ক্ষমতার অপব্যবহার, অনিয়ম, দুর্নীতি, মামলা-বাণিজ্য, হয়রানি, অবৈধ সম্পদ অর্জন ও অর্থ পাচারের বিষয়ে পর্যটন মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সহকারী সচিব জিনিয়া জিন্নাত ও তার কথিত স্বামী আশরাফুজ্জামান ওরফে মিনহাজ উদ্দিন নামের একজনের বিরুদ্ধে অভিযোগ জমা দিয়েছেন ভুক্তভোগী এক ব্যক্তি।
রোববার (২৩ মার্চ) রাজধানীর সেগুনবাগিচায় দুর্নীতি দমন কমিশনে (দুদক) এমন অভিযোগ জমা দিয়েছেন ওই ব্যক্তি।
অভিযোগে বলা হয়েছে, অভিযুক্ত মিনহাজ উদ্দিনের নোয়াখালীর বেগমগঞ্জের মিরওয়ারিশপুরের আছাদ মিয়ার বাড়ির মো. হারুন অর রশিদের ছেলে। আর পর্যটন মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সহকারী সচিব জিনিয়া জিন্নাত বরিশালের বাবুগঞ্জের রাকুদিয়া গ্রামের রত্তন আলী শরীফের মেয়ে। রত্তন আলী শরীফ নিজেকে বীর প্রতীক দাবি করলেও নাকি ভুয়া মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে বলা হয় দুদকে জমা দেওয়া অভিযোগে।
৪০ পৃষ্ঠার দুটি আলাদা ফাইলে ১৩টি বিষয়ে অভিযোগ করেছেন ভুক্তভোগী ওই ব্যক্তি। অভিযোগে বলা হয়, ‘পর্যটন মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সহকারী সচিব জিনিয়া জিন্নাত ও তার কথিত স্বামী আশরাফুজ্জামান ওরফে মিনহাজ উদ্দিন ক্ষমতার অপব্যবহার, জালিয়াতি, প্রতারণা, মানুষকে ভয় দেখিয়ে এবং নিরীহ ব্যক্তিদের মামলায় যুক্ত করাসহ অবৈধভাবে টাকা উপার্জন, পাচার ও হয়রানি করে আসছেন। অনুসন্ধান সাপেক্ষে তার কঠোর শাস্তি হওয়া জরুরি।’
‘আশরাফুজ্জামান নামক ব্যক্তির উত্থান মূলত ২০০৮ সাল থেকে। ২০০৯ সালে সাহারা খাতুন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী হওয়ার আগেই তার পরিবারের এক সদস্যকে প্রেমের ফাঁদে ফেলেন আশরাফুজ্জামান ওরফে মিনহাজ উদ্দিন। এরপর ২০০৯ সালে সাহারা খাতুন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী হওয়ার পর তার তার পরিবারের জামাই পরিচয় দিয়ে সচিব, পুলিশ, বিচার বিভাগসহ বিভিন্ন বাহিনীর প্রভাবশালীদের সঙ্গে সম্পর্ক গড়ে মানুষের সঙ্গে প্রতারণা করে টাকা হাতিয়ে নেওয়া তার পেশা হয়ে ওঠে। নিজে পুলিশ, আমলা ও বিচার বিভাগকে ব্যবহার করে সাধারণ মানুষকে মামলায় ফেলে আবার মামলা থেকে বাঁচানোর নামে ভুক্তভোগীর পরিবার থেকে টাকা আদায় তার প্রধান ব্যবসা। এ ছাড়া কর্মকর্তাদের বিপদে ফেলে টাকা হাতিয়ে নেওয়াও তার পেশা। তার অপরাধ সম্পন্ন করতে যখন যাকে প্রয়োজন তাকে ব্যবহার করেন। তৎকালীন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী সাহারা খাতুনের পরিবারের জামাই পরিচয় ব্যবহার করায় সাহারা খাতুন নিজেই তাকে একবার কারাগারে পাঠিয়েছিলেন।’
