বারবার পেটব্যথা ও গ্যাস্ট্রিক হতে পারে বড় রোগের লক্ষণ
বাংলাদেশে পেটব্যথা, অ্যাসিডিটি, গ্যাস্ট্রিক — এসবকে ঘরোয়া সমস্যা মনে করে মানুষ বেশিরভাগ সময়ই গুরুত্ব দেয় না। কেউ ভাবে বেশি ঝাল খাওয়ার জন্য হয়েছে হয়তো, কেউ ভাবে এক কাপ পানির ওপরে অ্যান্টাসিড হলেই সব ঠিক। কিন্তু এই অভ্যাসটাই অনেক সময় বিপদ ডেকে আনে। কারণ দীর্ঘদিনের পেটব্যথা বা ডায়রিয়ার পেছনে থাকতে পারে ইনফ্লেমেটরি বাওয়েল ডিজিজ (আইবিডি) - যার প্রধান দুটি ধরন হলো ক্রোনস ডিজিজ এবং আলসারেটিভ কোলাইটিস। এই দুই রোগ সাধারণত ধীরে ধীরে আক্রমণ করে। প্রথমে সামান্য ব্যথা, খাবার হজমে সমস্যা বা মাঝে মাঝে পাতলা পায়খানা — এসব দেখে আমরা গ্যাস্ট্রিক ধরে নিই। মাসের পর মাস যখন একই লক্ষণ চলে, তখনো অনেকেই ডাক্তার দেখাতে চান না। আর এখানেই তৈরি হয় ঝুঁকি। কারণ আইবিডি হলো দীর্ঘস্থায়ী অন্ত্রের প্রদাহ, যা সময়মতো ধরা না পড়লে অন্ত্রের ক্ষত, রক্তক্ষরণ, এমনকি অপারেশনের পর্যায় পর্যন্ত রোগকে ঠেলে দিতে পারে। কাদের মধ্যে বেশি দেখা যায়? আন্তর্জাতিক গবেষণায় দেখা যায়, ক্রোনস ও কোলাইটিস সাধারণত ১৫–৩৫ বছর বয়সীদের মধ্যেই বেশি দেখা যায়। অর্থাৎ রোগটি মূলত তরুণদেরই প্রভাবিত করে — যা আমাদের দেশের প্রেক্ষাপটে আরও বেশি উদ্বেগের। কারণ তর
বাংলাদেশে পেটব্যথা, অ্যাসিডিটি, গ্যাস্ট্রিক — এসবকে ঘরোয়া সমস্যা মনে করে মানুষ বেশিরভাগ সময়ই গুরুত্ব দেয় না। কেউ ভাবে বেশি ঝাল খাওয়ার জন্য হয়েছে হয়তো, কেউ ভাবে এক কাপ পানির ওপরে অ্যান্টাসিড হলেই সব ঠিক। কিন্তু এই অভ্যাসটাই অনেক সময় বিপদ ডেকে আনে।
কারণ দীর্ঘদিনের পেটব্যথা বা ডায়রিয়ার পেছনে থাকতে পারে ইনফ্লেমেটরি বাওয়েল ডিজিজ (আইবিডি) - যার প্রধান দুটি ধরন হলো ক্রোনস ডিজিজ এবং আলসারেটিভ কোলাইটিস।
এই দুই রোগ সাধারণত ধীরে ধীরে আক্রমণ করে। প্রথমে সামান্য ব্যথা, খাবার হজমে সমস্যা বা মাঝে মাঝে পাতলা পায়খানা — এসব দেখে আমরা গ্যাস্ট্রিক ধরে নিই। মাসের পর মাস যখন একই লক্ষণ চলে, তখনো অনেকেই ডাক্তার দেখাতে চান না। আর এখানেই তৈরি হয় ঝুঁকি।
কারণ আইবিডি হলো দীর্ঘস্থায়ী অন্ত্রের প্রদাহ, যা সময়মতো ধরা না পড়লে অন্ত্রের ক্ষত, রক্তক্ষরণ, এমনকি অপারেশনের পর্যায় পর্যন্ত রোগকে ঠেলে দিতে পারে।
কাদের মধ্যে বেশি দেখা যায়?
আন্তর্জাতিক গবেষণায় দেখা যায়, ক্রোনস ও কোলাইটিস সাধারণত ১৫–৩৫ বছর বয়সীদের মধ্যেই বেশি দেখা যায়। অর্থাৎ রোগটি মূলত তরুণদেরই প্রভাবিত করে — যা আমাদের দেশের প্রেক্ষাপটে আরও বেশি উদ্বেগের। কারণ তরুণরা সাধারণত লক্ষণ গোপন করে, আবার কেউ কেউ এমন সমস্যাকে লজ্জার বিষয় মনে করেন।
সাধারণ লক্ষণ যেগুলোকে গ্যাস্ট্রিক ভেবে ভুল হয়
দীর্ঘদিনের পেটব্যথা, পাতলা পায়খানা, রক্তমিশ্রিত মল, দুর্বলতা, হঠাৎ ওজন কমে যাওয়া, খাওয়ার পর তীব্র অস্বস্তি — এসবই আইবিডির সাধারণ সংকেত। কিন্তু মানুষ ভেবে নেয় — এটা তো আমার গ্যাস্ট্রিকের পুরনো সমস্যা। এই ভুল ধারণাই রোগকে নীরবে বড় হতে দেয়।
বাংলাদেশে রোগ দেরিতে ধরা পড়ে কেন?
আমাদের দেশে অন্ত্রের রোগ নিয়ে সচেতনতা খুবই কম। অনেক সময় ডাক্তারদের কাছেও রোগগ্রস্তরা পৌঁছান তখনই, যখন প্রদাহ অনেকটাই বেড়ে গেছে। সঠিক সময়ের পরীক্ষা —কোলোনোস্কপি, স্টুল টেস্ট, সিটি স্ক্যান — এসব না করায় রোগের অগ্রগতি দ্রুত বাড়ে।
সাবধানতায় কী করবেন?
>> ৩–৪ সপ্তাহ ধরে যেকোনো পেটের সমস্যা চললে ডাক্তার দেখান।
>> বারবার অ্যান্টাসিড, অ্যান্টিবায়োটিক বা ঘরোয়া ওষুধ খেয়ে সময় নষ্ট করবেন না।
>> নিয়মিত পানি পান, কম ঝাল-তেল, প্রসেসড ফুড কমানো — অন্ত্রের প্রদাহ কমাতে সহায়ক।
>> স্ট্রেস কমানো অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। এ নিয়ে হার্ভার্ড মাইন্ড-গাট গবেষণাতেও জোর দেওয়া হয়েছে।
ক্রোনস ও কোলাইটিস ভয় পাওয়ার মতো রোগ, তবে দেরিতে ধরা পড়লে। সময়মতো বিশ্লেষণ, পরীক্ষানিরীক্ষা আর খাদ্যাভ্যাসে পরিবর্তন আনতে পারলে জীবনযাপন স্বাভাবিক রাখা সম্ভব। এই রোগের ক্ষেত্রে প্রথম সাবধানতা হলো সচেতন থাকা। কারণ নীরব পেটব্যথাই বড় রোগের ট্রিগার হয়ে দাঁড়াতে পারে।
সূত্র: ক্রোনস অ্যান্ড কোলাইটিস ফাউন্ডেশন (ইউএসএ); হার্ভার্ড হেলথ পাবলিশিং; ক্লিভল্যান্ড ক্লিনিক
এএমপি/এমএস
What's Your Reaction?