বকশিশ না পেয়ে অক্সিজেন খোলায় রোগীর মৃত্যু, তদন্ত কমিটি গঠন

3 hours ago 3

খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চাহিদা অনুযায়ী বকশিশ না পেয়ে এক পরিচ্ছন্নতাকর্মী (ক্লিনার) কর্তৃক অক্সিজেন মাস্ক খুলে নেওয়ার কয়েক মিনিটের মধ্যেই শেখ সাইফুল ইসলাম নামে এক মুমূর্ষু রোগীর মৃত্যুর অভিযোগ উঠেছে। এ নিয়ে দৈনিক কালবেলায় সংবাদ প্রকাশের পর নড়েচড়ে বসেছে স্বাস্থ্য প্রশাসন।

সোমবার (২২ সেপ্টেম্বর) এ ঘটনা নিয়ে খুমেক হাসপাতাল পরিচালক ডা. মো. আইনুল ইসলামকে তদন্ত করে ব্যবস্থা নেওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. মো. আবু জাফর। 

এর পরিপ্রেক্ষিতে খুমেক মেডিসিন বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ডা. শেখ মোয়াজ্জেম হোসেনকে সভাপতি ও হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক ডা. আক্তারুজ্জামানকে সদস্য সচিব করে ৫ সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে।

কমিটির সদস্যরা হলেন- আবাসিক মেডিকেল অফিসার ডা. হোসেন আলী, সেবা তত্ত্বাবধায়ক রেবেকা বানু ও প্রশাসনিক কর্মকর্তা জীএম ইকতিয়ার উদ্দিন। তবে কয়দিনের মধ্যে প্রতিবেদন প্রদান করতে হবে তা সুনির্দিষ্ট কিছু উল্লেখ করা হয়নি চিঠিতে।

হাসপাতালের পরিচালক ডা. মো. আইনুল ইসলাম কালবেলাকে বলেন, আমি বিষয়টি জানার পর সংশ্লিষ্ট পরিচ্ছন্ন কর্মী জব্বার, ওয়ার্ডের নার্সিং ইনচার্জ এবং যে চিকিৎসকের অধীনে থাকা অবস্থায় রোগীর মৃত্যু হয়েছে তাদের সঙ্গে কথা বলে প্রাথমিকভাবে জানতে চেয়েছি। কিন্তু পরিচ্ছন্ন কর্মী জানায়, সে রোগীর মুখ থেকে অক্সিজেন খোলেনি। রোগীর স্বজনই অক্সিজেন খুলে রেখে দিয়েছিল। 

তিনি আরও বলেন, আমি বিষয়টি সঠিকভাবে তদন্ত করার জন্য একটি কমিটি গঠন করে দিয়েছি। আশা করছি খুব দ্রুত এ তদন্ত কমিটি তাদের রিপোর্ট প্রকাশ করলে ব্যবস্থা গ্রহণ করতে পারব। 

তিনি বলেন, কোনোভাবেই একজন পরিচ্ছন্ন কর্মী কাজ বাদ দিয়ে অক্সিজেন খোলা বা পড়ানোর কাজ করা অপরাধ। যেহেতু ওই পরিচ্ছন্ন কর্মী হাসপাতালে আগে আউটসোর্সিং হিসেবে কাজ করত আর বর্তমানে আউটসোটিং এর মেয়াদ না থাকায় তাকে কাজে আসতে নিষেধ করা হয়েছে। এরপর তদন্তে যে বা যারা দোষী প্রমাণিত হবে তাদের বিরুদ্ধেও আইনিব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

উল্লেখ্য, রোববার (২১ সেপ্টেম্বর) সকালে খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চাহিদা অনুযায়ী বকশিশ না পেয়ে এক পরিচ্ছন্নতাকর্মী (ক্লিনার) অক্সিজেন মাস্ক খুলে নেওয়ার কিছু সময় পরে শেখ সাইফুল ইসলাম নামের এক রোগীর মৃত্যুর অভিযোগ উঠে। এ নিয়ে রোগীর স্বজন এবং সাধারণ মানুষের মধ্যে ক্ষোভ দেখা দিয়েছে। 

নিহতের পরিবার সূত্রে জানা গেছে, কিডনি জটিলতা নিয়ে গত শনিবার (২০ সেপ্টেম্বর) সকালে সাইফুলকে খুমেক হাসপাতালের মেডিসিন ইউনিট-১-এর ৫ ও ৬ নম্বর ওয়ার্ডে ভর্তি করা হয়। 

সাইফুলের পরিবারের অভিযোগ, সেখানে কোনো রোগীর অক্সিজেন প্রয়োজন, তা নির্ধারণ করেন পরিচ্ছন্নতাকর্মী। রোববার সকাল ৮টায় অক্সিজেন খুলে নেওয়ার পরপরই মৃত্যু হয় সাইফুল ইসলামের।

মৃত সাইফুল খুলনার খান জাহান আলি থানার যোগীপোল ইউনিয়নের ৪ নম্বর ওয়ার্ডের মৃত শেখ ইসমাইলের ছেলে।

Read Entire Article