খুলনার বাস্তুহার এলাকায় সংঘর্ষের ঘটনায় মামলা

2 hours ago 2

খুলনা নগরীর মুজগুন্নি এলাকার বাস্তুহারা কলোনিতে উচ্ছেদ অভিযানের সময় পুলিশের সঙ্গে স্থানীয় বাসিন্দাদের সংঘর্ষের ঘটনায় দুটি মামলা করা হয়েছে। মামলায় ৬৯ জনের নাম উল্লেখসহ অজ্ঞাতনামা ৪০০ থেকে ৫০০ জনকে আসামি করা হয়।

সোমবার (২২ সেপ্টেম্বর) খালিশপুর থানার ওসি মীর আতাহার আলী বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। এর আগে রোববার (২১ সেপ্টেম্বর) রাতে মামলা করা হয়।

মামলা দুটির একটিতে বাদী হয়েছেন জাতীয় গৃহায়ণ কর্তৃপক্ষ খুলনার উপবিভাগীয় প্রকৌশলী মাকসুদুল হক। এ মামলায় বাস্তুহারা কলোনির ৩২ জনের নাম উল্লেখ করে আসামি করা হয়েছে। অপর মামলায় বাদী হয়েছেন খালিশপুর থানার উপপরিদর্শক (এসআই) কোটাল আজাদ। এ মামলায় ৩৭ জনের নাম উল্লেখ করা হয়েছে।

সোমবার সরেজমিনে বাস্তুহারা কলোনিতে গিয়ে দেখা গেছে, উচ্ছেদ অভিযানের ভয়ে সকাল থেকেই এলাকার সকল দোকানপাট বন্ধ করে রেখেছে স্থানীয়রা। স্থানীয়রা বলছেন, প্রশাসন কোনোভাবেই আমাদের অবৈধভাবে উচ্ছেদ করতে পারে না। আমাদের দাবি একটাই- আগে আমাদের পুনর্বাসনের ব্যবস্থা করে দিতে হবে। 

তারা আরও বলেন, দেশের লাখ লাখ রোহিঙ্গা এসে বসবাস করছে, তাতে কারও কোনো সমস্যা নেই। কিন্তু আমরা এ দেশের নাগরিক, আমাদের এনআইডি কার্ড আছে। তারপরও প্রশাসন তাদের উচ্ছেদ করতে নির্মমভাবে অভিযান চালাচ্ছে। আমাদের পুনর্বাসনের ব্যবস্থা না করলে আমরা এ জায়গা ছাড়ব না।

এদিকে বিকেলে বাস্তুহারা কলোনিতে স্থানীয়দের সঙ্গে দেখা করতে আসেন বিএনপির জাতীয় নির্বাহী কমিটির ছাত্রবিষয়ক সম্পাদক রকিবুল ইসলাম বকুল। এ সময় তিনি বলেন, এ অসহায় মানুষগুলোর সমস্যা চাইলেই সব পক্ষ একসঙ্গে বসে সমাধান করতে পারতাম। কিন্তু প্রশাসন সেই আগের মতোই নিরীহ মানুষের ওপর নির্যাতন চালাচ্ছে। একটি স্বাধীন দেশে পুলিশের কাছ থেকে এটি কাম্য নয়। 

তিনি আরও বলেন, এখানে যে মানুষগুলো বসবাস করে তারা প্রত্যেকে ভূমিহীন ও ন্যূনতম নাগরিক সুবিধাও পায় না। তারপরও যদি এই মানুষগুলোকে পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীর কায়দায় নির্যাতন করা হয়, উচ্ছেদ করা হয়- তাহলে আমি এগুলো মেনে নেব না। যেহেতু আমি আপনাদের অভিভাবক, আপনাদের দাবি এবং অধিকার আদায়ে যদি আমাকে সামনে থেকে নেতৃত্ব দেওয়ার প্রয়োজন হয় আমি আপনাদের পাশে আছি।

বিএনপি এ নেতা বলেন, বাস্তুহারা এলাকার এই অসহায় মানুষের উপর বর্বরচিত হামলার তদন্ত ও বিচার আমরা চাই। যদি আর একবার আমার জনগণের উপর হামলা চলে তাহলে আমরা রাজপথে নামতে বাধ্য হব।

প্রশাসনকে আহ্বান জানিয়ে বকুল বলেন, ‘আপনারা আগে এ মানুষগুলোকে সঙ্গে নিয়ে সকল পক্ষের সঙ্গে বসে ভূমিহীন অসহায় মানুষগুলোর পুনর্বাসনের ব্যবস্থা করতে হবে। তা না হলে এ মানুষের জীবনগুলো অনিশ্চয়তার মধ্যে পড়বে।’

উল্লেখ্য, খুলনার নগরীর মুজগুন্নি ৯ নম্বর ওয়ার্ডের বয়রা হাউজিং এস্টেট (বাস্তুহারা মুক্তিযোদ্ধা কলোনি) অবৈধ উচ্ছেদ অভিযানের ঘটনাকে কেন্দ্র করে পুলিশ-কলোনিবাসীর মধ্যে ব্যাপক সংর্ঘষ হয়। ওই সংর্ঘষের ঘটনায় গোটা এলাকা রণক্ষেত্রে পরিণত হয়। এ সময় স্থানীয়রা ইটপাটকেল নিক্ষেপ করলে পুলিশ পিছু হটে। পরে পুলিশ টিয়ার গ্যাস নিক্ষেপ করে। এ সময় উচ্ছেদ অভিযানে নিয়ে যাওয়া বুলডোজার ভেঙে দেওয়া হয়। সংঘর্ষে পুলিশ, বাসিন্দা ও সাংবাদিকসহ অন্তত ৫০ জন আহত হয়েছেন।

Read Entire Article