ভারতীয় হাইকমিশনারকে তলবের দাবি

3 hours ago 3
বাংলাদেশে আর কোনো ভারতের সরকার মানা হবে না উল্লেখ করে গণঅধিকার পরিষদের সাধারণ সম্পাদক মো. রাশেদ খাঁন বলেছেন, সরকারকে বলবো, ২৪ ঘণ্টার মধ্যে ভারতীয় হাইকমিশনারকে তলব করুন। এমনভাবে জবাব দিন, যাতে ভবিষ্যতে এমন ঘটনা আর না ঘটে। রোববার (১৯ জানুয়ারি) বিকেল ৪টায় আল রাজী কমপ্লেক্সের সামনে অনুষ্ঠিত বিক্ষোভ সমাবেশে তিনি এসব কথা বলেন। চাঁপাইনবাবগঞ্জে ভারতীয় সীমান্তে বাংলাদেশি নাগরিকদের ওপর ভারতীয়দের হামলা, গাছ কর্তন ও আগ্রাসনের প্রতিবাদে এই বিক্ষোভ সমাবেশ করেছে গণঅধিকার পরিষদ ঢাকা মহানগর দক্ষিণ। বিক্ষোভ সমাবেশে রাশেদ খাঁন বলেন, চাঁপাইনবাবগঞ্জ সীমান্তে ভারতীয় বিএসএফ ও উগ্র ভারতীয়রা বাংলাদেশের জনগণের ওপর যে হামলা করেছে, তার জবাব ভারতের কাছে চাইতে হবে। সেখানে তো কেউ মারাও যেতে পারত। ইতোপূর্বে বাংলাদেশের নাগরিককে হত্যা করে সীমান্তের কাঁটাতারে ঝুলিয়ে রেখেছে বিএসএফ। হাসিনার পতন ঘটিয়ে ভারতের এই উগ্রতার জবাব দিয়েছে বাংলাদেশের জনগণ। তিনি আরও বলেন, বাংলাদেশে আর কোনো ভারতের সরকার মানা হবে না। ২য় বারের মতো বাংলাদেশ স্বাধীন হয়েছে। এই স্বাধীনতা আমাদের ধরে রাখতে হলে ভারতের চোখে চোখ রেখে কথা বলতে হবে। সরকারকে বলবো, ২৪ ঘণ্টার মধ্যে ভারতীয় হাইকমিশনারকে তলব করুন। এমনভাবে জবাব দিন, যাতে ভবিষ্যতে এমন ঘটনা আর না ঘটে। রাশেদ খাঁন বলেন, গতকাল চাঁপাইনবাবগঞ্জের সীমান্ত এলাকার মানুষ সাহসিকতার পরিচয় দিয়েছে। বিজিবিও সিংহের হুংকার দিয়েছে। কথা স্পষ্ট, সীমান্তে একটা লাশ পড়লে, ২টা লাশ ফেলতে হবে। ভারতকে আর দাদাগিরি করতে দেওয়া হবে না। এরপর থেকে সীমান্তে কোনো হত্যা হলে আন্তর্জাতিক আদালতে মামলা করতে হবে। ভারত বড় তো কি হয়েছে? আমরা কি তাদের কাছে নত হব? প্রতিবেশী রাষ্ট্র হিসেবে অন্যান্য দেশের সঙ্গে যে সম্পর্ক থাকে, ভারতের সঙ্গে একই সম্পর্ক থাকবে। এছাড়াও তিনি বলেন, আওয়ামী লীগ ভারতের সঙ্গে স্বামী-স্ত্রীর সম্পর্ক তৈরি করেছিল। তোমাদের স্ত্রী এখন তোমাদের দেশে চলে গেছে, আ.