শুরু হয় বেশিরভাগ প্রতিষ্ঠানের শেয়ার দাম বাড়ার মাধ্যমে। ফলে লেনদেনের শুরুতে সূচকের ঊর্ধ্বমুখিতার দেখা মেলে। লেনদেনের প্রথম এক ঘণ্টা সূচকের ঊর্ধ্বমুখী ধারা অব্যাহত থাকে।
কিন্তু প্রথম ঘণ্টার লেনদেন শেষ হতেই বাজারের চিত্র বদলে যায়। দাম বাড়ার তালিকা থেকে একের পর এক প্রতিষ্ঠান দাম কমার তালিকায় চলে আসতে থাকে। লেনদেনের শেষ পর্যন্ত চলে এ ধারা। ফলে অধিকাংশ প্রতিষ্ঠানের দরপতনের সঙ্গে সবকটি মূল্যসূচক কমেই দিনের লেনদেন শেষ হয়।
দিনের লেনদেন শেষে ডিএসইতে দাম বাড়ার তালিকায় নাম লিখিয়েছে ১০৫টি প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিট। বিপরীতে দাম কমেছে ২০৪টির এবং ৮৯টির দাম অপরিবর্তিত রয়েছে। এতে ডিএসইর প্রধান মূল্যসূচক ডিএসইএক্স আগের দিনের তুলনায় ১০ পয়েন্ট কমে ৫ হাজার ১৬৬ পয়েন্টে নেমেছে।
অন্য দুই সূচকের মধ্যে বাছাই করা ভালো ৩০টি কোম্পানি নিয়ে গঠিত ডিএসই-৩০ সূচক আগের দিনের তুলনায় ৬ পয়েন্ট কমে ১ হাজার ৯১৩ পয়েন্টে দাঁড়িয়েছে। আর ডিএসই শরিয়াহ্ সূচক আগের দিনের তুলনায় ৪ পয়েন্ট কমে ১ হাজার ১৬১ পয়েন্টে অবস্থান করছে।
মূল্যসূচক কমার পাশাপাশি ডিএসইতে লেনদেনের পরিমাণও কমেছে। ফের বাজারটিতে লেনদেন তিনশো কোটি টাকার ঘরে নেমেছে। দিনভর ডিএসইতে লেনদেন হয়েছে ৩৫৬ কোটি ২৬ টাকা। আগের কার্যদিবসে লেনদেন হয় ৪১৩ কোটি ১ টাকা। সে হিসাবে আগের কার্যদিবসের তুলনায় লেনদেন কমেছে ৫৬ কোটি ৭৫ লাখ টাকা।
এ লেনদেনে সবচেয়ে বড় ভূমিকা রেখেছে ওয়াইম্যাক্স ইলেকট্রোডের শেয়ার। টাকার অঙ্কে কোম্পানিটির ২২ কোটি ১৯ লাখ টাকার শেয়ার লেনদেন হয়েছে। দ্বিতীয় স্থানে থাকা মালেক স্পিনিংয়ের ১৭ কোটি ৫৫ লাখ টাকার শেয়ার লেনদেন হয়েছে। ১০ কোটি ৬০ লাখ টাকার শেয়ার লেনদেনের মাধ্যমে তৃতীয় স্থানে রয়েছে এডিএন টেলিকম।
এছাড়া ডিএসইতে লেনদেনের দিক থেকে শীর্ষ ১০ প্রতিষ্ঠানের তালিকায় রয়েছে- খান ব্রদার্স পিপি ওভেন ব্যাগ, ফারইস্ট নিটিং, সানলাইফ ইন্স্যুরেন্স, ওরিয়ন ইনফিউশন, অগ্নি সিস্টেম, ন্যাশনাল টিউবস এবং ড্রাগন সোয়েটার।
অপর শেয়ারবাজার সিএসইর সার্বিক মূল্যসূচক সিএএসপিআই কমেছে ৬৯ পয়েন্ট। বাজারটিতে লেনদেনে অংশ নেওয়া ১৯২টি প্রতিষ্ঠানের মধ্যে ৬৪টির দাম বেড়েছে। বিপরীতে দাম কমেছে ৯৬টির এবং ৩২টির দাম অপরিবর্তিত রয়েছে। লেনদেন হয়েছে ৫ কোটি ৬৬ লাখ টাকা। আগের কার্যদিবসে লেনদেন হয় ৫ কোটি ৪৪ লাখ টাকা।
এমএএস/এমকেআর