‘ওই ব্যক্তি নিজেকে ডক্টর দাবি করলেও তা ভুয়া। অপরাধের টাকা বিদেশে পাচার করার অভিযোগও রয়েছে তার এবং জিনিয়া জিন্নাতের বিরুদ্ধে। ৯৬-এর ওপরে ব্যাংক অ্যাকাউন্টের তথ্য পাওয়া যায় আশরাফুজ্জামান মিনহাজের। মানুষকে বিপদে ফেলে টাকা নেওয়া হয়ে গেলে তিন থেকে ছয় মাসের মধ্যে অ্যাকউন্টগুলো বন্ধ করে দেন তিনি। মিনহাজ উদ্দিন নামে এই প্রতারক অধিকাংশ সময়ে থাকেন বিভিন্ন সার্কিট হাউসে। বর্তমানে জিনিয়া জিন্নাত ও তাহমিনা আক্তার তিন্নি, এক নারী জজ এবং স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী সাহারা খাতুনের পরিবারের এক সদস্য ও বিদেশে থাকা এক নারীকে জায়গা বুঝে স্ত্রী পরিচয় দিয়ে থাকেন। তবে এসব নারীর মধ্যে জিনিয়া জিন্নাতই কেবল ওই ব্যক্তিকে মিনহাজ উদ্দিন নামে তার স্বামী হিসেবে উল্লেখ করেন টাঙ্গাইলের সহকারী কমিশনার ভূমি নাজমুল হাসানের কাছে। জিনিয়া জিন্নাত ও ওই ব্যক্তির একাধিক নামের পাশাপাশি একাধিক জাতীয় পরিচয়পত্র ও পাসপোর্ট ব্যবহারের অভিযোগ রয়েছে। অভিযোগ রয়েছে, জিনিয়া জিন্নাতের বাবা ভুয়া মুক্তিযোদ্ধা হলেও ওই কোটায় বিসিএস ক্যাডার হয়েছেন তিনি। আর জিনিয়া জিন্নাতের বাবাকে ভুয়া মুক্তিযোদ্ধা বানাতেও সহায়তা করেছেন এই প্রতারক মিনহাজ উদ্দিন।’
লিখিত অভিযোগের ফাইল ঘেঁটে দেখা যায়, অভিযোগকারী ১৩টি অভিযোগ জমা দিয়েছেন জিনিয়া জিন্নাতের বিরুদ্ধে। প্রথম অভিযোগে বলা হয়, ‘বাবা মুক্তিযোদ্ধা না হলেও সেই কোটায় জিনিয়া জিন্নাত বিসিএস ক্যাডার উত্তীর্ণ হয়েছেন। সহকারী কমিশনার (ভূমি), উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) হওয়ার পর বর্তমানে তিনি পর্যটন মন্ত্রণালয়ে সিনিয়র সহকারী সচিব পদে নিয়োজিত আছেন। অনুসন্ধান সাপেক্ষে চাকরি থেকে অপসারণসহ তার বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়া জরুরি। তার বাবা রতন শরীফ যুদ্ধাহত মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে সরকারি সব সুযোগ-সুবিধা ভোগ করছেন। শেখ হাসিনার দেওয়া বীর প্রতীক উপাধিতে তিনি করপোরাল পদবি ব্যবহার করেছেন। তার মানে তিনি সেনাবাহিনী থেকে মুক্তিযুদ্ধ করেছেন। কিন্তু গেজেটে দাবি করেছেন, তিনি বিমানবাহিনী থেকে মুক্তিযুদ্ধ করেছেন এবং অবসরে গেছেন ফ্লাইট লেফটেন্যান্ট হিসেবে। আবার অন্য এক গেজেটে দাবি করেছেন তিনি পুলিশ বাহিনী থেকে মুক্তিযুদ্ধ করেছেন। তার নামে আট রকম তথ্য পাওয়া যায়। আসল মুক্তিযোদ্ধার এই নাম ব্যবহার করে রতন শরীফ নিজেকে বীর প্রতীক দাবি করেন, যা তদন্তে বেরিয়ে আসবে।’
