বরিশালে নাগরিক কমিটি কর্মসূচিতে হামলা
বরিশালে বিজয় দিবস উপলক্ষে আয়োজিত জাতীয় নাগরিক কমিটির কর্মসূচিতে হামলার ঘটনা ঘটেছে। এতে সংগঠনটির কর্মসূচি পণ্ড হয়ে যায়। সোমবার (১৬ ডিসেম্বর) সকাল ১১টার দিকে নগরের সোহেল চত্বরস্থ পুড়ে যাওয়া অ্যানেক্স ভবনের জেলা ও মহানগর আওয়ামী লীগের অফিসের সামনে এ ঘটনা ঘটে।
পরে পুলিশের হস্তক্ষেপে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনা হয়।
জাতীয় নাগরিক কমিটির যুগ্ম সদস্য ডা. মাহমুদা মিতু অভিযোগ করে বলেন, ‘আমরা মহান বিজয় দিবস উপলক্ষে দোয়া ও অলোচনা সভার আয়োজন করেছিলাম। শান্তিপূর্ণভাবে আমরা আমাদের কর্মসূচি চালিয়ে নিচ্ছিলাম। হঠাৎ আমাদের ওপর হামলা করে অনুষ্ঠান পণ্ড করে দিয়েছে।’
তিনি বলেন, ‘আমরা বারবার জানিয়েছি, ‘আমরা জাতীয় নাগরিক কমিটির সদস্য। আমাদের কোনো রাজনৈতিক দলের সঙ্গে সম্পৃক্ততা নেই। কিন্তু কৃষক দলের লোকজন মিথ্যা অপবাদ দিয়ে আমাদের ওপর হামলা করে।’
জাতীয় নাগরিক কমিটির সংগঠক শাকিল মৃধা জানান, ‘তাদের আলোচনা সভার মধ্যে একদল লোক এসে আমাদের ‘আওয়ামী লীগের লোক’ বলে মিথ্যার আশ্রয় নিয়ে আমাদের ব্যানার ছিড়ে ফেলে। হামলা চালিয়ে আয়োজন পন্ড করে দেয়। হামলাকারীরা পুলিশের সামনেই এ ঘটনা ঘটিয়েছে।’
অভিযোগ অস্বীকার করে বরিশাল মহানগর কৃষক দলের যুগ্ম আহ্বায়ক ইঞ্জিনিয়ার মিজানুর রহমান বলেন, ‘আমরা মিছিল নিয়ে আসার পথে দেখি, জাতীয় নাগরিক কমিটির ব্যানারে আওয়ামী লীগপন্থীরা সড়ক আটকে প্রোগ্রাম করছে। তাদের এ ধরনের কর্মকাণ্ডের কারণে বাকবিতণ্ডা হয়। পরে উপস্থিত লোকজন তাদের রাস্তা থেকে সরিয়ে দেয়। মারামারির কোনো ঘটনা ঘটেনি।’
এদিকে প্রত্যক্ষদর্শীরা জানিয়েছেন, জাতীয় নাগরিক কমিটি আওয়ামী লীগ অফিসের সামনে কর্মসূচি পালন করতে গেলে কিছু লোকজন তাদের মারধর করে তাড়িয়ে দেয়। এ সময় পুলিশও তাদের দুইপক্ষকে সরিয়ে নেয়। পরে নাগরিক কমিটির লোকজন কোতোয়ালি মডেল থানায় যায়। সেখানে তাদের সঙ্গে বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের নেতারা ছিলেন।
থানায় গিয়ে পুলিশের সঙ্গে সাক্ষাত শেষে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন বরিশাল মহানগরের সদস্য সচিব মো. শাহাদাত বলেন, ‘নাগরিক কমিটির ভাইদের ওপর হামলা হয়েছে, তাদের নেত্রীসহ কয়েকজন আহত হয়েছেন। আমরা এর তীব্র প্রতিবাদ ও নিন্দা জানাই। সেইসঙ্গে যারা এ হামলার সঙ্গে জড়িত তাদের আইনের আওতায় এনে শিগগিরই বিচারের ব্যবস্থা করার দাবি জানাই।’
তিনি বলেন, ‘আমরা যতটুকু জানতে পেরেছি কৃষকদল, শ্রমিকদল এবং যুবদলের পরিচয় দিয়ে বিএনপির স্লোগান দিয়ে কোন কারণ ছাড়াই উদ্দেশ্যপ্রণোদিত হামলা চালিয়েছে।’
উপস্থিত পুলিশ সদস্য রাশেদ জানান, ‘হঠাৎ এক গ্রুপ এসে ব্যানার ছিড়ে ফেলেছে। কোনো সমস্যা হলে আমাদের বলতে পারতো। আমরা নিরাপত্তার দায়িত্বে ছিলাম। কিন্তু না বলে আইন নিজেদের হাতে তুলে নিয়েছে। পরে উভয় গ্রুপকে ওই স্থান থেকে আমরা সরিয়ে দিয়েছি।’
পুলিশ কর্মকর্তাদের সঙ্গে কথা শেষে নাগরিক কমিটির সদস্য সালমান জানান, ‘আমরা হামলাকারীদের বিচারের পাশাপাশি উপস্থিত পুলিশ সদস্য যারা হামলাকারীদের প্রতিহত করেনি তাদেরও শাস্তি দাবি করেছি।’
কোতোয়ালি মডেল থানার ওসি মিজানুর রহমান বলেন, ‘দুপক্ষের মধ্যে বাগবিতণ্ডা হয়েছে বলে খবর পেয়েছি। সেখানে উপস্থিত পুলিশ সদস্যরা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে নিয়েছেন।’
তিনি বলেন, ‘এ ঘটনায় কেউ লিখিত অভিযোগ দিলে তদন্ত করে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’