বাংলাদেশ ব্যাংকের অফিসার্স ওয়েলফেয়ার কাউন্সিলের নির্বাচনে নিরঙ্কুশ জয় পেয়েছে আওয়ামী পন্থী নীল দল। সভাপতি, সহ-সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক সহ গুরুত্বপূর্ণ সব পদেই বিজয়ী হয়েছেন নীল দলের প্রার্থীরা। বিএনপিপন্থী সবুজ দল থেকে মাত্র একজন বিজয়ী হয়েছেন।
বুধবার (১৯ নভেম্বর) সকাল থেকে শুরু হয়ে বিকেল ৫টা পর্যন্ত কেন্দ্রীয় ব্যাংকের প্রধান কার্যালয়ে ভোট অনুষ্ঠিত হয়।
এতে ১৫টি পদের মধ্যে নীল দলে থেকে নির্বাচিত হয়েছেন ৯ জন। তারা হলেন - সভাপতি একেএম মাসুম বিল্লাহ। সহ-সভাপতির তানভির আহমেদ, সাধারণ সম্পাদক গোলাম মোস্তফা শ্রাবণ, সহ-সম্পাদক এইউএম মান্না ভূইয়া, মোহাম্মদ তৌফিকুর রহমান খান, কোষাধ্যক্ষ আফসানা চৌধুরী, দপ্তর সম্পাদক সাগর সরকার।
এছাড়া নীল দল থেকে সদস্য নির্বাচিত হয়েছেন - মোস্তাক আহমেদ এবং প্রণয় রায় শুভ।
আওয়ামী পন্থীদের এই বিজয়কে ঘিরে ব্যাংক খাতে ইতিমধ্যে সমালোচনার ঝড় বয়ে যাচ্ছে। সংশ্লিষ্টরা বলছেন, আওয়ামী লীগের বিরুদ্ধে রাতের ভোটে নির্বাচনে জয় পাওয়ার অভিযোগ থাকলেও দেশের কেন্দ্রীয় ব্যাংকে তারা জয় পেয়েছেন দিনের ভোটেই। আর ফ্যাসিবাদি সরকারের পালিয়ে যাওয়ার পর বাংলাদেশ ব্যাংকে আওয়ামী পন্থীদের এমন বিজয়কে অর্থনীতির জন্য অশনি সংকেত হিসেবে দেখছেন খাত সংশ্লিষ্টরা।
ব্যাংকাররা বলছেন, আওয়ামী লীগের দীর্ঘ শাসনামলে দেশের আর্থিক খাতে যে লুটপাট চলেছে তার সঙ্গে প্রত্যক্ষভাবে জড়িত কেন্দ্রীয় ব্যাংকের কর্মকর্তারা। এতদিন তারা আওয়ামী লীগের চাপে বিভিন্ন অপকর্মে জড়িত হওয়ার অজুহাত উপস্থাপন করতো। এবারের নির্বাচনে প্রমাণ হয়েছে দেশের কেন্দ্রীয় ব্যাংক আওয়ামী দোসরদের কব্জায় রয়েছে।
নাম প্রকাশ না করে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের এক ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা বলেন, দেশের সকল খাতে আওয়ামী পন্থীরা কোণঠাসা হয়ে পড়লেও বাংলাদেশ ব্যাংকে ভিন্ন চিত্র। বিগত দুই গভর্নর ফজলে কবির এবং আব্দুর রউফ তালুকদারের সাজিয়ে যাওয়া ছকেই চলছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। কোন অপরাধীদের বিরুদ্ধে শাস্তি মূলক ব্যবস্থা নেয়নি বর্তমান গভর্নর আহসান এইচ মনসুর।
সরকার পতনের পর অপরাধীদের সকল অপকর্মের তথ্য ধামাচাপা দিয়ে রেখেছে বিশেষ গোষ্ঠী। বিভিন্ন অনিয়ম ঋণ জালিয়াতি এবং অর্থপাচারের তথ্য সাংবাদিকদের হাতে গেলে ওই কর্মকর্তাদের তালিকা তৈরি করে যারা বিশেষ গোয়েন্দা সংস্থার হাতে তুলে দিতেন তারাই এখনো দাপটের সঙ্গে বাংলাদেশ ব্যাংক শাসন করছেন।
দেশের আর্থিক খাতের নিয়ন্ত্রক সংস্থার এমন দশা হলে চলমান সংস্কার কিভাবে সফল হবে এমন প্রশ্ন রাখেন সংশ্লিষ্টরা।
অন্য প্যানেলগুলো থেকে বিজয়ীরা হলেন, সবুজ দল থেকে বিজয়ী একজন হলেন সহ-সভাপতি অমিতাভ চক্রবর্তী। আর হলুদ দল থেকে বিজয়ী পাঁচজন হচ্ছেন, সাংগঠনিক সম্পাদক রামেন্দু দাস পলাশ, প্রচার সম্পাদক শাহ মো. ইয়াকিমুল আলম, সদস্য শাহরিয়ার রহমান সামস, সাবিকুন নাহার শিরিন, আবিদ আলী মোগল।