কুড়িগ্রামের ফুলবাড়ীতে একটি সরু বাঁশের সাঁকোর ওপর ভরসা আট গ্রামের অন্তত ২০ হাজার মানুষের। উপজেলার ফুলবাড়ী সদর ইউনিয়নের নীলকমল নদীর ওপর নির্মিত বাঁশের সাঁকো দিয়ে চলাচল করছেন বালাটারী, চন্দ্রখানা, জেলেপাড়া, কুমারপাড়া, বামনটারী, আবাসন, বৈরাগিপাড়া ও দাশিয়ারছড়ার মানুষ। এতে করে চরম ঝুঁকিতে রয়েছে ওই এলাকার স্কুল-কলেজ পড়ুয়া শিক্ষার্থীরা।
স্থানীয়রা জানান, গত তিন বছর ঝুঁকি নিয়ে এ সাঁকো দিয়ে প্রতিদিন পার হচ্ছেন স্থানীয়রা। আগে এখানে একটি কাঠের সেতু থাকলেও সেটি ভেঙে গিয়ে এ দুর্ভোগের সৃষ্টি হয়। এ ঝুঁকিপূর্ণ সাঁকো থেকে পড়ে আহত হয়েছেন অনেকে। এক যুবক চিকিৎসাধীন অবস্থায় প্রাণও হারিয়েছেন। তবুও নিরুপায় গ্রামবাসী প্রতিদিন ব্যবহার করছেন এ সাঁকো।
বালাটারি চন্দ্রখানা গ্রামের এহসান আলী (৬০) জানান, গত এক বছর আগে এ ভাঙা সাঁকো দিয়ে পারাপারের সময় তার ছেলে আতিকুর রহমান (৩৬) এক বছর আগে সাঁকো থেকে পড়ে গুরুতর আহত হয়। প্রায় এক মাস চিকিৎসার পর মৃত্যু হয় তার।
তিনি জানান, আমি নিজেও দুইবার এ সাঁকো থেকে পড়ে আহত হয়েছি। প্রতিবার শুধু প্রতিশ্রুতি পাই, সেতু পাই না। কবে নীলকমলের ওপর একটি সেতু হবে, আল্লাহ ছাড়া আর কেউ জানে না।
স্থানীয় কলেজছাত্র ফারুক হোসেন (১৯) বলেন, এক সপ্তাহ আগে আমিও পড়ে গিয়ে আহত হই। আমার মোবাইলও ভেঙে গেছে। প্রায়ই দুর্ঘটনা ঘটছে এখানে। আগে যখন কাঠের সেতু ছিল তখন নিরাপদে চলাচল করেছি।
ওই এলাকার কৃষক আক্তার আলী (৫৮) জানান, তিন বছর ধরে আমরা নিজেরাই বাঁশ দিয়ে এ সাঁকো বানাই। প্রতিবছর আমি প্রায় ৫০ থেকে ৬০টা বাঁশ দিই, বাকিরা শ্রম দেয়।
ফুলবাড়ী উপজেলা প্রকৌশলী মামুনুর রহমান জানান, আমি সরেজমিন পরিদর্শন করেছি। নীলকমল নদীর ওপর ১২০ মিটার সেতু নির্মাণের প্রকল্প প্রস্তাব পাঠানো হয়েছে।
এ বিষয়ে ফুলবাড়ী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) রেহেনুমা তারান্নুম জানান, গ্রামের লোকজনের আপাতত চলাচলের জন্য বাঁশ-কাঠের সাঁকো নির্মাণে বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। খুব শিগগির কাজ শুরু হবে। পাশাপাশি স্থায়ী সেতু নির্মাণের প্রস্তাব এলজিইডিতে পাঠানো হয়েছে।
রোকনুজ্জামান মানু/আরএইচ/জেআইএম