আলোচিত ফটোসেশনের বাছুর পেলেন ১০ নারী

2 hours ago 3
বিভিন্ন গণমাধ্যমে পাবনার চাটমোহরে অবস্থিত বেসরকারি সংস্থা মানবসেবা উন্নয়ন সংস্থার বাছুর প্রদান সংক্রান্ত ফটোসেশনের সংবাদ প্রকাশের পর অবশেষে গাভির বাছুর বুঝে পেয়েছেন হতদরিদ্র ১০ নারী। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে খবরটি ভাইরাল হওয়ার পর এনজিওটির পক্ষ থেকে সুফলভোগীদের বাড়িতে পৌঁছে দেওয়া হয়েছে বাছুর। রোববার (১৯ জানুয়ারি) দুপুরে চাটমোহরের রেলবাজার এলাকায় অবস্থিত সংস্থার নিজস্ব কার্যালয়ে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে মানবসেবা উন্নয়ন সংস্থার নির্বাহী পরিচালক এমএস আলম বাবলু বিভিন্ন গণমাধ্যমে বাছুর নিয়ে ফটোসেশন শীর্ষক প্রকাশিত সংবাদকে মিথ্যা ও ভিত্তিহীন বলে দাবি করেছেন। লিখিত বক্তব্যে তিনি জানান, ১৯৯৮ সালে নিবন্ধিত হওয়ার পর থেকে তার সংস্থাটি পাবনা জেলায় থ্যালাসেমিয়া রোগীদের নিয়ে কাজ করে আসছে। পাশাপাশি স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন হিসেবেও বিভিন্ন উদ্যোগ বাস্তবায়ন করছে। বাংলাদেশ এনজিও ফাউন্ডেশনের সহায়তায় ইতোমধ্যে বিভিন্ন প্রকল্পের ১৪টি কাজ সম্পন্ন করেছে। বাংলাদেশ এনজিও ফাউন্ডেশনের (বিএনএফ) বিভিন্ন কর্মসূচি বাস্তবায়নের অংশ হিসেবে সম্প্রতি বিশেষ অনুদানে চাটমোহর উপজেলার একটি গ্রামের দশ নারীকে স্বাবলম্বী করতে ৫ লাখ টাকা বরাদ্দ পায় সংস্থাটি। এ বরাদ্দের প্রথম কিস্তির ৩ লাখ টাকাও পাওয়া যায়। এ অবস্থায় মানবসেবা উন্নয়ন সংস্থার মাধ্যমে দশ নারীকে ১০টি বাছুর কিনে দেওয়ার পদক্ষেপ নেওয়া হয়। সে মোতাবেক প্রশিক্ষণ শেষে গত ৩০ ডিসেম্বর বেজপাড়া গ্রামের দশ নারীকে ১০টি বাছুর দেওয়া হয়। তবে ওইদিন অতিরিক্ত কয়েকজন নারী এসেছিল। তাদের বলা হয়েছিল, তাদের পরে দেওয়া হবে। এমএস আলম বাবলুর অভিযোগ, বাছুর প্রদান করার পর থেকে একটি সুবিধাবাদী গোষ্ঠী আমার এনজিওর বিরুদ্ধে অপপ্রচার শুরু করে।  প্রকাশিত সংবাদ মিথ্যা ভিত্তিহীন দাবি করে তিনি বলেন, বাছুর বিতরণে কোনো অনিয়ম বা দুর্নীতি করা হয়নি। সাংবাদিকদের ভুল বুঝিয়ে মিথ্যা তথ্য দিয়ে সংবাদ পরিবেশন করা হয়েছে। গত ৩০ ডিসেম্বর প্রশিক্ষণ শেষে ওইদিন সন্ধ্যায় তাদের বাড়িতে গাভির বাছুর পৌঁছে দেওয়া হয়েছে। শরৎনগর হাট থেকে বাছুরগুলো কিনেছেন বলেও জানান তিনি। বাছুর কেনার রসিদ ও সুফলভোগী দশ নারীর তালিকাও দেখান তিনি। এ সময় সেখানে উপস্থিত সুফলভোগী কয়ক নারী বাছুর পাওয়ার কথা স্বীকার করেন। তবে, সুফলভোগী দশ নারীর তালিকা ধরে রোববার (১৯ জানুয়ারি) বিকেলে সরেজমিনে বেজপাড়া গ্রামে অনুসন্ধানে গিয়ে জানা গেছে, বিভিন্ন গণমাধ্যমে সংবাদটি ভাইরাল হওয়ার পর গত শুক্রবার (১৭ জানুয়ারি) রাতে তালিকাভুক্ত নারীদের বাড়িতে বাছুর পৌঁছে দেওয়া হয়েছে। এর আগে দেওয়া হয়নি। বেজপাড়া গ্রামের সুফলভোগী দশজনের মধ্যে সুলতানা পারভীন, রাশিদা খাতুন, জীবন নাহার বলেন, আমাদের ৩০ ডিসেম্বর বাছুর দেওয়া হয়েছে। কোহিনুর খাতুন নামের একজন জানান, প্রশিক্ষণ দিছে ৩০ ডিসেম্বর আর গরু পাইছি গত পরশুদিন (১৭ জানুয়ারি) রাতে। প্রতিবেশী ভ্যানচালক মোফাজ্জল হোসেন কাজলও নিশ্চিত করেন গত ১৭ জানুয়ারি রাতে একটি গাড়িতে করে বাছুরগুলো সবার বাড়িতে পৌঁছে দিয়েছে। উল্লেখ্য, গত ৩০ ডিসেম্বর ১০ নারীর হাতে বাছুরের দড়ি ধরিয়ে ফটোসেশন করে ডিম খিচুড়ি খাইয়ে বিদায় করা হয়। পরে তাদের বাছুর দেওয়া হবে বলে আর বাছুর দেওয়া হয়নি এমন অভিযোগ ওঠে সংস্থাটির নির্বাহী পরিচালকের বিরুদ্ধে। দেশের বিভিন্ন গণমাধ্যমে সংবাদ  প্রকাশিত হলে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে তা ভাইরাল হয়।
Read Entire Article