দ্বিতীয় অভিযোগে বলা হয়, ‘স্বামীর পরিচয় না থাকলেও অনৈতিক সম্পর্কে গর্ভের সন্তানকে হত্যা করেছিলেন টাঙ্গাইলের গোপালপুরের সাবেক সহকারী কমিশনার (ভূমি) জিনিয়া জিন্নাত, যা শাস্তিযোগ্য অপরাধ হলেও তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি। সন্তানের পিতা কেম তা নিশ্চিত হওয়া না গেলেও অতিগোপনে গর্ভের সন্তান হত্যার ফলে অসুস্থ হয়ে পড়েন জিনিয়া জিন্নাত। টাঙ্গাইলের ২৫০ শয্যাবিশিষ্ট জেনারেল হাসপাতালের গাইনি বিভাগের ওয়ার্ড নম্বর ডব্লিউ থ্রির বি-১০ নম্বর বেডে দুদিন (০১/০৮/২০১৮ থেকে ০২/০৮/২০১৮) ভর্তি ছিলেন জিনিয়া। রোগীর ছাড়পত্রে স্বামীর নাম নেই। এ জন্য অসুস্থতার কারণ দেখিয়ে ১২/০৮/২০১৮ থেকে ০৪/০৯/২০১৮ পর্যন্ত ২৪ দিন ছুটি কাটান। ছুটি ভোগের প্রায় মাসখানেক পর অসুস্থকালীন ছুটি মঞ্জুরের নথিতে ১২/১১/২০১৮ তারিখে স্বাক্ষর করেন তৎকালীন টাঙ্গাইল জেলা প্রশাসক মো. শহীদুল ইসলাম।’
তৃতীয় অভিযোগে বলা হয়েছে, ‘জিনিয়া জিন্নাত নরসিংদীর শিবপুরে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা থাকাকালে তার কথিত স্বামী মিনহাজ জিনিয়ার ব্যবহৃত সরকারি গাড়ি ও গানম্যান ব্যবহার করে নিজেই ম্যাজিস্ট্রেট সেজে বেরিয়ে পড়তেন অভিযানে। একদিন দুটি গাড়ি জব্দ করেন দুলালপুর থেকে এবং সেগুলো আলাদা চালক দিয়ে নিজের হেফাজতে নেন। এ কাজে সহযোগিতা করতেন জিনিয়া। বিষয়টি নিয়ে তাকে শোকজও করা হয়েছিল, কিন্তু পরে বিষয়টি চাপা পড়ে যায়। এ ছাড়া তার কথিত স্বামী বিভিন্ন মানুষের কাছ থেকে চালকদের পাঠিয়ে গাড়িতে বসে থেকে চাঁদা আদায় করতেন। সরকারি গাড়ি ব্যবহার করে ঘুরতেন দেশের বিভিন্ন স্থানে। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার ব্যক্তিগত গাড়িতে জ্বালানি নিয়ে টাকা পরিশোধ না করে চালককে দিয়ে পাম্পের খাতায় স্বাক্ষর করিয়ে রাখতেন। নেশা করার জন্য বারেও যেতেন নিয়মিত। এসব অপরাধের প্রতিবাদ করায় চালকদের বেতন না দিয়ে অব্যাহতি দিতেন মিথ্যা অভিযোগ দিয়ে। আর সার্বিক অপরাধে সহযোগিতা করতেন জিন্নাত। তিনি নিয়মিত অফিসে হাজির না হওয়ারও অভিযোগ আছে।’
চতুর্থ অভিযোগে বলা হয়েছে, ‘জিনিয়া জিন্নাত শিবপুরে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা থাকাকালে তার কথিত স্বামীর কথায় পৌরসভার সরকারিভাবে নিয়োগপ্রাপ্ত ড্রাইভারকে বেতন-ভাতা না দিয়ে ডিউটিকালে তার কাছ থেকে নানাভাবে টাকা নিতেন। এখনো এ চালক রুবেল মিয়া চার লাখের বেশি টাকা পান তার কাছে। কথিত স্বামী পরিচয় দেওয়া ব্যক্তির অপরাধ জায়েজ করতে রুবেল মিয়াকে অন্যায়ভাবে চাকরিচ্যুত করেন জিনিয়া। চাকরি ফেরত চাইতে গেলে রুবেলকে অপমান করে বের করে দেন।’
