বাস কেনা-বেচার বিরোধের জেরে রাইদা ডিপোর মালিককে হত্যা

3 months ago 8

রাজধানীর তুরাগ এলাকায় রাইদা বাস ডিপোর মালিক আনোয়ার হোসেন সিকদার হত্যার চাঞ্চল্যকর ক্লুলেস ঘটনার রহস্য উদঘাটনসহ তিনজনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।

গ্রেফতাররা হলেন- মো. সবুজ ফকির (২৮), কালাম (২২) ও মো. শাকিল (১৮)। গ্রেফতারদের দেওয়া তথ্যমতে হত্যাকাণ্ডে ব্যবহৃত একটি লোহার পাইপ উদ্ধার করা হয়েছে।

পুলিশ বলছে, বাস কেনা-বেচার বিরোধের জেরে রাইদা বাস ডিপোর মালিক আনোয়ারকে হত্যার পর মাটিচাপা দিয়ে লাশ গুমের চেষ্টা করা হয়।

সোমবার (২৬ মে) দুপুরে ডিএমপি মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা জানান উত্তরা বিভাগের উপ-পুলিশ কমিশনার (ডিসি) মো. মুহিদুল ইসলাম।

বাস কেনা-বেচার বিরোধের জেরে রাইদা ডিপোর মালিককে হত্যা

তিনি বলেন, তুরাগ থানার দিয়াবাড়ি মেট্রো গোলচত্বর এলাকায় অবস্থিত রাইদা বাস ডিপোর মালিক আনোয়ার হোসেন সিকদার (৫৩) গত ১৭ জানুয়ারি সকাল ৯টার দিকে বাসা থেকে রাইদা ডিপোর উদ্দেশে বের হন। ওইদিন সন্ধ্যা পর্যন্ত তিনি বাসায় ফিরে না আসায় এবং ফোন রিসিভ না করায় তার পরিবারের সদস্যরা বিভিন্ন জায়গায় খোঁজাখুঁজি করে। কিন্তু তাকে কোথাও না পেয়ে পরদিন ১৮ জানুয়ারি তুরাগ থানায় একটি নিখোঁজ জিডি করেন আনোয়ারের স্ত্রী শিউলি আক্তার।

জিডির প্রাথমিক তদন্তে পাওয়া যায়, ব্যবসায়িক লেনদেন নিয়ে বিরোধের জেরে আনোয়ারকে হত্যা করা হয়েছে। এমন তথ্যের ভিত্তিতে তথ্যপ্রযুক্তির সহায়তায় সম্ভাব্য হত্যাকারীদের শনাক্ত করা হয়। এরপর রোববার দুপুরে আশুলিয়া এলাকায় অভিযান পরিচালনা করে কালাম ও শাকিলকে গ্রেফতার করে তুরাগ থানা পুলিশ। পরে তাদের দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে বিকেল সাড়ে ৩টার দিকে উত্তরার দিয়াবাড়ি এলাকা থেকে সবুজকে গ্রেফতার করা হয়।

ডিসি মুহিদুল ইসলাম আরও বলেন, গ্রেফতারদের দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে তুরাগ থানা পুলিশ দিয়াবাড়ী মেট্রো গোলচত্বরের ডেসকো অফিসের পূর্ব পাশে রাইদা ডিপোর ভেতরের উত্তর পাশের টিনের বেড়া সংলগ্ন মাটির নিচ থেকে আনোয়ারের অর্ধগলিত মরদেহ উদ্ধার করে।

নিহতের পরিবার ঘটনাস্থলে উপস্থিত থেকে আনোয়ারের মরদেহ শনাক্ত করে। পরে মরদেহটি ময়নাতদন্তের জন্য শহীদ সোহরাওয়ার্দী হাসপাতালে পাঠানো হয়।

বাস কেনা-বেচার বিরোধের জেরে রাইদা ডিপোর মালিককে হত্যা

এ ঘটনায় নিহত আনোয়ারের স্ত্রী শিউলি আক্তার বাদী হয়ে গ্রেফতাররাসহ আরও ৫/৬ জনের বিরুদ্ধে তুরাগ থানায় ২৫ মে একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন।

প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে গ্রেফতাররা স্বীকার করেন, তারা সবাই রাইদা বাসচালক। গত ১৭ জানুয়ারি বেলা ১১টার দিকে রাইদা বাস কেনা-বেচার লেনদেন সংক্রান্ত বিরোধের জেরে তারা ও তাদের কয়েকজন সহযোগী মিলে পূর্বপরিকল্পিতভাবে আনোয়ার হোসেন সিকদারকে রাইদা বাস ডিপোর ভেতরে হত্যা করে।

তারা প্রথমে আনোয়ারের মাথায় লোহার পাইপ দিয়ে আঘাত করে এবং পরে গলায় ধারালো ছুরি দিয়ে আঘাত করে হত্যা করে। হত্যার পর তারা লাশ গুম ও প্রমাণ নষ্ট করার উদ্দেশে নিহত আনোয়ারের মরদেহ বাস ডিপোর উত্তর পাশে টিনের বেড়ার কাছে মাটির নিচে পুঁতে রাখে।

গ্রেফতারদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ প্রক্রিয়াধীন। হত্যাকাণ্ডে জড়িত পলাতক অন্যান্যদের গ্রেফতারে অভিযান অব্যাহত রয়েছে বলেও ডিএমপির এই কর্মকর্তা।

টিটি/এমআরএম/এমএস

Read Entire Article