দুই দিন আগেই এক ভিডিও বার্তার মাধ্যমে টেস্ট এবং প্রথম শ্রেণির ক্রিকেট থেকে অবসরের কথা জানিয়েছিলেন ইমরুল কায়েস। তবে এই বিদায় বেলায় তিনি সবচেয়ে বেশি স্মরণ করেছেন তার বাবাকে। যার অনুপ্রেরণায় মেহেরপুরের ইমরুল থেকে বাংলাদেশ দলের ইমরুল হয়ে উঠেছিলেন তিনি।
কয়েক বছর আগেই বাবাকে হারানো ইমরুল তাই এক ফেসবুক স্ট্যাটাসে লিখেছেন, ‘টেস্ট ক্রিকেট সবসময় আমার জন্য স্পেশাল ছিল। আমি ক্রিকেট খেলা শুরু করার পর থেকেই, নিজের দেশের হয়ে টেস্ট খেলার স্বপ্ন দেখতাম।
আর এই স্বপ্নটা দেখার জন্য যে মানুষটা আমাকে সবচেয়ে বেশি অনুপ্রেরণা এবং সাহস জুগিয়েছিলেন, সেই মানুষটা আজ আমার পাশে নাই! আমার থেকে অনেক দূরে আজ!’
ইমরুলের ক্রিকেটে আসার পথে বাবার অবদান কেমন ছিল, সেটা স্মরণ করে তিনি লেখেন, ‘সে মানুষটা না থাকলে হয়তো আমার ক্রিকেটার, কিংবা আজকের ইমরুল কায়েস হয়ে ওঠা হতো না। সেই মানুষটা আমার লাইফের সবচেয়ে স্পেশাল মানুষ, আমার বাবা!’
আমার বাবা সবসময় বলত, ‘যেদিন তুমি লর্ডস এ খেলবা, আর ব্যাট উঠাবা দর্শকদের দিকে, সেইদিন আমি হব সবচেয়ে সুখি মানুষ! মেহেরপুরে, আমার যখন মাত্র ৬-৭ বছর বয়স, তখন বাবা আমাকে একটা ক্রকেট ব্যাট বানিয়ে দিয়েছিলেন। তারপর তিনি বল করতেন, আমি ব্যাট করতাম।’
লর্ডসে খেলার সৌভাগ্য হয়েছিল ইমরুলের। ৭৫ রানের দারুণ এক ইনিংসও আছে তার। বাবার স্বপ্নকেই লালন করে গেছেন জানিয়ে তিনি লিখেন, ‘আমি সবসময় চেষ্টা করেছি, ক্রিকেটটাকে আমার বাবার আদর্শ আর সততার জালে ঘিরে রাখার। আমার টেস্ট ক্রিকেটের এই বিদায়বেলায় বাবা থাকলে হয়তো কিছুটা হলেও আমার আবেগ তার সঙ্গে শেয়ার করতে পারতাম। আজ বাবা নেই কিন্তু বাবার স্বপ্ন পূরণ করে মেহেরপুরের ইমরুল থেকে বাংলাদেশের ইমরুল কায়েস হয়ে উঠতে যারা আমাকে ভালোবাসা আর অনুপ্রেরণা যুগিয়েছেন, সেই বাংলাদেশের মানুষ, সেই আপনারা আজ আমার সঙ্গে আছেন!’
একইসঙ্গে কোচ, বিসিবি, গ্রাউন্ডস স্টাফ, আম্পায়ার, সাংবাদিকদেরও কৃতজ্ঞতা জানিয়ে তিনি লেখেন, ‘কৃতজ্ঞতা জানাতে চাই, আমার দেশের এবং দেশের বাইরের সেই মানুষদের প্রতি, যাদের সাপোর্ট এবং ভালোবাসা আমাকে ভালো খেলার সাহস ও শক্তি যুগিয়েছে বারবার।’
আগামীকাল নিজের ক্যারিয়ারের শেষ প্রথম শ্রেণির ম্যাচ খেলবেন ইমরুল। মিরপুর শেরেবাংরা জাতীয় ক্রিকেট স্টেডিয়ামে ঢাকা বিভাগের বিপক্ষে ম্যাচটিতে ভক্ত-সমর্থকদেরও পাশে চেয়েছেন তিনি।