পঞ্চম অভিযোগে বলা হয়, ‘জিনিয়া জিন্নাত নরসিংদীর শিবপুরে ইউএনও থাকাকালে অফিস শেষে ক্ষমতার অপব্যবহার করে কথিত স্বামীকে নিয়ে দেশের বিভিন্ন স্থানে প্রটোকল নিয়ে ঘুরতেন। গাড়ির জ্বালানি, আনসার সদস্য ও তাদের যাবতীয় খরচ বহন করতে হতো চালক ইদ্রিস আলীকে। একদিন সরকারি গাড়ি ব্যবহার করে নোয়াখালী যান কথিত স্বামীর সঙ্গে। অবশেষে বেতন না দিয়ে চাকরি থেকে বের করে দেন ইদ্রিসকে। তার কাছে চালক ইদ্রিস প্রায় দুই লাখ টাকার বেশি পাওনা।’
ষষ্ঠ অভিযোগে বলা হয়, ‘শিবপুরে ইউএনও থাকা অবস্থায় সরকারি গাড়ি মেরামতের খরচ না দিয়ে গাড়ির পার্টস ও ইঞ্জিন নাড়াচাড়া করে চালক রুবেল গাড়ি নষ্ট করেছেন, এমন অভিযোগে তাকে শোকজ করেন জিনিয়া। পাশাপাশি সরকারি ও ব্যক্তিগত গাড়ির জ্বালানি সংগ্রহ করে সই করাতেন রুবেলকে দিয়ে। পরে সেই টাকা পরিশোধ না করে রুবেলের ওপর দোষ চাপান এবং মিথ্যা মামলার হুমকি দেন। একদিন শোকজের মাধ্যমে রুবেলকে চাকরি থেকে বরখাস্ত করেন। এখন চাকরি ফেরত, ক্ষতিপূরণ এবং জিনিয়া জিন্নাত ও তার কথিত স্বামীর শাস্তি চান ভুক্তভোগী রুবেল।’
সপ্তম অভিযোগে বলা হয়, ‘জিনিয়া জিন্নাত শিবপুরে ইউএনও থাকাকালে ঈদুল আজহার দিন কোরবানি দিয়ে চুক্তি করা কসাইয়ের টাকা পরিশোধ করেননি।’
অষ্টম অভিযোগে বলা হয়েছে, ‘২০২৪ সালের ৪ জানুয়ারি টাঙ্গাইলের গোপালপুর উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) থাকাকালে তার কথিত স্বামী মিনহাজ গোপালপুর ভ্রমণে যাবেন, এ কারণে তার ভ্রমণের সব বন্দোবস্ত করতে জিনিয়া জিন্নাত নির্দেশ দেন তৎকালীন ভূমি সহকারী কর্মকর্তা নাজমুল হাসানকে। এ ছাড়া সাধারণ ব্যক্তি হয়েও কথিত স্বামী সহকারী কমিশনারের চেয়ারে বসে সবাইকে নিয়ে খাবার গ্রহণ করেন ও ছবি তোলেন। বিষয়টি নিয়ে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে লিখিত অভিযোগ দেন নাজমুল হাসান। কিন্তু এমন অপরাধের কোনো ব্যবস্থা নেয়নি কর্তৃপক্ষ।’
নবম অভিযোগে বলা হয়, ‘জিনিয়ার ম্যাজিস্ট্রেসি ক্ষমতা ব্যবহার করে কথিম স্বামী মিনহাজ মামলা-বাণিজ্য করেন। নিরীহ মানুষের নাম মামলায় যুক্ত করে তাদেরই আবার মামলা থেকে বাঁচানোর কথা বলে টাকা আদায় করা ছিল তার ব্যবসা। নোয়াখালীসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে বহু মানুষকে হয়রানি করছেন তারা দুজন। নোয়াখালীতে নিজ এলাকায় অন্তত ১০ জনকে তিনি মামলায় ফাঁসানোর অভিযোগ রয়েছে। এমনকি নিজের বাবা হারুনুর রশিদকে মামলা দিয়ে জেল খাটিয়েছেন আশরাফুজ্জামান মিনহাজ ও জিনিয়া জিন্নাত চক্র।’
