উত্তরাঞ্চলের শস্যভাণ্ডার হিসেবে পরিচিত নওগাঁ জেলায় কুয়াশা জানান দিচ্ছে শীতের আগমনি বার্তা। আর এই আগাম শীতে স্থানীয় বাজারে আসতে শুরু করেছে ফুলকপি, শিম, টমেটোসহ নানান শীতকালীন শাকসবজি। এতে শুরুর দিকে দাম চড়া থাকলেও সপ্তাহের ব্যবধানে এসব সবজির দাম এখন কমতে শুরু করেছে। ন্যায্য মূল্য পেয়ে খুশি কৃষকরাও।
বৃহস্পতিবার (২৩ অক্টোবর) সকালে নওগাঁ শহরের গোস্তহাটির মোড় এলাকার পৌর পাইকারি বাজার ঘুরে এই চিত্র দেখা গেছে।
এদিন বাজার ঘুরে দেখা যায়, মানভেদে প্রতিকেজি ফুলকপি ৮০ টাকা থেকে ১০০ টাকা, সিম ১০০ টাকা থেকে ১১০ টাকা, টমেটো ১০০ টাকা থেকে ১১০ টাকা, মূলা ২৫ টাকা থেকে ৩০ টাকা, পালং শাক ৭০ টাকা থেকে ৮০ টাকা এবং লাল শাক ৩০ টাকা কেজি দরে বিক্রি করছেন ব্যবসায়ীরা।
তবে এক সপ্তাহ আগে মানভেদে প্রতি কেজি ফুলকপি ১৩০ টাকা থেকে ১৪০ টাকা, সিম ২০০ টাকা থেকে ২৫০ টাকা, টমেটো ১১০ টাকা থেকে ১২০ টাকা, মূলা ৩৫ টাকা থেকে ৪০ টাকা, পালং শাক ১০০ টাকা থেকে ১১০ টাকা এবং লাল শাক ৪০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হয়েছিল এই বাজারে।
সদর উপজেলার বাচারী গ্রাম থেকে এই বাজারে ফুলকপি বিক্রি করতে এসেছিলেন কৃষক জয়নাল হোসেন। দাম নিয়ে প্রতিক্রিয়া জানতে চাইলে এই কৃষক বলেন, ভালো দাম পাওয়ার আশায় প্রতি বছর শীতের আগেই আগাম শীতকালীন শাকসবজির আবাদ করি। এবারেও ২ বিঘা জমিতে ফুলকপি চাষ করেছিলাম। আবাদে খরচ হয়েছে সর্বোচ্চ ৭০ হাজার টাকা। ইতোমধ্যে ১ বিঘার কিছুটা কম পরিমাণ জমি থেকে প্রায় ৮০ হাজার টাকার ফুলকপি বিক্রি করেছি।
তিনি বলছেন, ৫ দিন আগেও এই ফুলকপি ১৩০ টাকা কেজি দরে বিক্রি করেছি। তবে এখন ৭৫ টাকা দরে পাইকারি ব্যবসায়ীদের কাছে বিক্রি করতে হচ্ছে। তবে এতেও আমি সন্তুষ্ট। গত বছর এই সময়ে বাজারে আকস্মিক ফুলকপির সরবরাহ অনেক বেড়ে যাওয়ায় আমরা ন্যায্য দাম থেকে বঞ্চিত হয়েছিলাম। সেই দিক বিবেচনায় এবার ভালো লাভ হচ্ছে।
পাইকারি সিম ব্যবসায়ী হোসেন লিটন হোসেন বলেন, অন্যান্য শাকসবজির দাম খুব বেশি না কমলেও কয়েকদিন ধরে বাজারে সিমের সরবরাহ কিছুটা বাড়তে শুরু করেছে। সে অনুযায়ী চাহিদা কম। এক সপ্তাহ আগে ২৫০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হওয়া সিম বর্তমানে ১১০ টাকা কেজি দরে বিক্রি করতে হচ্ছে। কৃষকের মাঠ থেকে প্রতি কেজি সিম ৯০ টাকা কেজি দরে আমরা সংগ্রহ করছি।
মূলা ব্যবসায়ী বেলাল হোসেন বলেন, এবার শীতকালীন আগাম শাকসবজির মধ্যে নওগাঁয় মূলার আবাদ কম হয়েছে। তাই পার্শ্ববর্তী বগুড়া জেলার মহাস্থান থেকে মূলা সংগ্রহ করতে হচ্ছে। ২০ টাকা কেজি দরে কেনার পর এসব মূলা বর্তমানে ২৫ টাকা কেজি দরে বিক্রি করছি। সরবরাহ বাড়তে থাকায় আগামীতে আরো দাম কমার সম্ভাবনা রয়েছে।
শহরের পার নওগাঁ মহল্লা থেকে পাইকারি বাজারে আসা ক্রেতা নীরব সর্দার বলেন, দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতির বাজারে কিছুটা কম দামে শাকসবজি কিনতে এখানে আসতে হয়। শীতকালীন আগাম শাকসবজির বর্তমান বাজার দর মোটামুটি হাতের নাগালেই আছে। তবে কয়েকটি দোকানে কৃষকদের থেকে ক্রয়মূল্যের চেয়ে অনেক বেশি দামে সবজি বিক্রি করতে দেখলাম ব্যবসায়ীদের। বাজার পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে প্রশাসনের এদিকে নজরদারি বাড়ানো উচিত।
আরমান হোসেন রুমন/কেএইচকে/এএসএম