লীগের নেতারা চলে গেছে, তাদের সঙ্গে বোঝাপড়া কর। আমাদের সঙ্গে সম্পর্ক রাখতে হলে জনগণের পালস বুঝতে হবে। আমেরিকাকেও বলবো, ভারতের চোখ দিয়ে আর কোনো কূটনীতিক সম্পর্ক নয়, এখন থেকে সরাসরি চোখ দিয়ে বাংলাদেশের সঙ্গে সম্পর্ক রাখুন। ভারত মিডলম্যান হিসেবে থাকলে, সেই সম্পর্ক জনগণ আর মানবে না। দলের উচ্চতর পরিষদের সদস্য হাসান আল মামুন বলেন, প্রথমেই ধন্যবাদ জানাই আইন উপদেষ্টা ড. আসিফ নজরুলকে। দীর্ঘ ১৬ বছর কারাভোগের পর ১৯ জানুয়ারি ২৫৭ বিডিআর সদস্য জামিন পেয়েছেন। আমরা জানি আওয়ামী লীগ এবং ভারতের গোয়েন্দা সংস্থার মাস্টার প্ল্যান অনুযায়ী ২০০৯ সালের ২৫ ফেব্রুয়ারি ৬৭ সেনা অফিসারকে পিলখানায় নির্মমভাবে হত্যা করা হয়েছে আর দোষ চাপিয়েছিল নিরপরাধ বিডিআর সদস্যদের ওপর। তিনি বলেন, বিডিআর হত্যাকাণ্ডের মধ্যদিয়ে বাংলাদেশের সীমান্তকে এক প্রকার ভারতের হাতে তুলে দেওয়া হয়েছে। বিগত আওয়ামী লীগ আমলে প্রতি বছর গড়ে ১০০-এর অধিক বেসামরিক লোককে হত্যা করেছে। বিশ্বের সবচেয়ে বেশি প্রাণঘাতী সীমান্ত হচ্ছে ভারত-বাংলাদেশ সীমান্ত। আগামী দিনে এ দেশের মানুষ ভারতকে আর ছাড় দেবে না। এবার তিস্তা নদীর পানির ন্যায্য হিস্যা বুঝে নেওয়া হবে। দলের উচ্চতর পরিষদ সদস্য ও গণমাধ্যম সমন্বয়ক আবু হানিফ বলেন, আওয়ামী লীগ ক্ষমতাচ্যুত হওয়ার পর থেকে ভারতের ঘুম হারাম হয়ে গেছে। তারা আওয়ামী লীগকে পুনর্বাসন করার জন্য সীমান্তে পরিকল্পিতভাবে উত্তেজনা সৃষ্টি করছে। বাংলাদেশের মানুষ ভারতের আগ্রাসনের বিরুদ্ধে এখন ঐক্যবদ্ধ, ভারতকে তা অনুধাবন করতে হবে। আমরা ভারতের সঙ্গে ন্যায্যতার সম্পর্ক চাই, গোলামির সম্পর্ক না। সেনাবাহিনী দেশপ্রেমিক কিন্তু তাদের ভিতরেও আওয়ামি লীগের দোসর রয়েছে। যারা টাকার বিনিময়ে আওয়ামি লীগের নেতা গণহত্যা মামলার আসামিদের রক্ষা করছে। তাদের বিরুদ্ধে সোচ্চার না হলে আমাদের এই জুলাই গণঅভ্যুত্থানের বিজয় বেহাত হতে পারে। ঢাকা মহানগর দক্ষিণের সভাপতি অ্যাডভোকেট নাজিম উদ্দীনের সভাপতিত্বে, সাধারণ সম্পাদক নুরুল করিম শাকিলের সঞ্চালনায় আরও বক্তব্য দেন গণঅধিকার পরিষদের উচ্চতর পরিষদের সদস্য মাহফুজুর রহমান, হাবিবুর রহমান রিজু, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক হাবিবুর রহমান, প্রচার সম্পাদক শহিদুল ইসলাম, শ্রমিক অধিকার পরিষদের সভাপতি আব্দুর রহমান, পেশাজীবী অধিকার পরিষদের সভাপতি জাফর মাহমুদ, যুব অধিকার পরিষদের সাংগঠনিক সম্পাদক মুনতাজুল ইসলাম, ঢাকা মহানগর দক্ষিণের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক সোহেল রানা, ছাত্র অধিকার পরিষদ ঢাকা মহানগর দক্ষিণের সভাপতি অর্নব হোসাইন প্রমুখ।
Read Entire Article