বাংলাদেশ-মিয়ানমার সীমান্ত নিরাপদ আছে দাবি করেছেন স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) মো. জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী।
তিনি বলেছেন, আমাদের সীমান্ত পুরোপুরি সুরক্ষিত। এখানে কোনো সমস্যা নেই। তবে বাংলাদেশ-মিয়ানমার বর্ডারটা দখল করে আছে আরাকান আর্মি। ভবিষ্যতে এটা কার হবে? মিয়ানমার না কি আরাকান আর্মির তা বলা তো মুশকিল। সেজন্য বিজিবি উভয় পক্ষের সঙ্গে সম্পর্ক যোগাযোগ রক্ষা করে চলছে।
শনিবার (১ মার্চ) দুপুরে বিজিবির কক্সবাজার ব্যাটালিয়নের (৩৪ বিজিবি) প্রশিক্ষণ মাঠে আনুষ্ঠানিকভাবে পতাকা উত্তোলনের মাধ্যমে নবসৃজিত উখিয়া ব্যাটালিয়নের (৬৪ বিজিবি) উদ্বোধন করা হয়। উদ্বোধনের পরে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে একথা বলেন তিনি।
স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন, ৬৪ বিজিবি ব্যাটালিয়নের সঙ্গে আরও চারটি ব্যাটালিয়ন যুক্ত হলো। এতে বিজিবির সক্ষমতা কিছুটা বৃদ্ধি পেয়েছে। আমরা চেষ্টা করছি এ সংখ্যা আরও বাড়ানোর জন্য। কারণ পার্শ্ববর্তী দেশের তুলনায় আমাদের বিজিবির সক্ষমতা আরও বাড়ানো দরকার।
তিনি বলেন, এই এলাকা দিয়ে সবচেয়ে বেশি মাদক আসে। রোহিঙ্গা সমস্যা তো রয়েই গেছে, মাদক চোরাচালান বন্ধে এখানে এই নতুন ব্যাটালিয়ন খুবই দরকার ছিল। আশা করি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে।
- আরও পড়ুন
- সীমান্ত সুরক্ষা নিশ্চিতে আরাকান আর্মির সঙ্গে যোগাযোগ রাখা হচ্ছে
- স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টার পদত্যাগ চাইলেন ইলিয়াস কাঞ্চন
- রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসনে আন্তর্জাতিকভাবে চাপ প্রয়োগের আহ্বান
বর্ডারের মানুষ আতঙ্কে আছেন। বাংলাদেশ-মিয়ানমার বর্ডারে নিরাপত্তা প্রশ্নে আরাকান আর্মি নিয়ে আতঙ্ক সৃষ্টি হয়েছে। এ ব্যাপারে জানতে চাইলে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন, এখানে তো সত্যিই সমস্যা আছে। কারণ অন্যদেশ মিয়ানমার। কিন্তু বাংলাদেশ-ভারত বর্ডারটা দখল করে আছে আরাকান আর্মি। ভবিষ্যতে এটা কার হবে? মিয়ানমার নাকি আরাকান আর্মির তা বলা তো মুশকিল, আমরা অফিসিয়ালি জানিও না। তাই আমাদের উভয়পক্ষের সঙ্গেই সুসম্পর্ক রাখতে হচ্ছে।
রোহিঙ্গা ও মাদককে সমস্যা উল্লেখ করে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন, বাধার পরও ৬০ হাজারের মতো রোহিঙ্গা নতুন করে ঢুকে পড়েছে। অনেক সময় মানবিক কারণে সেটা বাধা দেওয়া যায় না। সঙ্গে বিদেশিদের একটা চাপ থাকে। এজন্য আমরাও তাদের সাহায্য সহযোগিতা বাড়াতে বলেছি। আর এটাও তো ঠিক যে যারা বাংলাদেশে আশ্রয় নিয়েছে তারা কিন্তু দীর্ঘদিন ধরে একটা জায়গায় আটকা। তারা আসতে পারছে অন্যান্য দেশ কিন্তু আমাদের প্রমিস করেছে তারা অন্যান্য দেশে নিয়ে যাবে। কিন্তু যা আসে তা যাওয়ার সংখ্যা খুবই কম, এটা আমরা বিভিন্ন অ্যাম্বাসেডরের সঙ্গে যখন দেখা হয় বলি।
তিনি আরও বলেন, সরকার এ ব্যাপারে যথেষ্ট সজাগ, সচেতন। এজন্য উপদেষ্টা সমমর্যাদার খলিলুর রহমান দায়িত্ব পালন করছেন। তিনিও চেষ্টা করে যাচ্ছেন, নেগোসিয়েশনের চেষ্টা চলছে। আশা করি সমস্যাটা দুটোই সমাধান হয়ে যাবে। আমাদের বর্ডার অনেক নিরাপদ। ছোটখাটো একটা সমস্যা সব বর্ডারেই থাকে।
সীমান্ত নিরাপত্তার কথা যখন আপনি বলছেন তখন ব্রাহ্মণবাড়িয়া কসবায় বিএসএফের গুলিতে বাংলাদেশির মৃত্যুর ঘটনা ঘটেছে- আপনি এ ব্যাপারে কী বলবেন? সীমান্ত হত্যা বন্ধের ব্যাপারে কিছুদিন আগে অনুষ্ঠিত বিজিবি ও বিএসএফের মহাপরিচালক পর্যায়ের সীমান্ত সম্মেলনে সবচেয়ে বেশি গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে। তারপরেও সীমান্ত হত্যার মতো ঘটনা ঘটে যাচ্ছে। এটা কমানোর জন্য আমরা চেষ্টা করে যাচ্ছি। যেহেতু এটা পুরোপুরি আমাদের হাতে নাই কারণ অস্ত্রটা তো তারা ব্যবহার করছে। আপনারা যা চাচ্ছেন আমি তো সেটা অফিসিয়ালি বলতে পারছি না।
টিটি/এমআরএম/এএসএম