বাঁওড়ের মাছ ধরা নিয়ে বিএনপির দুই পক্ষের সংঘর্ষ, আহত ৭

6 hours ago 5

যশোরের চৌগাছায় বাঁওড়ের মাছ ধরা নিয়ে বিএনপির দুপক্ষের সংঘর্ষে অন্তত সাতজন আহত হয়েছেন। এসময় ঘটনাস্থল থেকে দুটি মোটরসাইকেল ও একটি বিদেশি পিস্তল উদ্ধার করেছে পুলিশ।

শুক্রবার (২৪ জানুয়ারি) দুপুরে উপজেলার বেড়গোবিন্দপুর বাঁওড়ে মাছ ধরার সময় এ সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে।

আহতরা হলেন হুদাপাড়া গ্রামের মোবারক হোসেনের ছেলে শরিফুল (৩০), রবিউল ইসলামের ছেলে শাহদুল ইসলাম (৩০), চাঁদপুর গ্রামের আমির হোসেনের ছেলে কামরুল ইসলাম (৩২) পৌরসভার বিশ্বাসপাড়ার শহিদুল ইসলামের ছেলে উজ্জ্বল হোসেন (৪০), কুটিপাড়ার মৃত মশিয়ার রহমানের ছেলে গোলাম মোস্তফা (৬০), কারিগরপাড়ার তাইজুল ইসলামের ছেলে আব্দুস সামাদ (৫৫) ও যশোর সদর উপজেলার আব্দুলপুর গ্রামের জহুর আলী ছেলে কালাম হোসেন (৫৭)। এদের মধ্যে কালাম হোসেন ও শরিফুল হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। বাকিরা প্রাথমিক চিকিৎসা নিয়েছেন।

স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, বেড়গোবিন্দপুর বাঁওড়টি সমবায় সমিতির মাধ্যমে ভূমি মন্ত্রণালয় থেকে ইজারা নিয়ে মাছ চাষ করে আসছিলেন উপজেলা মৎসজীবী লীগের সভাপতি ও সদর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আবুল কাশেমের অনুসারীরা। ৫ আগস্টের পরে উপজেলা যুবদলের সদস্যসচিব সালাহ উদ্দিন ও চৌগাছা ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি আব্দুর রহিমকে ২০ শতাংশ শেয়ার (লভ্যাংশ) দেওয়ার শর্তে মাছ চাষ করেন আবুল কাশেম। কিছুদিন আগে তিনি যশোর জেলা বিএনপি নেতা কালাম হোসেনের কাছে বাঁওড়ের ২০ শতাংশ শেয়ার বিক্রি করে দেন।

শুক্রবার সকালে কালামের নেতৃত্বে চৌগাছা বিএনপির এক পক্ষের ১৫-২০ জন মাছ ধরতে যান। এসময় সালাহ উদ্দিন ও আব্দুর রহিমের লোকজন বাধা দেন। একপর্যায়ে দুই পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ বেধে যায়। এতে উভয়পক্ষের সাতজন আহত হন।

খবর পেয়ে চৌগাছা থানার পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছালে দুইপক্ষের লোকজন পালিয়ে যান। এসময় পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে পরিত্যক্ত অবস্থায় এক রাউন্ড গুলিসহ একটি বিদেশি পিস্তল ও দুটি মোটরসাইকেল উদ্ধার করে। স্থানীয়দের সহযোগিতায় আহতদের হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।

চৌগাছা সদর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আবুল কাশেম বলেন, ৫ আগস্টের পরে মাছ লুট হয়ে যাচ্ছিল। বাঁওড়ের মাছ টিকিয়ে রাখতে প্রথমে উপজেলা যুবদলের সদস্য সচিব সালাহ উদ্দিন ও চৌগাছা ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি আব্দুর রহিমকে একটি চুক্তির মাধ্যমে সাময়িক সময়ের জন্য বাঁওড়ের দায়িত্ব দেওয়া হয়। পরে বাঁওড় সমিতির সিদ্ধান্ত অনুযায়ী বিএনপি নেতা কালামের কাছে বাঁওড়ের ২০ শতাংশ শেয়ার ৬০ লাখ টাকায় বিক্রি করে দেওয়া হয়েছে।

অভিযোগের বিষয়ে চৌগাছা ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি আবদুর রহিম বলেন, ‘৫ আগস্টের পর ৪০-৪৫ দিন ধরে বাঁওড় লুট হচ্ছিল। এরপর বাঁওড়ের ইজারাদাররা উপজেলা বিএনপির কাছে সহযোগিতা চায়। তখন সবার উপস্থিতিতে সিদ্ধান্ত হয়, বিএনপি ও স্থানীয়রা বাঁওড়ের মাছ লুট ঠেকিয়ে দেবেন। তাদের মাছ পাহারা দিয়ে দেবেন। যখন ফিশিং হবে তখন আমাদের ২০ শতাংশ ভাগ দেবেন। সেভাবেই চলছিল। হঠাৎ স্থানীয় বিএনপি নেতাকর্মীদের বাদ দিয়ে বাঁওড়ে বাইরের লোকজনকে সম্পৃক্ত করেছেন চেয়ারম্যান আবুল কাশেম। এ নিয়ে স্থানীয়দের মধ্যে ক্ষোভ সৃষ্টি হয়। আজ তারা বাঁওড়ে মাছ ধরতে গেলে স্থানীয়দের সঙ্গে তাদের মারমারি হয়েছে। এ ঘটনার সঙ্গে আমাদের দলীয় কোনো সম্পৃক্ততা নেই।’

চৌগাছা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আনোয়ার হোসেন বলেন, বাঁওড়ে মাছ ধরাকে কেন্দ্র করে বিএনপির দুইপক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ হয়েছে। এতে কয়েকজন আহত হয়েছেন। ঘটনাস্থল থেকে দুটি মোটরসাইকেল ও এক রাউন্ড গুলিসহ একটি বিদেশি পিস্তল উদ্ধার করা হয়েছে।

মিলন রহমান/এসআর/এএসএম

Read Entire Article