ভয়াবহ বন্যায় বসতঘর ও জিনিসপত্র কোনো কিছুই রক্ষা করতে পারেননি তাপস, জীবনচন্দ্র দে ও নির্মল চন্দ্র নাথরা। শুধু পরনের কাপড় নিয়ে ঘর ছাড়তে হয়েছে তাদের। কোনোভাবে জীবন নিয়ে আশ্রয়কেন্দ্রে ঠাঁই নিয়েছিলেন। তবে বাড়ি ফিরে দেখেন, নিজের ঘরটি একেবারে মাটিতে লুটে পড়ে আছে। স্বাভাবিক জীবনে যেখানে নুন আনতে পান্তা ফুরায়- সেখানে সব হারিয়ে দিশেহারা তারা। জীবনের অর্ধেক সময় পার করলেও এমন পরিস্থিতির মুখোমুখি হননি কখনো।
জীবন ও তাপস দুই ভাই। উপজেলার জোরারগঞ্জ ইউনিয়নের নন্দনপুর গ্রামের বাসিন্দা তারা। তাদের মাটির ঘর বন্যার পানিতে ভেঙে গেছে। দিনমজুর এই দুই ভাই কোনোভাবে চাষাবাদ করে দিন পার করতেন। মাথা গোঁজার শেষ সম্বল হারিয়ে এখন নিঃস্ব তারা। আর দূর্গাপুর ইউনিয়নের উত্তর দূর্গাপুর (কালীতল) গ্রামের হতদরিদ্র নির্মল চন্দ্র নাথেরও অবস্থা একই।
তাপস জানান, তার জীবদ্দশায় এমন বন্যা তিনি দেখেনি। কৃষিজমি ও বসতঘর বন্যায় নষ্ট হয়ে গেছে তার। এখন দিশেহারা তিনি কি করবেন কিছুই বুঝে উঠতে পারছেন না। সব কিছু নতুন করে শুরু করা অন্যদিকে ঋণের বোঝা নিয়ে দুশ্চিন্তায় দিন কাটছে তার। সরকারের সহযোগিতা ছাড়া ঘুরে দাঁড়ানোর মতো কোনো অবস্থা নেই।
জীবন চন্দ্র দে বলেন, জীবনে কখনো কল্পনা হয়নি নিজের বসতঘর ছেড়ে আশ্রয়কেন্দ্রে থাকতে হবে। পরনের কাপড় ছাড়া কোনো কিছুই রক্ষা করতে পারিনি।
নির্মল চন্দ্র নাথ বলেন, এমনিতে আমার চলতে কষ্ট হয়। তার ওপর এবারের বন্যায় আমার থাকার ঘরটি একদম ভেঙে শেষ হয়ে গেছে। সবার কাছে আকুল আবেদন সামর্থ্য অনুযায়ী আমাদের পাশে দাঁড়ান।
মিরসরাই উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ( ইউএনও) ও উপজেলা প্রশাসক মাহফুজা জেরিন জানান, বন্যায় ঘরবাড়ি ভেঙে যাওয়া ক্ষতিগ্রস্তদের তালিকা প্রস্তুত হচ্ছে। ইউনিয়নগুলোতে উপজেলার বিভিন্ন দপ্তরের অফিসারদের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। আশা করছি কয়েকদিনের মধ্যে তালিকা এসে পৌঁছাবে।
এম মাঈন উদ্দিন/জেডএইচ/এমএস