দেশের সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়গুলোতে অনির্দিষ্টকালের জন্য কর্মবিরতি ডাক দিয়েছেন সহকারী শিক্ষকরা। এতে ক্লাস বন্ধ রয়েছে বিদ্যালয়ে। শিক্ষকদের এমন কর্মসূচির মধ্যে আলোচনায় এসেছে সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ছুটি।
অভিভাবকরা বলছেন, প্রাথমিক পর্যায়ের বেসরকারি বিদ্যালয় বা কিন্ডারগার্টেনগুলোর তুলনায় সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ছুটি বেশি। সরকারি স্কুলে ক্লাসও কম হয়।
শিশু শিক্ষার্থীদের ভিত্তি তৈরির স্তর প্রাথমিক শিক্ষায় সরকারি স্কুলের শিক্ষার্থীরা কিছুটা পিছিয়ে পড়ছে বলে মনে করেন শিক্ষাবিদরাও। ফলে শিখন ঘাটতি নিয়েই তারা প্রাথমিক শেষ করে মাধ্যমিক স্তরের পড়ালেখা শুরু করছে, যার পরিণতি ভয়াবহ বলছেন তারা।
সরকারি প্রাথমিকে ছুটি কতদিন
বছরের শুরুতে সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষাপঞ্জি প্রকাশ করে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়। ২০২৫ সালের শিক্ষাপঞ্জি ঘেঁটে দেখা যায়, এ বছর মোট ৭৮ দিন ছুটি (প্রধান শিক্ষকের হাতে সংরক্ষিত ৩ দিনসহ) রাখা হয়েছে।
এছাড়া শুক্র ও শনিবার; দুদিন সাপ্তাহিক ছুটি থাকে। ফলে এক বছরে সাপ্তাহিক ছুটিই ১০৪ দিন। এবার ঈদুল আজহায় নির্বাহী আদেশে দুদিন ছুটি ঘোষণা করায় ঈদের আগের দুই শনিবার স্কুল খোলা হয়। এতে বছরে সাপ্তাহিক ছুটি (শুক্র ও শনিবার) রাখায় তা কমে ১০২ দিন হবে। সবমিলিয়ে এক বছরে প্রাথমিক বিদ্যালয় বন্ধ থাকবে ১৮০ দিন।
আরও পড়ুন
- ‘প্রাথমিক শিক্ষকদের দাবি যৌক্তিক, সময়টা আন্দোলনের উপযুক্ত নয়’
- প্রাথমিক শিক্ষকদের কর্মবিরতিতে ক্ষতির মুখে ১ কোটি শিশু শিক্ষার্থী
রাজশাহীর পবার একটি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের চতুর্থ শ্রেণিতে পড়ছে আজিজুর রহমানের মেয়ে। বিদ্যালয়ের পড়ালেখায় সন্তুষ্ট নন আজিজুর রহমান। তিনি জাগো নিউজকে বলেন, ‘আমার বাড়ির পাশেই প্রাইমারি স্কুল। মেয়ে স্কুলে যায়, কিন্তু ঠিকমতো ক্লাস হয় না। আমরা নিজ চোখে সেটা দেখি। আজ এ কারণে বন্ধ, কাল ও কারণে বন্ধ। বছরজুড়ে বন্ধ লেগেই থাকে।’
আজিজুর রহমান বলেন, ‘স্কুলে নারী শিক্ষক বেশি। তারা ক্লাস থেকে বেরিয়ে বাইরে অধিকাংশ সময় গল্প-আড্ডায় ব্যস্ত থাকেন। এগুলো নজরদারি করা উচিত। পাশাপাশি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ছুটি কমানো দরকার।’
প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সচিব আবু তাহের মো. মাসুদ রানা জাগো নিউজকে বলেন, ‘সরকার শিক্ষকদের বেতন-ভাতা বাড়ানোর বিষয় নিয়ে কাজ করছে। তারা যেটি চাইছেন, সেটি হয়ত এখনই সম্ভব নয়। সক্ষমতা অনুযায়ী পর্যায়ক্রমে সুযোগ-সুবিধা বাড়বে।’
ছুটি প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘তারা যেহেতু অবকাশকালীন চাকরিতে রয়েছেন, সেজন্য তাদের এ সুবিধাটা আছে। ছুটি কমানো-বাড়ানো নিয়ে আমাদের আপাতত কোনো চিন্তা নেই। যতটুকু সময় শিক্ষা কার্যক্রম চলছে, সেটুকু সময় ভালোভাবে কাজে লাগাতে পারলে প্রাথমিকে শিখন ঘাটতি থাকবে না বলে আশা করি।’
এএএইচ/এমআরএম/এমএস