অন্তর্বর্তী সরকার ট্রাম্প প্রশাসনের আরোপিত প্রতিশোধমূলক ট্যারিফের মুখোমুখি হয়ে তা সফলভাবে মোকাবিলা করলেও, সাবেক ফ্যাসিস্ট সরকার একটি ‘টাইম বোমা’ রেখে গেছে— এলডিসি গ্র্যাজুয়েশন, যা ভবিষ্যতে দেশের জন্য বড় অর্থনৈতিক সংকট ডেকে আনতে পারে বলে মন্তব্য করেছেন অন্তর্বর্তী সরকারের বাণিজ্য উপদেষ্টা শেখ বশির উদ্দিন।
তিনি বলেন, আমরা শুধু যুক্তরাষ্ট্রের ৮ বিলিয়নের মার্কেট নিয়ে কথা বলছি, কিন্তু আমাদের ৪৮ বিলিয়ন ডলারের বাজার নিয়ে কথা বলছি না। এলডিসি ইস্যু নিয়ে কথা বলতে হবে। এটা সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ।
রোববার (১০ আগস্ট) রাতে রাজধানীর গুলশান ক্লাবে বাংলাদেশ টেক্সটাইল মিলস অ্যাসোসিয়েশন (বিটিএমএ) আয়োজিত সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে এ কথা বলেন তিনি। যুক্তরাষ্ট্রের বাজারে শুল্ক ৩৫ শতাংশ থেকে কমিয়ে ২০ শতাংশ অর্জন করায় সরকারের প্রতিনিধিদলকে সংবর্ধনা দিতে এ অনুষ্ঠানের আয়োজন করে বিটিএমএ।
অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা ড. খলিলুর রহমান, বাণিজ্য সচিব মাহবুবুর রহমান, বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের ডব্লিউটিও উইংয়ের অতিরিক্ত সচিব ড. নাজনীন কাওসার চৌধুরী। অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য দেন বিটিএমএ সভাপতি শওকত আজিজ রাসেল। এছাড়া বক্তব্য দেন বিজিএমইএ সভাপতি মাহমুদ হাসান খান, বিকেএমইএ সভাপতি মোহাম্মদ হাতেম প্রমুখ।
বশির উদ্দিন বলেন ‘আমরা ট্রাম্প ট্যারিফের মতো চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করেছি। কিন্তু আগের সরকার যে এলডিসি উত্তরণের সময়বদ্ধ সিদ্ধান্ত নিয়ে গিয়েছে, সেটি এখন আমাদের জন্য চাপা বিস্ফোরণ—একটি টাইম বোমা।’
আরও পড়ুন
এলডিসি উত্তরণের ফলে বাংলাদেশ রপ্তানি পণ্যে শুল্কমুক্ত প্রবেশাধিকার, ভর্তুকির সুবিধা এবং সহজ শর্তে বৈদেশিক সহায়তা হারাবে বলে তিনি সতর্ক করেন। তারমতে, এ ঝুঁকির জন্য অতীতের সরকার যথাযথ প্রস্তুতি ও কাঠামোগত সংস্কার ছাড়াই শুধু রাজনৈতিক স্লোগান হিসেবে গ্র্যাজুয়েশনকে ব্যবহার করেছে। বর্তমান সরকার এখন বৈচিত্র্যকরণ, উৎপাদনশীলতা বৃদ্ধি এবং বাণিজ্য নীতিতে সংস্কার এনে এ সংকট মোকাবিলার চেষ্টা করছে।
তিনি বলেন, ‘আমাদের মূল উদ্দেশ্য হচ্ছে বাণিজ্য উদারীকরণ করতে চাই, ট্রেড ফ্যাসিলিটেশন করতে চাই। আমরা ফ্রি ট্রেড ওয়্যারহাউস করছি, আমদানি নীতির ওপর কাজ করছি এবং বাণিজ্য সচিব কয়েক মাস ধরে এ বিষয়গুলো নিয়ে অগ্রগতি করছেন। ট্রেড নেগোসিয়েশন এখনো শেষ হয়নি এবং চলমান। প্রয়োজনে আগামী এক থেকে দুই সপ্তাহের মধ্যে আবার যাবো।’
গোপন চুক্তি সংক্রান্ত প্রশ্নে তিনি বলেন, গোপন বিষয় গোপন থাকুক। সব তথ্য প্রকাশ পেলে টকশোতে কী নিয়ে আলোচনা থাকবে?
বাণিজ্য উপদেষ্টা আরও বলেন, আমরা এক বছরের মধ্যে ৭৫ শতাংশ বাণিজ্য ঘাটতি কমানোর লক্ষ্যে কাজ করছি। দেশে আলোচনা হয়েছে আমেরিকা থেকে বিমান কেনার ব্যাপারে, তবে আমেরিকার পক্ষ থেকে সেটি ভালোভাবে নেওয়া হয়নি বলে মনে হচ্ছে।
তিনি বলেন, আমাদের সিদ্ধান্তগুলো দূরদর্শী এবং দেশের স্বার্থ বিবেচনায় নিয়ে নেওয়া হয়েছে। সবার ঐকান্তিক প্রচেষ্টায় আমরা সফলতা অর্জন করেছি।
আইএইচও/এমএএইচ/