দশম অভিযোগে বলা হয়েছে, ‘জিনিয়া জিন্নাত নরসিংদীর শিবপুরের ইউএনও থাকা অবস্থায় তার বিরুদ্ধে সরকারি গাড়ি ব্যবহারে অনিয়ম ও সরকারি ফোন নিয়ে ভারতে প্রশিক্ষণে যাওয়ার বিষয়ে শোকজ করা হয়। ২০২৩ সালের ১ জুন তাকে এই শোকজ করা হয়। সব শোকজের নথি ও তার জবাব প্রভাব খাটিয়ে সরিয়ে ফেলেন তিনি।’
১১ নম্বর অভিযোগে বলা হয়, ‘জিনিয়া জিন্নাত ও তার কথিত স্বামীর ঘুষ-বাণিজ্য, দুর্নীতি ও অনিয়মে অতিষ্ঠ ছিল এলাকাবাসী। জিনিয়া জিন্নাতের বদলির খবরে নরসিংদীর শিবপুরের সাধারণ মানুষ ওই দিন মিষ্টি বিতরণ করেন, যা বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমে উঠে এসেছে।’
১২ নম্বর অভিযোগে বলা হয়, ‘আশরাফুজ্জামান ওরফে মিনহাজ উদ্দিন কানাডার ইয়র্ক ইউনিভার্সিটিতে নিজেকে রিসার্চার দাবি করেছেন। কিন্তু তারই দেওয়া তথ্যে দেখা গেছে, তিনি রিসার্চার হিসেবে কাজ করেন ২০১০ সাল থেকে কিন্তু সেখানে তার ছাত্রত্ব শুরু হয় ২০১১ সাল থেকে। অর্থাৎ শিক্ষার্থী হওয়ার আগেই শিক্ষক সেজে বসে আছেন।’
অভিযোগে বলা হয়, ‘রতন নিজেকে যুদ্ধাহত মুক্তিযোদ্ধা দাবি করলেও তার চিকিৎসা সনদ পাওয়া যায়নি। এসব অসঙ্গতির পাশাপাশি অভিযোগ পাওয়া যায় তিনি আসল রতন শরীফ মুক্তিযোদ্ধা নন এবং প্রভাব খাটিয়ে বিভিন্ন তালিকায় নাম উঠিয়েছেন। জাতীয় পরিচয়পত্র অনুযায়ী তার নাম ঠিকানা : মো. রত্তন আলী শরীফ বীর প্রতীক, পিতা. নুর মোহাম্মদ শরীফ, মাতা. কদভানু, গ্রাম. রাকুদিয়া, ডাকঘর. রাকুদিয়া, থানা. বাবুগঞ্জ, জেলা. বরিশাল।’
এ অবস্থায় বিষয়টি স্পর্শকাতর হওয়ায় অনুসন্ধান সাপেক্ষে ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য সব তথ্য যাচাই সাপেক্ষে মুক্তিযোদ্ধা স্বীকৃতি বাতিল, রাষ্ট্রীয় সব সুযোগ-সুবিধা ফেরত এবং কঠোর শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি জানানো হয়েছে অভিযোগে।
পাহাড়সম অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে প্রথমে অস্বীকার করেন পর্যটন মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সহকারী সচিব জিনিয়া জিন্নাত। বিভিন্ন স্থানে স্বামী পরিচয় দেওয়া অভিযুক্ত ব্যক্তির নাম আশরাফুজ্জামান মিনহাজ কে, জানতে চাইলে তিনি বলেন, এই নামে তিনি কাউকে চেনেন না। পরে ওই ব্যক্তির ছবি তাকে দেখালে তিনি স্বীকার করে বলেন, অভিযুক্ত মিনহাজ তার স্বামী।