বরিশালে ছেলেদের পছন্দ পাঞ্জাবি, মেয়েদের পাকিস্তানি থ্রি-পিস

1 day ago 15

ঈদকে সামনে রেখে শেষ মুহূর্তে জমে উঠেছে বরিশালের মার্কেট, বিপণিবিতান ও শপিংমলগুলোর বেচাকেনা। তবে এবার ঈদের কেনাকাটায় ছেলেদের পছন্দের তালিকায় রয়েছে পাঞ্জাবি ও মেয়েদের পছন্দের শীর্ষে পাকিস্তানি থ্রি-পিস। তাই পছন্দ অনুযায়ী সাধ্যের মধ্যে ড্রেস কিনতে ছেলেরা ভিড় করছে পাঞ্জাবির দোকানগুলোতে ও মেয়েরা ভিড় করছে বিভিন্ন শপিংমলে।

কেনাকাটার জন্য বিভাগীয় এ শহরের বিভিন্ন স্থানে রয়েছে শপিংমল ও বেশ কয়েকটি মার্কেট। রয়েছে নামিদামি কিছু ব্র্যান্ডের শো-রুমও। কেবল বরিশালের বাসিন্দারা নন, ঝালকাঠি, পটুয়াখালীসহ বিভিন্ন এলাকার মানুষও ঈদের কেনাকাটার জন্য এখানে আসছেন। শনিবার (২২ মার্চ) নগরীর সদর রোড, চকবাজার, কাঠপট্টি, গির্জা মহল্লা, মহসিন মার্কেট ও সিটি মার্কেট ঘুরে এমন দৃশ্য দেখা গেছে।

বিক্রেতারা বলছেন, ১৫ রমজানের পর থেকে ক্রেতাদের পদচারণা বেড়েছে মার্কেটগুলোতে। সেইসঙ্গে বেচাবিক্রিও বেড়েছে।

মার্কেট ঘুরে দেখা গেছে, দিন বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে দেশি-বিদেশি ব্র্যান্ডের পোশাক, জুতা, গহনা থেকে শুরু করে হাজার রকমের পণ্যের দোকানগুলোতে বাড়ছে ভিড়। নগরীর বিভিন্ন প্রান্ত থেকে পরিবারসহ ছুটে আসছেন ক্রেতারা।

নগরীর হাসপাতাল রোড এলাকা থেকে আসা পারভেজ নামের এক ক্রেতা বলেন, ১৫ রমজান থেকেই পরিবারের সদস্যদের জন্য কেনাকাটা করছি। এখন নিজের জন্য একটি পাঞ্জাবি কিনবো। এজন্য আগে বিভিন্ন ব্র্যান্ডের পোশাকগুলোর কালেকশন নেটে সার্চ দিয়ে দেখলাম। ডিজাইন ভালোও লেগেছে, তবে গত বছরের তুলনায় এবার পাঞ্জাবির দাম বেশি।

নগরীর বাংলাবাজার এলাকার খোরশেদ আলম বলেন, প্রতি বছরই পোশাকের দাম বাড়ছে। তবুও পরিবার ও স্বজনদের জন্য ঈদের উপহার হিসেবে পোশাক কিনতে হয়। পরিবারের মেয়ে সদস্যদের জন্য থ্রিপিস-শাড়ি কিনলেও পুরুষদের জন্য পাঞ্জাবি কিনেছি। সেক্ষেত্রে ২৫০০ থেকে ৩৫০০ টাকা পড়েছে প্রতিটি পাঞ্জাবিতে।

নগরীর একটি স্বনামধন্য ব্র্যান্ডের একজন সেলসম্যানের সঙ্গে কথা হলে তিনি বলেন, তাদের শো-রুমে জিন্স, শার্ট, টি-র্শাট ও পাঞ্জাবির নতুন নতুন আইটেম সাজানো হয়েছে। তবে এর মধ্যে কাস্টমার বেশি নিচ্ছে পাঞ্জাবি। কাস্টমাররা তাদের পছন্দ অনুযায়ী বিভিন্ন দামের ও মানের পণ্যটি বেছে নিচ্ছেন। তাদের শো-রুমে ২৬০০ টাকা থেকে শুরু করে ১৫ হাজার টাকা দামের পাঞ্জাবি রয়েছে। তবে এর মধ্যে ৩ হাজার থেকে ৭ হাজার টাকা দামের পাঞ্জাবির চাহিদা বেশি।

নগরীর চকবাজারের কয়েকজন বিক্রয়কর্মীর সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, ঈদের কেনাকাটায় ক্রেতাদের দৃষ্টি আকর্ষণ করতে বিভিন্ন দোকানে করা হয়েছে আলোকসজ্জা। কোনো কোনো দোকানে কেনাকাটায় দেওয়া হচ্ছে মূল্য ছাড়ের সুবিধা। মূলত ক্রেতাদের দৃষ্টি আকর্ষণ করে বিক্রি বাড়াতেই এসব করা হয়েছে।

বিক্রয়কর্মীরা আরও বলেন, সব বয়সী ক্রেতার কথা ভেবে দোকানে দেশি-বিদেশি বাহারি পোশাক তোলা হয়েছে। তবে এখন পর্যন্ত শিশুদের ও মেয়েদের পাকিস্তানি ও ইন্ডিয়ান পোশাকই বিক্রি হচ্ছে বেশি।

চকবাজারে কাপড়ের দোকান ‘মিতা ফ্যাশন বাজার’র স্বত্বাধিকারী মো. মিলন বলেন, এবার ঈদে মেয়েদের পোশাকের মধ্যে পাকিস্তানি ও ইন্ডিয়ান ড্রেসগুলোর চাহিদা বেশি। তাই ক্রেতাদের চাহিদার কথা মাথায় রেখে শোরুমে ৩ হাজার টাকা থেকে শুরু করে ১৫-২০ হাজার টাকা দামের ড্রেস রাখা হয়েছে।

সাগরদি এলাকা থেকে আসা সুমাইয়া নামের একজন ক্রেতা বলেন, আমি পাকিস্তানি থ্রি-পিস কিনেছি। দাম একটু বেশি, তবে পছন্দ হওয়ায় কিনে নিয়েছি। একইসঙ্গে ম্যাচিং করে ছোট বোনের জন্যও পাকিস্তানি থ্রিপিস কিনেছি।

এদিকে মার্কেটে আসা অধিকাংশ ক্রেতাই বাড়তি দাম নিয়ে অভিযোগ করছেন। তবে বিক্রেতারা বলছেন বিশ্ববাজারে সবকিছুরই দাম বেড়েছে। সুতার দাম বাড়তি। এজন্য পাইকারি পর্যায়ে তৈরি পোশাকের দামও বাড়তি।

চকবাজার-কাঠপট্টি-লাইনরোড-পদ্মাবতি ব্যবসায়ী কল্যাণ সমিতির সাধারণ সম্পাদক শেখ আব্দুর রহিম বলেন, এই সমিতির সদস্য সংখ্যা সাড়ে চারশো। প্রত্যেক সদস্যরই দোকান আছে। দোকানগুলোতে আশানুরূপ বেচা বিক্রি শুরু হয়নি। রোজার শেষ দিকে এসে কিছুটা বেচাবিক্রি বেড়েছে। শেষ পর্যন্ত এমন বেচাকেনা হবে বলে প্রত্যাশা করছি।

এফএ/এমএস

Read Entire Article