নারায়ণগঞ্জ চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ড্রাস্টিজের পরিচালক ও সাবেক শিবির নেতা গোলাম সারোয়ার সাঈদকে মারধর করা হয়েছে। সোমবার (৭ জুলাই) দুপুরে নারায়ণগঞ্জ শহরের চাষাঢ়ায় বাগে জান্নাত মসজিদ সংলগ্ন পৌর মার্কেটের সামনে এ ঘটনা ঘটে।
এসময় ঘটনাস্থলে নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশনের ১২ নম্বর ওয়ার্ডের সাবেক কাউন্সিলর ও মহানগর বিএনপির বহিষ্কৃত সদস্য শওকত হাশেম শকু এবং মহানগর স্বেচ্ছাসেবক দলের আহ্বায়ক সাখাওয়াত ইসলাম রানাসহ আরও কয়েকজন উপস্থিত ছিলেন।
মারধরের শিকার গোলাম সারোয়ার সাঈদ জেলা ছাত্র শিবিরের সভাপতি ছিলেন।
স্থানীয়রা জানান, চাষাঢ়ায় পৌর মার্কেটের একটি দোকানের মালিকানা নিয়ে বিরোধ ছিল। আশিকুর রহমান নামের একজন ওই দোকানের মালিক দাবি করলেও সাঈদের দাবি, তিনি নিজেও ওই দোকানের মালিক। এ নিয়ে মামলা ছিল।
স্থানীয়রা আরও জানান, এরমধ্যে সোমবার দুপুরে সাঈদ বুলডোজার দিয়ে ওই দোকানে ভাঙচুর শুরু করেন। খবর পেয়ে নারায়ণগঞ্জ স্বেচ্ছাসেবক দলের সদস্য সচিব মাহবুব হাসান জুলহাস এসে বাকবিতণ্ডায় জড়িয়ে পড়েন। পরে খবর পেয়ে সাবেক কাউন্সিলর শওকত হাশেম শকুর ঘটনাস্থলে এলে তার সঙ্গে সাঈদের বাকবিতণ্ডা হয়। একই সময়ে ছুটে যান মহানগর স্বেচ্ছাসেবক দলের আহ্বায়ক সাখাওয়াত ইসলাম রানা। পরবর্তীতে তাদের উপস্থিতিতে সঙ্গে থাকা লোকজন সাঈদের ওপর হামলা চালিয়ে কিল ঘুষি ও মারধর করেন।
হামলার শিকার নারায়ণগঞ্জ চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ড্রাস্টিজের পরিচালক গোলাম সারোয়ার সাঈদ বলেন, ওই দোকানের পুরো জায়গার মালিক আমি। জুলহাসের সঙ্গে আমার দীর্ঘদিনের সম্পর্ক। তার সঙ্গে আমি তর্কে জড়াই নাই। আমি তাকে শুধু একটা কথাই বলেছি, আপনার কাছে যদি বৈধ কাগজপত্র থাকে তা বের করেন আর আমার কাছে যে কাগজপত্র রয়েছে তাও বের করবো। কাগজ অনুযায়ী যদি আমি না পাই তাহলে স্বেচ্ছায় চলে যাবো। আমি সব আইনি প্রক্রিয়া মেনেই করছিলাম। কিন্তু তারা আমার ওপর আঘাত করেছে। এ বিষয়ে আইনি ব্যবস্থা নেবো।
মহানগর স্বেচ্ছাসেবক দলের আহ্বায়ক সাখাওয়াত ইসলাম রানা বলেন, হঠাৎ আমি খবর পাই বুলডোজার দিয়ে দোকান ভেঙে ফেলছে। আমি তাকে বার বার বলি দেশে আইন আছে। আপনি সিটি করপোরেশনে যান। আইনগত প্রক্রিয়ায় সামনে আগান। তিনি যদি এভাবে গায়ের জোরে সব দখল করে নেন তা কাম্য নয়। আর আমরা তাকে কোনো আঘাত করি নাই।
শওকত হাশেম শকু বলেন, সিটি করপোরেশনে দোকান বুলডোজার দিয়ে ভেঙে ফেলা হচ্ছে এই খবর শুনে আমি সাবেক কাউন্সিলর হিসেবে ঘটনাস্থলে যাই। তখন সাঈদ নামের যে ব্যক্তি এই ঘটনা ঘটান তাকে জিজ্ঞেস করি কেন দোকান ভাঙলেন। তখন তিনি বলেন, আমার জমিতে যাওয়ার জন্য রাস্তা দরকার তাই এটা ভাঙা হয়েছে। পরে আমি তাকে বলি, আপনার কাছে যদি এই জমির মালিকানা থাকে তাহলে আপনি আইনি প্রক্রিয়ার মাধ্যমে দোকানের দখল নিতেন। আপনি কেন ভাঙচুর করে দোকানের ক্ষতি করলেন? পরে তিনি কয়েকজনের সঙ্গে হাতাহাতিতে জড়িয়ে পড়েন। এ ঘটনায় ক্ষতিগ্রস্ত দোকানের মালিক থানায় মামলা করবেন।
এ বিষয়ে নারায়ণগঞ্জ পুলিশ সুপার প্রত্যুষ কুমার মজুমদার বলেন, ঘটনাটি আমি শুনেছি। এ ঘটনায় থানায় এখনো কেউ অভিযোগ করেনি। অভিযোগ হলে তদন্ত করে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
মোবাশ্বির শ্রাবণ/জেডএইচ/জেআইএম