বামপন্থি গোষ্ঠী অ্যান্টিফাকে সন্ত্রাসী সংগঠন ঘোষণা করলেন ট্রাম্প

5 hours ago 1

যুক্তরাষ্ট্রের বামপন্থি গোষ্ঠী অ্যান্টিফাকে দেশের ‘অভ্যন্তরীণ সন্ত্রাসী সংগঠন’ হিসেবে ঘোষণা করেছেন দেশটির প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। সোমবার (২২ সেপ্টেম্বর) হোয়াইট হাউজে এ সংক্রান্ত এক নির্বাহী আদেশে স্বাক্ষর করেন তিনি। সাধারণত এ ধরনের তালিকাভুক্তি বিদেশি সশস্ত্র সংগঠনের ক্ষেত্রে প্রযোজ্য হয়, তবে এবার তার ব্যতিক্রম ঘটালেন ট্রাম্প।

নির্বাহী আদেশে বলা হয়েছে, আইনসম্মত রাজনৈতিক কর্মকাণ্ড দমনের উদ্দেশ্যে রাজনৈতিক সহিংসতার আশ্রয় নেওয়ায় অ্যান্টিফাকে অভ্যন্তরীণ সন্ত্রাসী সংগঠন হিসেবে তালিকাভুক্ত করা হলো। এখন থেকে অ্যান্টিফার পক্ষে বা তাদের সহায়তায় কাজ করা যেকোনো ব্যক্তির বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া যাবে।

আদেশে অ্যান্টিফাকে ‘সামরিক নৈরাজ্যবাদী গোষ্ঠী’ হিসেবে আখ্যা দেওয়া হয়েছে। বলা হয়েছে, যুক্তরাষ্ট্রের সরকার উৎখাতের লক্ষ্যে সংগঠনটি সহিংসতা ও সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড করে যাচ্ছে। এক বিবৃতিতে ট্রাম্প বলেন, অ্যান্টিফা হলো ‘অসুস্থ, বিপজ্জনক, উগ্র বাম বিপর্যয়’। তাদের সব কর্মকাণ্ডের পূর্ণাঙ্গ তদন্ত করা হবে।

২০১৭ সালের জানুয়ারিতে ট্রাম্পের প্রথম শপথ গ্রহণ অনুষ্ঠানের সময় কালো পোশাক ও মুখোশ পরা অ্যান্টিফা সদস্যরা ওয়াশিংটনে ভাঙচুর চালান ও একটি গাড়ি পুড়িয়ে দেন। ট্রাম্প দাবি করেন, পুলিশবিরোধী সহিংসতা থেকে শুরু করে ২০২১ সালের ৬ জানুয়ারির ক্যাপিটল হামলার পেছনেও অ্যান্টিফা জড়িত।

এদিকে, ট্রাম্পের সমালোচকরা বলছেন, সন্ত্রাসী সংগঠন ঘোষণার মতো পদক্ষেপ ভিন্নমত দমনের অজুহাত ও রাজনৈতিক প্রতিপক্ষকে লক্ষ্যবস্তু করার হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার করা হতে পারে।

অ্যান্টিফা মূলত ‘অ্যান্টি-ফ্যাসিস্ট’ বা ‘ফ্যাসিবাদবিরোধী’র সংক্ষিপ্ত রূপ। শব্দটি এসেছে জার্মান ‘অ্যান্টিফাসচিস্টিশ’ থেকে, যার সূত্রপাত ১৯৩০-এর দশকে হিটলারবিরোধী সমাজতান্ত্রিক গোষ্ঠীগুলো থেকে। যুক্তরাষ্ট্রে এর উপস্থিতি কয়েক দশকের হলেও ২০১৭ সালে ট্রাম্পের প্রথম নির্বাচনী বিজয়ের পর এটি আলোচনায় আসে।

অ্যান্টিফা সমর্থকদের প্রায়ই পুরোপুরি কালো পোশাকে দেখা যায়। বর্ণবাদ, অতি ডানপন্থি কর্মকাণ্ডের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করেন তারা। আত্মরক্ষায় কখনো কখনো সহিংস পন্থা বেছে নেওয়ার প্রয়োজন হতে পারে বলেও বিশ্বাস করেন তারা।

ট্রাম্প দীর্ঘদিন ধরেই অ্যান্টিফাকে যুক্তরাষ্ট্রের জন্য ‘চরম বিপদ’ হিসেবে প্রচার করে আসছেন। ২০২০ সালে তিনি এটিকে সন্ত্রাসী ঘোষণা করার হুমকি দিয়েছিলেন, তবে তা বাস্তবায়িত হয়নি। এবার তিনি ডানপন্থি অ্যাক্টিভিস্ট ও নিজের ঘনিষ্ঠ মিত্র চার্লি কার্কে হত্যাকাণ্ড কেন্দ্র করে বাম সহিংসতার বিরুদ্ধে লড়াইয়ের প্রতিশ্রুতিকে কার্যকর করলেন।

১০ সেপ্টেম্বর ইউটাহর একটি বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে বক্তব্য দেওয়ার সময় চার্লি কার্ক খুন হন। সন্দেহভাজন বন্দুকধারী ২২ বছর বয়সী টাইলার রবিনসনের বিরুদ্ধে হত্যা মামলা হয়েছে। তদন্তকারীদের বরাতে বলা হয়েছে, কার্ক ‘বিদ্বেষ’ ছড়াচ্ছিলেন- এমন যুক্তিতেই হত্যাকাণ্ডকে ন্যায্য বলে মনে করছেন রবিনসন।

সূত্র: বিবিসি

এসএএইচ

Read Entire Article